মিয়ানমারের সামরিক সরকার এ বছরের ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জানুয়ারিতে সাধারণ নির্বাচন আয়োজন করবে। জান্তাপ্রধান মিন অং হ্লাইংয়ের বরাতে দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে এ তথ্য জানানো হয়েছে। যুদ্ধবিধ্বস্ত মিয়ানমারে দীর্ঘদিনের প্রতিশ্রুত নির্বাচন নিয়ে এই প্রথম নির্দিষ্ট সময়ের উল্লেখ করলেন তিনি।

২০২১ সালে শান্তিতে নোবেলজয়ী অং সান সু চির সরকারকে সামরিক অভ্যুত্থানে উৎখাত করে জান্তা। এর পর থেকে দেশটিতে জান্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠী সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করে। তখন থেকে মিয়ানমারে অস্থিরতা বিরাজ করছে।

জান্তা নেতা মিন অং হ্লাইং এর আগেও নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন; কিন্তু তাঁর প্রশাসন বারবার জরুরি অবস্থা বাড়িয়েছে।

সমালোচকেরা প্রতিশ্রুত নির্বাচনকে প্রহসন হিসেবে উপহাস করে বলেন, জেনারেলদের ক্ষমতায় রাখার জন্য এ নির্বাচন আয়োজন করা হচ্ছে। কারণ, দেশটিতে ২৪টির বেশি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এ ছাড়া বিদ্রোহীদের হাতে মিয়ানমারের বিশাল অংশের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেছে জান্তা।

গ্লোবাল নিউ লাইট অব মিয়ানমার নামের পত্রিকার এক প্রতিবেদনে বলা হয়, বেলারুশ সফরের সময় হ্লাইং বলেছেন, ‘আমরা শিগগিরই একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের পরিকল্পনা করছি। ইতিমধ্যে ৫৩টি রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য তাদের তালিকা জমা দিয়েছে।’

ডিসেম্বরে প্রকাশিত জনশুমারির প্রতিবেদন অনুসারে, জান্তা নির্বাচনের জন্য ৩৩০টি শহরের মধ্যে মাত্র ১৪৫টিতে সরেজমিনে জনশুমারি পরিচালনা করতে পেরেছে।

এই নির্বাচন দেশে আরও সহিংসতার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বর্তমানে জান্তা ও বিরোধীরা মিয়ানমারের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার ক্ষেত্রে জোর দিচ্ছে। দেশটিতে ক্রমবর্ধমান সংঘাতের ফলে অর্থনীতি ভেঙে পড়েছে এবং ৩৫ লাখের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

অবশ্যম্ভাবী নাটকীয়তায় জমজমাট আইপিএল, দেখে নিন সমীকরণ

মাঠে এখন উত্তেজনার পারদ চূড়ায়। আইপিএলের ১৭তম আসরে ৪৮টি ম্যাচ শেষে দাঁড়িয়ে আছে এমন এক মোহময় মুহূর্তে, যেখানে দশ দলেরই সামনে তাত্ত্বিকভাবে প্লে-অফের রাস্তা খোলা! মাত্র ২২টি ম্যাচ বাকি। কিন্তু প্রত্যেক দল এখনো তাদের ভাগ্য গড়ার লড়াইয়ে মাঠে ঘাম ঝরিয়ে যাচ্ছে। কার সামনে কেমন চ্যালেঞ্জ, দেখে নেওয়া যাক এক ঝলকে—

১. রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (১৪ পয়েন্ট, ১০ ম্যাচ):
শীর্ষে থাকা কোহলিরা স্রেফ দু’টি জয় পেলেই নিশ্চিত করে ফেলবে প্লে-অফের টিকিট। তিনটি জিতলে প্রথম দুইয়ের মধ্যে থাকার সম্ভাবনাও থাকবে, যা কোয়ালিফায়ারে সরাসরি সুবিধা এনে দিতে পারে।

২. মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স (১২ পয়েন্ট, ১০ ম্যাচ):  
প্রথমদিকে হোঁচট খেয়ে পরে দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়িয়েছে রোহিতের মুম্বাই। চার ম্যাচ বাকি, এর মধ্যে তিনটি জিতলেই কাজ সারা! সব জিততে পারলে প্রথম দুইয়ে যাওয়ার পথও খোলা থাকবে।

আরো পড়ুন:

মিরাজের বীরত্বে দারুণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখলো বাংলাদেশ

বাংলাদেশের বিপক্ষে দারুণ বোলিং করে মুজারাবানির ইতিহাস

৩. গুজরাট টাইটান্স (১২ পয়েন্ট, ৯ ম্যাচ):  
এক ম্যাচ কম খেলেও শক্ত অবস্থানে গুজরাট। পাঁচ ম্যাচের মধ্যে তিনটি জয়ই যথেষ্ট। তবে চারটি জিতলে শীর্ষস্থানও ধরা-ছোঁয়ার মধ্যে আছে।

৪. দিল্লি ক্যাপিটালস (১২ পয়েন্ট, ১০ ম্যাচ):
টানা দুটি হারের পরও দিল্লি এখনো ঠিক জায়গাতেই আছে। তিন জয় পেলে প্লে-অফ পাকা। আর চার জয় নিয়ে তারা প্রথম দুইয়ের মধ্যেও জায়গা করে নিতে পারে।

৫. পাঞ্জাব কিংস (১১ পয়েন্ট, ৯ ম্যাচ):  
পাঁচ ম্যাচ হাতে রেখেছে শ্রেয়াসের দল। চার জয় আনলেই সরাসরি প্লে-অফ নিশ্চিত। তিন জয় পেলেও সম্ভাবনা টিকে থাকবে।

৬. লক্ষ্ণৌ সুপার জায়ান্টস (১০ পয়েন্ট, ১০ ম্যাচ):
চার ম্যাচ বাকি। সব জিতলে নিশ্চিত প্লে-অফ। তিনটি জিতলে বাকি দলগুলোর ফলাফলের ওপর নির্ভর করতে হবে।

৭. কলকাতা নাইট রাইডার্স (৯ পয়েন্ট, ১০ ম্যাচ):
সর্বোচ্চ ১৭ পয়েন্ট পর্যন্ত যেতে পারবে কেকেআর। এর জন্য বাকি চার ম্যাচই জিততে হবে, নইলে অন্য দলগুলোর ফলাফলের দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে।

৮. রাজস্থান রয়্যালস (৬ পয়েন্ট, ১০ ম্যাচ):
সমীকরণ কঠিন, কিন্তু অসম্ভব নয়। চারটি ম্যাচে জয় তুলে নিতে হবে এবং তারপর অন্য দলের ফলাফলের দিকেও নজর রাখতে হবে।

৯. সানরাইজার্স হায়দরাবাদ (৬ পয়েন্ট, ৯ ম্যাচ):
রাজস্থানের মতোই পয়েন্ট। তবে এক ম্যাচ বেশি হাতে থাকায় তাদের সম্ভাবনা তুলনামূলক বেশি। পাঁচটি জয় চাই, একটিও হারলে জটিল হিসাব শুরু।

১০. চেন্নাই সুপার কিংস (৪ পয়েন্ট, ৯ ম্যাচ):
তলানিতে অবস্থান করা চেন্নাই এখনো শেষ কথা বলেনি। পাঁচ ম্যাচে জয় আনলে ১৪ পয়েন্টে পৌঁছতে পারবে। কিন্তু তখন অন্য ৯ দলের ফলাফল নির্ধারণ করবে তাদের ভাগ্য।

এই মরসুমে আইপিএল যেন হয়ে উঠেছে এক বিশাল ধাঁধার মঞ্চ। শেষ হাসি কে হাসবে, তা জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে শেষ ম্যাচ পর্যন্ত!

ঢাকা/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ