রোজার শুরু থেকেই হঠাৎ করেই বাজারে বেড়ে গেছে কিছু পণ্যের দাম। অসাধু ব্যবসায়ীরা ‘সিন্ডিকেট’ করে এসব পণ্যের দাম বাড়িয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। বাজারের এই সিন্ডিকেট ভাঙতে বিনা লাভের দোকান চালু করেছেন খুলনার শিক্ষার্থীরা। নগরের শিববাড়ী মোড়ে চালু হওয়া ওই দোকানে পাইকারি দামে নিত্যপণ্য ও সবজি বিক্রি করা হচ্ছে।

৩ রমজান থেকে চালু হওয়া এই দোকান ইতিমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে সব পণ্য। স্বল্পমূল্যে কিনতে পেরে ক্রেতারাও খুশি। প্রতিদিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকান চালু রাখার কথা থাকলেও বর্তমানে বেলা ৩টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত দোকান বসছে। দোকানটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘বিনা লাভের দোকান’। এটির আয়োজন করেছে খুলনার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও টাস্কফোর্স টিম।

আয়োজকেরা বলছেন, রমজানের মাত্র কয়েক দিন আগে যে বেগুন ছিল মাত্র ৩০ টাকা কেজি, সেই বেগুন বর্তমানে ৮০-৯০ টাকা। শুধু বেগুনই নয়, বেড়েছে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও। এসব অসাধু ব্যবসায়ীর সিন্ডিকেট ভাঙতে ও বাজারে সাধারণ ক্রেতাদের মধ্যে স্বস্তি ফেরাতে বিনা লাভের দোকান খোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রমজান মাসজুড়ে এই দোকান চালু থাকবে। এখান থেকে সব শ্রেণি-পেশার মানুষ পণ্য কিনতে পারছেন।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে শিববাড়ী মোড়ে অবস্থিত ওই দোকানে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের পাশেই বাঁশ ও সাদা কাপড় দিয়ে দোকানের মতো তৈরি করা হয়েছে। সামনে ব্যানারে লেখা ‘বিনা লাভের দোকান, ক্রয়কৃত দামে পণ্য বিক্রি’। দোকান পরিচালনা করছেন গোটা বিশেক শিক্ষার্থী। দোকানের সামনে বেশ ভিড়। ক্রেতাদের চাহিদামতো পণ্য দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে শিক্ষার্থীদের। দুজন ছাত্র হ্যান্ড মাইকে দোকান থেকে পণ্য কেনার জন্য মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছেন। মাইকেই ঘোষণা দেওয়া হচ্ছে দোকানে থাকা পণ্যের দামও।

দোকানে প্রতি কেজি বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৫৫ টাকা, আলু ১৭ টাকা, শসা ২৫ টাকা, ছোলা ৯৫ টাকা, বেসন ৬৫ টাকা, মুড়ি ৬৫ টাকা, চিড়া ৬০ টাকা, টমেটো সাড়ে ৭ টাকা, কাঁচা মরিচ ৪০ টাকা, রসুন ১০০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ ৩৫ টাকায়। এ ছাড়া এক লিটার সয়াবিন তেলের বোতল ১৭৫ টাকা, প্রতিটি ডিম ১০ টাকা, বোম্বাই ঝাল প্রতিটি ২ টাকা, লেবুর হালি ২৭ টাকা ও ধনেপাতা চাহিদা মোতাবেক নিতে পারছেন ক্রেতারা।

দোকান থেকে ছোলা, বেগুন ও পেঁয়াজ কিনছিলেন সোনাডাঙ্গা আবাসিক এলাকার শারমিন আলম। তিনি বলেন, ‘পথ দিয়ে যাচ্ছিলাম, দেখি শিক্ষার্থীরা মাইকিং করে পণ্য বিক্রি করছে। কৌতূহলী হয়ে দোকানে এসে দেখি, পণ্যের দাম বেশ কম। এরপর কয়েকটি পণ্য কিনেছি। তেলের কথা জিজ্ঞাসা করলে বলেছে, তেল শেষ হয়ে গেছে। বাজারের চেয়ে ১৫-২০ টাকা কমে এখানে পণ্য পাওয়া যাচ্ছে।’

দোকানের সামনেই কথা হয় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন খুলনা মহানগর শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক ও খুলনা জেলা টাস্কফোর্স টিমের সদস্য আরিফুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি বলেন, প্রাথমিক পর্যায়ে নিজেরা চাঁদা দিয়ে ফান্ড গঠন করে পাইকারি বাজার থেকে পণ্য কেনা হচ্ছে। বাজার থেকে যে দামে পণ্য কিনেছেন, তাঁদের দোকানে সেই দামেই পণ্য বিক্রি করা হচ্ছে। পণ্যের মধ্যে পরিবহন খরচও ধরা হয়নি। আর শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন সম্পূর্ণ স্বেচ্ছাশ্রমে।

সংগঠনটির মহানগর শাখার সংগঠক সোহানুর রহমান বলেন, কল্পনার বাইরে সাড়া পাওয়া গেছে। সাধারণ মানুষ এসে পণ্য কিনছেন। প্রতিদিন কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ৩০০-৪০০ ক্রেতা আসছেন। ৩০ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকার পণ্য বিক্রি হচ্ছে। পণ্যের সংখ্যা ও পরিমাণ বাড়ানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

পাসপোর্টের পরিচালক তৌফিক বরখাস্ত

অর্ধকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম খানকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে সরকার।

রোববার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ বহিরগমন-৪ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ বরখাস্ত আদেশ দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে প্রজ্ঞাপনে সই করেন সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ঢাকা বিভাগীয় পাসপোর্ট ও ভিসা অফিসের পরিচালক মোহাম্মদ তৌফিকুল ইসলাম খানের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬ (২) ও ২৭ (১) ধারা অনুয়ায়ী আদালত কর্তৃক চার্জশিট গৃহীত হয়েছে।
 সেহেতু, তৌফিকুল ইসলাম খানকে সরকারি চাকরি আইন, ২০১৮ (২০১৮ সালের ৫৭ নম্বর আইন) এর ধারা ৩৯ (২) এর বিধান মোতাবেক ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে সরকারি চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।প

সম্পর্কিত নিবন্ধ