আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে কঠিন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে। এখন সেই পরিস্থিতি না থাকায় অনুকূল পরিবেশে ইফতার মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে তারা। ইতোমধ্যে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে ইফতার সামগ্রী বিতরণ এবং ইফতার মাহফিলের আয়োজন করছে বিএনপি-জামায়াত। ইফতার রাজনীতিতে প্রাধান্য পাচ্ছে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সে লক্ষ্যে নেতারা দলীয় কর্মী ও ভোটারদের কাছে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।
বিএনপি ও জামায়াত নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকাভিত্তিক দলীয় নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে চলছে ইফতার সামগ্রী বিতরণের কার্যক্রম। একইসঙ্গে আয়োজন করা হচ্ছে ইফতার মাহফিলও। এ আয়োজনের মধ্যেই রাখা হচ্ছে কর্মিসভা, কর্মশালা, আলোচনা সভাসহ বিভিন্ন কর্মসূচি। এসব কর্মসূচি পালনে দুটি দলের হাইকমান্ড থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বিএনপি বেশি সরব দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৩১ দফা সংস্কার নিয়ে। এটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে চলছে এলাকায় এলাকায় আলোচনা সভা। সব মিলিয়ে সরগরম চট্টগ্রামের রাজনীতির মাঠ।
এদিকে, নির্বাচনের আবহ তৈরি হতে যাওয়ায় বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের আগ্রহী নেতারা এখন এলাকামুখী। চট্টগ্রামে ১৬টি আসন রয়েছে। প্রতিটি আসনে দুই দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরা চষে বেড়াচ্ছেন। ইফতার সামগ্রী বিতরণ ও ইফতার মাহফিল আয়োজনের মধ্য দিয়ে এলাকাবাসীর কাছাকাছি যাচ্ছেন তারা। ইফতার সামগ্রী ছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় বিভিন্ন সামগ্রী বিতরণ করছেন তারা। কাজে লাগানো হচ্ছে দল দুটির পেশাজীবী সংগঠনগুলোকে। ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে ইফতার মাহফিল আয়োজনকে সফল করে তৃণমূল পর্যায়ে দলের নেতাকর্মীদের সক্রিয় করতে উদ্যোগ নিয়েছে বিএনপি। গত মঙ্গলবার নগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়। ইতোমধ্যে এই কার্যক্রম শুরুও হয়েছে। এ ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে দলের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে দল ও এলাকায় নিজেদের অবস্থানকে শক্ত করার চেষ্টা করছেন।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ‘দমবন্ধ’ অবস্থা থেকে বের হয়ে এসেছে বিএনপি-জামায়াতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর বিভিন্ন পর্যায়ে সংস্কারের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে দেশ। এরই মধ্যে উঠেছে নির্বাচনের রব। নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে দোটানা থাকলেও চলতি বছরের ডিসেম্বর কিংবা আগামী বছরের মার্চের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এরইমধ্যে আবার স্থানীয় সরকার পর্যায়ের নির্বাচনের বিষয়টিও সামনে আসছে। সব মিলিয়ে এক ধরনের নির্বাচনের আবহের মধ্যেই চলছে রমজান মাস। রাজনৈতিক দলগুলো তাদের নেতাকর্মীদের সংগঠিত ও চাঙ্গা করতে মওকা হিসেবে নিয়েছে এই মাসকে। রোজায় নগরীতে ইফতার মাহফিল আয়োজন ও ইফতার সামগ্রী বিতরণের ধুম পড়েছে। বিশেষ করে আওয়ামী লীগ মাঠছাড়া হওয়ায় বিএনপি ও জামায়াত রীতিমতো প্রতিযোগিতা করে এই ধরনের আয়োজন করছে।
নগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ উল্লাহ সমকালকে বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার মানুষের অধিকার কেড়ে নিয়েছিল। তারা মানুষের
বাক স্বাধীনতায় পর্যন্ত হস্তক্ষেপ করেছে। তাদের পতনের পর মানুষ স্বস্তি ফিরে পেয়েছে। এবার পবিত্র রমজান মাসে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে ইফতার মাহফিল ও ইফতার সামগ্রী বিতরণে দলীয়ভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ইফতার মাহফিলের পাশাপাশি বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দলকে আরও শক্তিশালী ও সৃসংহত করা হবে। নগরীর ১৫টি সাংগঠনিক থানা ও ৪৩টি ওয়ার্ডে উন্মুক্ত স্থানে ইফতার মাহফিল আয়োজন করা হচ্ছে।’
বিএনপির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে ইফতার মাহফিলসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে জামায়াত ইসলামীও। গত ৩ মার্চে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে জামায়াত। এতে জামায়াতের সিনিয়র নেতারা অংশ নেন। এছাড়া ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে ইফতার মাহফিল আয়োজন তো চলছেই।
চট্টগ্রাম মহানগর জামায়াতের সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ শামসুজ্জামান হেলালী সমকালকে বলেন, ‘রমজান মাসের শুরু থেকেই ইফতার মাহফিল আয়োজন করছে জামায়াত। নগরীর প্রতিটি ওয়ার্ড ও থানা পর্যায়ে দলীয়ভাবে এই কার্যক্রমের সঙ্গে অন্যান্য কর্মসূচিও যুক্ত করা হচ্ছে। এভাবে সাধারণ মানুষের আরও কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ইফত র ন ত কর ম পর য য় আওয় ম ব এনপ সরক র ব তরণ
এছাড়াও পড়ুন:
বৃথা গেল আল-আমিনের সেঞ্চুরি, আবাহনীর জয়
সেঞ্চুরিতে রূপগঞ্জ টাইগার্সকে সম্মানজনক পুঁজি এনে দিয়েছিলেন আল-আমিন জুনিয়র। কিন্তু তার সেঞ্চুরি পাওয়ার দিনটি রাঙাতে পারেননি বোলাররা। আবাহনী অনায়েসে লক্ষ্য ছুঁয়ে ফেলে। তাতে বৃথা যায় আল-আমিনের সেঞ্চুরি। দল হারলেও ম্যাচ সেরার পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।
বিকেএসপিতে আগে ব্যাটিং করতে নেমে রূপগঞ্জ টাইগার্স ২৬০ রান তুলতে পারে। দলটির অধিনায়ক আল-আমিন জুনিয়র ৮৯ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ১০৪ রান করেন। এছাড়া দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৯ রান করে অপরাজিত থাকেন ফয়সাল। মাহমুদুল হাসানের ব্যাট থেকে আসে ২৫ রান। বাকিরা কেউ বিশের ঘর পেরোতে পারেননি।
আবাহনীর হয়ে বল হাতে ৩ উইকেট নেন স্পিনার রাকিবুল হাসান। ২টি করে উইকেট পেয়েছেন নাহিদ রানা ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।
আরো পড়ুন:
নাঈম শেখের ১৭৬, দলের জয়ের ব্যবধান ১৭৩
দুই বছর পর ঢাকা লিগে তামিমের সেঞ্চুরি
বোলাররা লক্ষ্য নাগালে রাখায় ব্যাটসম্যানদের কাজটা সহজ হয়েছে। উদ্বোধনী জুটিতে জিসান ও পারভেজ হোসেন ইমন ৬২ রান যোগ করেন। জিসান ৩২ রান করে ফেরেন সাজঘরে। ইমন আউট হন হাফ সেঞ্চুরি থেকে ৩ রান দূরে থাকতে। সেখান থেকে শান্তর ৩৭, মোহাম্মদ মিঠুনের ৫৬ রানে আবাহনীর জয়ের পথ সহজ হয়ে যায়। রূপগঞ্জ টাইগার্সের হয়ে বল হাতে ফয়সাল নেন ২ উইকেট।
প্রথম ম্যাচে পরাজয়ের পর টানা দুই ম্যাচ জিতে ভালো অবস্থানে আবাহনী। রূপগঞ্জ টাইগার্স তিন ম্যাচে জয় পায়নি একটিতেও।
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল