আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে নারীরা বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করে চলেছেন: আসিফ মাহমুদ
Published: 8th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের নারীরা আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দেশের নাম উজ্জ্বল করছেন বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। আজ শনিবার বিকেলে টঙ্গীর শহীদ আহসান উল্লাহ মাস্টার স্টেডিয়ামে ‘কিউট আন্তর্জাতিক নারী দিবস আর্চারি টুর্নামেন্ট-২০২৫’–এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।
আসিফ মাহমুদ বলেন, বাংলাদেশের নারীরা শুধু ক্রীড়া নয়, অন্যান্য সব ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করে চলেছেন। দেশের সবচেয়ে বড় রপ্তানি খাত, পোশাক খাতে নারীদের উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ বাংলাদেশের ভাবমূর্তিকে উজ্জ্বল করেছে। জাতীয়, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সামাজিক, রাজনৈতিক সব অর্জনে নারীদের যে অংশগ্রহণ, তার জন্য তাঁদের শুভেচ্ছা জানান উপদেষ্টা।
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ১১ জন নারী শহীদ হয়েছেন জানিয়ে উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘জুলাই অভ্যুত্থানে নারীদের অংশগ্রহণ ছিল প্রশংসনীয়। এই অভ্যুত্থানে আমাদের মোট ১১ জন নারী শহীদ হয়েছেন। আহত হয়েছেন সহস্র নারী। আমাদের অসংখ্য মা তাঁদের সন্তান হারিয়েছেন। এই সর্বোচ্চ ত্যাগ স্বীকার করে দেশের জন্য যে নারীরা পুরুষদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করে যাচ্ছেন, তাঁদের সবার জন্য অন্তরের অন্তস্তল থেকে শুভেচ্ছা।’
বাংলাদেশ আর্চারি ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে দিনভর অনুষ্ঠিত হয় টুর্নামেন্ট। এতে অংশ নেন ১২টি দলের মোট ৮১ জন নারী আর্চার। এতে ৫টি মেডেল পেয়ে প্রথম হয় বাংলাদেশ ক্রীড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি)। আর দুটি মেডেল পেয়ে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী এবং বাকি দলগুলো ১টি করে মেডেল পায়। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের সচিব রেজাউল মকসুদ জাহেদী, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের সচিব আমিনুল ইসলাম, বাংলাদেশ আর্চারি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রাজিব উদ্দিন আহম্মেদ প্রমুখ।
বক্তব্যে আসিফ মাহমুদ আরও বলেন, ‘আর্চারি ফেডারেশনের নারী আর্চাররা বাংলাদেশের জন্য যে সম্মান বয়ে আনছেন, ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টগুলোতে বাংলাদেশের জন্য আরও সম্মান বয়ে আনবেন বলে আশা করছি। আমাদের যেসব খেলাধুলায় সম্মান অর্জনের সুযোগ আছে, তার পৃষ্ঠপোষকতার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র জন য আর চ র গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান জিরো টলারেন্স: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
মাগুরায় শিশু ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত সবাইকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
রবিবার (৯ মার্চ) আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত কোর কমিটির সভা শেষে আইন মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান তিনি।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “বাংলাদেশে ধর্ষকদের কোনো স্থান হবে না। মাগুরার ঘটনায় যারা অভিযুক্ত তাদের সবাইকে ইতোমধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতে কাজ করবে সরকার। একইভাবে যদি দেশের কোথাও নারীর প্রতি কোনো সহিংসতা বা ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটে, তাদেরকে সম্পূর্ণভাবে আইনের আওতায় নিয়ে আসা হবে। তাদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। বাংলাদেশে ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরকারের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’।
আরো পড়ুন:
স্বরাষ্ট্র সচিব
কিশোর গ্যাংয়ের ছেলেরা দৌড়াচ্ছে, ভারী বুট পরা পুলিশ তার পিছনে দৌড়াতে পারে না
এবার জিনিসপত্রের দাম গতবারের চেয়ে কম: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
“ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান অত্যন্ত স্পষ্ট। আমি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে ধর্ষণসহ সব ধরনের নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছি। এ পর্যন্ত নারীর প্রতি যত সহিংসতা হয়েছে সেগুলোর তালিকা করে দ্রুত তদন্ত সম্পন্নপূর্বক আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশনা দিয়েছি।”
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া ধর্ষণের ঘটনাগুলোর সঙ্গে জড়িত অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করা হবে এবং কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে বলেও জানান তিনি।
নারীরা নির্ভয়ে, নির্বিঘ্নে ঘরে-বাইরে দায়িত্ব পালন করবে। এতে যারা তাদের বাধা দিতে আসবে, সহিংসতা করতে আসবে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র ছাড় দেওয়া হবে না। ধর্ষণসহ নারী ও শিশু নির্যাতনের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি সামাজিক আন্দোলন ও সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে।”
এখন কোনো নারী নিরাপত্তাহীন বোধ করলে পুলিশের কাছে গিয়ে সে কি নিরাপত্তা পাবে-এ বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “পুলিশের কাছে গেলে যদি কেউ প্রতিকার না পায়। সেটা আমার নজরে আনবেন, আমি ওই পুলিশের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।”
কোনভাবেই কোনো নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনকে কোনো রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে দেওয়া হবে না জানিয়ে উপদেষ্টা বলেন, “গত শুক্রবার জুমার নামাজ শেষে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিজবুত তাহরীরের সদস্যরা বায়তুল মোকাররম এলাকায় একটি মিছিল করে। পরে পুলিশের বাধার মুখে সেটি পণ্ড হয়ে যায় ও তাদের কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। সরকার এ বিষয়ে ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। এ ব্যাপারে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তৎপর রয়েছে।”
সংঘবদ্ধ মব দুষ্কৃতিকারীদের বিষয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “কিছুদিন আগে চট্টগ্রামের পতেঙ্গায় এক এসআইকে কিছু স্থানীয় মাদকসেবী, দুষ্কৃতিকারী ও ছিনতাইকারীরা মব সৃষ্টি করে মারধর করেছে, যাদেরকে পরবর্তীতে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হয়েছে।আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর যেকোনো আক্রমণ বরদাস্ত করা হবে না, কঠোর হস্তে তা দমন করা হবে।”
রমজানে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সরকার বদ্ধপরিকর জানিয়ে তিনি বলেন, “রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে প্রায় শতাধিক তল্লাশি চৌকি বা চেকপোস্ট বসানো হয়েছে ও অপরাধপ্রবণ এলাকায় টহল সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। সেনাবাহিনী, পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট ও বিজিবির সমন্বয়ে যৌথবাহিনী টার্গেট এলাকাসমূহে জোরদার অপারেশন পরিচালনা করছে। এসব চেকপোস্ট এবং টহল দলের রাত্রিকালীন কার্যক্রম মনিটরিং করার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নিয়মিত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।”
তিনি বলেন, “রমজানে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই প্রতিরোধ এবং বিভিন্ন বিপণী বিতানে যাতায়াতকারী ক্রেতা-বিক্রেতাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে তারা সর্বোচ্চ সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।”
“রমজান ও আসন্ন ঈদে সাধারণ জনগণের বাড়ি যাত্রা নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করার লক্ষ্যে মহাসড়কসমূহে চাঁদাবাজি ও ছিনতাই রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে,” বলেও জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
তিনি বলেন, “যেসব অপরাধের ভিডিও ফুটেজ পাওয়া যাবে, সেগুলো সংগ্রহ করে ফ্যাক্ট চেকিং করে অপরাধীদের শনাক্তকরণ করা হবে এবং আইন অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ