আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ তাড়িয়েছি, নতুন মুসিবত আনতে নয়: হাসনাত আবদুল্লাহ
Published: 8th, March 2025 GMT
আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ তাড়ানো হয়েছে, নতুন কোনো মুসিবত আনার জন্য নয় বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। শনিবার সন্ধ্যায় নিজ উপজেলা কুমিল্লার দেবীদ্বারে দোয়া ও ইফতার মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, কোনো কোনো রাজনৈতিক দল আবার দেশের মানুষের জন্য মুসিবত হয়ে আসার চেষ্টা করছে। তবে আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদ তাড়িয়েছি, নতুন কোনো মুসিবত আনার জন্য নয়।
আমরা যেভাবে ফ্যাসিবাদ তাড়িয়েছি, ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে আমাদের যেমন অবস্থান ছিল, তেমনই যারা নতুন করে ফ্যাসিবাদ হয়ে ওঠার চেষ্টা করবে, তাদের বিরুদ্ধেও আমাদের একই অবস্থান থাকবে।’
সাংবাদিকদের উদ্দেশে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘কোটা আন্দোলন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, পরবর্তী সময়ে এক দফা আন্দোলন এবং আজকে ফ্যাসিবাদ-পরবর্তী বাংলাদেশে গণমাধ্যমের বস্তুনিষ্ঠতা, নিরপেক্ষতা, নিরলস পেশাদারির মধ্য দিয়ে সমাজের বাস্তব চিত্রগুলো উঠে আসছে। আমি প্রত্যাশা করব, গণমাধ্যমে এই বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতার চর্চা অব্যাহত থাকবে। আওয়ামী লীগের আমলে নিয়ন্ত্রিত সাংবাদিকতা দেখেছি। তবে আমি বিশ্বাস করি, রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে গিয়ে মতপ্রকাশের যে স্বাধীনতা পেয়েছে গণমাধ্যম, তা এই সময়ে এসে ইতিহাসে উদাহরণ হয়ে থাকবে।’
হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘দেশ সংস্কারের কাজ এখনো অব্যাহত রয়েছে। আমরা যে গণতান্ত্রিক উত্তরণের দিকে যাচ্ছি, সে ক্ষেত্রে আপনারা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রকাশে ভূমিকা রাখবেন। কোনো ধরনের পেশিশক্তি, কোনো ধরনের রাজনৈতিক শক্তির কাছে মাথানত করবেন না। বস্তুনিষ্ঠ সংবাদের মাধ্যমেই জনগণের রাজনৈতিক দলগুলোর ওপর মতামত গড়ে ওঠে। জাতীয় নাগরিক পার্টি যে বার্তা মানুষের কাছে পৌঁছাতে চায়, আপনারা অখণ্ডিত ও বস্তুনিষ্ঠতার মধ্য দিয়ে তা সঠিকভাবে মানুষের কাছে পৌঁছে দেবেন, এটি গণমাধ্যমের কাছে আশা করছি।’
আগামী নির্বাচনে এনসিপির ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার ব্যাপারে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘গত ২৮ ফেব্রুয়ারি জাতীয় নাগরিক পার্টি আত্মপ্রকাশ করেছে। এরপর আমাদের প্রাথমিক কাজ হচ্ছে দলের নিবন্ধন করা, এরপর দলের সাংগঠনিক বিস্তারের প্রয়োজন রয়েছে। আমরা প্রথমত মনোযোগ দিচ্ছি সাংগঠনিক বিস্তারের দিকে। যেটির মধ্য দিয়ে আমরা নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করতে পারব। আমরা অবশ্যই সামনে নির্বাচন নিয়ে পর্যালোচনা করব।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কার্যক্রম সম্পর্কে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন একটি অরাজনৈতিক প্ল্যাটফর্ম। ফ্যাসিবাদবিরোধী ও গণহত্যার বিচারের দাবিতে তাঁদের কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে। তাঁরা শুরু থেকেই বলে আসছেন, সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে এই ভূখণ্ড বা রাষ্ট্র থেকে কেউ বিশেষ সুবিধা নেবে, তা হতে দেওয়া হবে না। যদি কেউ সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে কোনো অন্যায় করেন, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে দেশের প্রচলিত আইনানুযায়ী বিচার হবে।
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে এনসিপির এই নেতা বলেন, ৫ আগস্টের আগে আওয়ামী লীগ পুলিশ বাহিনীকে লাঠিয়াল বাহিনী ও রাজনৈতিক স্বার্থ হাসিলের কাজে ব্যবহার করেছে। পুলিশসহ অন্যান্য যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আছে, তিনি তাদের বলতে চান, যদি তারা মনে করে, আবার কোনোভাবে আওয়ামী লীগ ফিরে আসবে, ফ্যাসিবাদ ফিরে আসবে, তারা তাদের মডেলের পুলিশিং করবে, সেটি বাংলাদেশে আর কখনোই হবে না। জনগণ যে ধরনের পুলিশিং চায়, সেই পুলিশিংয়ে তাদের তৎপর হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন ত ক
এছাড়াও পড়ুন:
ফেনীতে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, খুলনায় গ্রেপ্তার ১
ফেনী সদর থানায় মানব পাচার আইনে দায়েরকৃত একটি মামলায় ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় খুলনার দিঘলিয়া থানা পুলিশ রুবেল শেখ (৩০) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।
শুক্রবার (৭ মার্চ) দিঘলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ এইচএম শাহীন বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, “গ্রেপ্তারকৃত রুবেলকে শুক্রবার ফেনী সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।”
তিনি জানান, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যার পর দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটী ইউনিয়নের পথের বাজার এলাকা থেকে রুবেলকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত রুবেলের কাছ থেকে পুলিশ মুক্তিপণ আদায়ের কাজে ব্যবহৃত তিনটি মোবাইল উদ্ধার করে।
পুলিশ জানায়, গত ৫ ফেব্রুয়ারি ফেনী জেলার ফেনী সদর উপজেলার কাতালিয়া থেকে জয়নাল আবেদীনের ছেলে মো. আরিফ (৩৫) নামে এক যুবককে একটি চক্র লিবিয়া নিয়ে যায়। পরবর্তীতে ওই চক্রটি বিভিন্ন কৌশলে লিবিয়া থেকে তাকে জোরপূর্বক অপহরণ করে ইউরোপে পাচারের চেষ্টা করে। এ ঘটনার ২১ দিন পর ২৭ ফেব্রুয়ারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা আরিফকে অপহরণ করে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করে ২৫ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে।
গ্রেপ্তারকৃত রুবেল শেখ ও তার সহযোগীরা দীর্ঘদিন ধরে মানব পাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত। তারা একাধিক ব্যক্তিকে টার্গেট করে কৌশলে বিভিন্ন ধরনের লোভনীয় প্রস্তাব দিয়ে বিদেশে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে সেখানে তাদেরকে অপহরণ করে পরিবারের নিকট মোটা অঙ্কের মুক্তিপণ দাবি করে। দাবিকৃত মুক্তিপণ না দিলে তারা অপহৃত ব্যক্তিকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে এবং মৃত্যুর ভয় দেখিয়ে মোবাইলে ভিডিও ধারণ করে এবং অপহৃত ব্যক্তির পরিবারের নিকট সেই ভিডিও পাঠিয়ে টাকা পাঠাতে বলে।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/এস