নারীর ভূমিকা মূল্যায়নে সোনারগাঁয়ে ব্যতিক্রমী প্রচারাভিযান
Published: 8th, March 2025 GMT
আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে নারীর অংশগ্রহণ, ক্ষমতায়ন, জ্বালানি অধিকার নিশ্চিতকরণ এবং নীতিনির্ধারক হিসেবে নারীর ভূমিকা মূল্যায়নের দাবিতে এক ব্যতিক্রমী প্রচারাভিযান অনুষ্ঠিত হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়া চৌরাস্তা ঢাকা চট্টগ্রাম মহাসড়কে শনিবার (৮মার্চ) দুপুরে পরিবেশ রক্ষা ও উন্নয়ন সোসাইটির (ইএসএডিএস), ক্লিন (কোস্টাল লাইভলিহুড এন্ড এনভায়রনমেন্টাল একশন নেটওয়ার্ক) এবং বিডাব্লিউজিইডি (বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি এন্ড ডেভেলপমেন্ট)-এর যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত হয়।
এ কর্মসূচির মূল লক্ষ্য ছিল সারাদেশে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানি নিশ্চিত করে নারীদের জ্বালানি নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা করা।
প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণকারীরা নবায়নযোগ্য জ্বালানির প্রয়োজনীয়তা ও বিদ্যুৎ খাতে নারীর অন্তর্ভুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতনতামূলক বার্তা তুলে ধরেন। তারা জোর দিয়ে বলেন, টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে জ্বালানি খাতে নারীর সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ বৃদ্ধি করতে হবে এবং জ্বালানির ন্যায়সঙ্গত ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।
ইএসএডিএস-এর মহাসচিব মীযানুর রহমান বলেন, “দেশে ব্যবহৃত মোট জ্বালানির ৪৬ শতাংশই গৃহস্থালির কাজে ব্যবহৃত হয়, যার প্রধান ব্যবহারকারী নারীরা। কিন্তু জীবাশ্ম জ্বালানির আমদানি নির্ভরতা এবং বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির ফলে নারীরাই সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী হচ্ছেন।” তিনি আরও জানান, নারীরা জ্বালানি খাতে পরিকল্পনা, বাস্তবায়ন, উৎপাদন ও বিতরণের ক্ষেত্রে বঞ্চিত হচ্ছেন, যা পরিবর্তন করা জরুরি।
প্রচারাভিযানে আরও বলা হয়, ফসিল ফুয়েলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর কারণে নারীরা বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন। বিশেষ করে, স্থানীয় এলাকায় বহিরাগতদের ভিড় বেড়ে যাওয়ায় নারীরা চলাচল, স্বাস্থ্যসেবা ও মৌলিক চাহিদা পূরণে সমস্যার সম্মুখীন হন। পরিবেশগত প্রভাব মূল্যায়ন (ঊওঅ) প্রক্রিয়ায় তাদের নামমাত্র পরামর্শের ভিত্তিতে অন্তর্ভুক্ত করা হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর তৎপরতা খুবই কম।
প্রচারাভিযানে অংশগ্রহণকারী আকলিমা আক্তার বলেন, "বিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়নে নারীদের বিশেষ প্রয়োজন, বিশেষ করে প্রজনন স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলো সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করা হয়। জীবাশ্ম জ্বালানি ভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র, বিশেষ করে কয়লাভিত্তিক কেন্দ্রগুলো থেকে নির্গত বিষাক্ত ধাতু নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলে। তবুও নারীরা ক্ষতিপূরণের অধিকার পান না, কারণ তাদের নামে জমির মালিকানা থাকে না।"
প্রচারাভিযান কর্মীরা নারীদের জন্য সহজে সোলার হোম সিস্টেম স্থাপনের ব্যবস্থা নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
এসময় প্রচারাভিযানে আরও উপস্থিত ছিলেন ফারজানা, আফসানা, রুমি, নাসরিন, জহিরুল ইসলাম জহির, জান্নাতুল ভূঁইয়া, মীমরাজ হোসেন, ইমরানসহ অন্যান্য অংশগ্রহণকারী।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: স ন রগ ও ন র য়ণগঞ জ ব যবহ
এছাড়াও পড়ুন:
পাতে ফিরবে হারিয়ে যাওয়া গোটালি মাছ
দেশের নদী-নালা, খাল-বিলে হারিয়ে যেতে বসা গোটালি মাছ ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। নীলফামারীর সৈয়দপুরে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্বাদুপানি উপকেন্দ্রে গোটালি মাছের কৃত্রিম প্রজনন ও পোনা উৎপাদন কৌশল সফল হয়েছে বলে দাবি করেছেন গবেষকেরা।
সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আজহার আলী বলেন, তাঁদের গবেষণাকে মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট ময়মনসিংহ স্বীকৃতি দিয়েছে। সেই ধারাবাহিকতায় আগামী বছরের মাঝামাঝি থেকে মাছটি চাষি পর্যায়ে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ফলে মাছটি আবার খাল-বিল ও নদী-নালায় পাওয়া যাবে বলে তাঁরা আশা করছেন।
এই গবেষক বলেন, ইনজেকশন প্রয়োগ করার সাত–আট ঘণ্টা পর স্ত্রী গোটালি মাছ ডিম ছাড়ে। ডিম ছাড়ার ৮ থেকে ১০ ঘণ্টা পর ডিম থেকে রেণু বের হয়। সঠিক পরিচর্যায় ৫০ থেকে ৬০ দিনের মধ্যে তা আঙুলি পোনায় পরিণত হয়।
গোটালি মাছের বৈজ্ঞানিক নাম ‘Crossochelius latius’। সুস্বাদু এ মাছ ইতিমধ্যে বিলুপ্তপ্রায় মাছের তালিকায় স্থান করে নিয়েছিল।
সৈয়দপুর স্বাদুপানি উপকেন্দ্র সূত্র জানায়, মিঠাপানির জলাশয়, পাহাড়ি ঝরনা ও অগভীর স্বচ্ছ নদী ছিল গোটালি মাছের আবাসস্থল। একসময় উত্তরাঞ্চলের তিস্তা ও আত্রাই নদী ছাড়াও নেত্রকোনার সোমেশ্বরী ও কংস, সিলেটের পিয়াইন এবং পদ্মা, মেঘনা, যমুনা নদীতেও প্রচুর পরিমাণে মিলত গোটালি মাছ। নানা কারণে গোটালির প্রজনন হুমকিতে পড়ে। ২০১৫ সালে আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) মাছটিকে বিপন্ন প্রজাতি ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করে।
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের তালিকায় বিলুপ্ত প্রজাতির ২৬১টি মাছের নাম উল্লেখ আছে। এর মধ্যে ৬৪টি মাছ দেশের নদী-নালা থেকে একেবারে হারিয়ে গেছে। আর বিলুপ্ত প্রজাতি থেকে ৪১টি মাছের প্রজনন প্রযুক্তি সফল হয়েছে। সেখান থেকে ১২টি বিলুপ্ত প্রজাতির মাছের পোনা চাষি পর্যায়ে দেওয়া হয়েছে।
দেশের নদী-নালা, খাল-বিলে হারিয়ে যেতে বসা গোটালি মাছ ফিরে আসার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে