বাউল শিল্পীকে মারধরে জড়িতদের শাস্তি দাবি
Published: 8th, March 2025 GMT
পাবনার সাঁথিয়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে বাউল শিল্পী আব্দুল জব্বারকে (৬০) মারধর করে হাত ভেঙে দেওয়ার প্রতিবাদে ও মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে মানববন্ধন করা হয়েছে। শনিবার সাঁথিয়া থানার সামনে এ কর্মসূচি পালন করেন তাঁর পরিবারের সদস্য ও বাউল শিল্পীরা। এ সময় তারা আরেক সংগীত শিল্পী পলাশ সরকারসহ জড়িতদের গ্রেপ্তার করে শাস্তির দাবি জানান।
মারধরে আহত শিল্পী আব্দুল জব্বার উপজেলার ধোপাদহ ইউনিয়নের দত্তপাড়া তেঁতুলিয়া গ্রামের মৃত ঈমান শেখের ছেলে। সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিলে মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা ফিরে যান।
কর্মসূচিতে বক্তারা বলেন, ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিল্পী পলাশ সরকার নিজের ঘর নিজেই ভাঙচুর করেছেন। লুটপাটের মিথ্যা নাটক সাজিয়ে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে মামলা দায়ের করেছেন। তারা জানান, গত ২ মার্চ আব্দুল জব্বার ধোপাদহ বাজার থেকে ইফতারি কিনে বাড়ি ফেরার পথে প্রতিপক্ষ পলাশ সরকার, আব্দুস সালাম ও জাহিদুল ইসলাম রড ও লাঠি দিয়ে তাঁকে মারধর করে হাত ভেঙে দেন।
আব্দুল জব্বারের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে তারা চলে যান। আহত অবস্থায় স্বজনরা তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে জানান মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারীরা।
এ বিষয়ে সংগীত শিল্পী পলাশ সরকার বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে জব্বার পক্ষের সঙ্গে জমি নিয়ে আমাদের বিরোধ চলছে। তাঁর লোকজন আমাদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট করে এবং আমার বাবাকে আঘাত করে। আমাকে আঘাত করতে এলে আত্মরক্ষার্থে তাঁকে একটি আঘাত করি।’
সাঁথিয়া থিয়েটারের সাধারণ সম্পাদক ও বন্ধন থিয়েটারের সভাপতি জাহাঙ্গীর আলম সেলিম এবং শিল্প, সাহিত্য-সংস্কৃতি ও আবৃত্তি সংসদের সদস্য আবুল কালাম আজাদ বলেন, তারা শিল্প-সংস্কৃতি নিয়ে কাজ করেন। এ ধরনের ঘটনা কাম্য নয়। একজন শিল্পী হয়ে আরেকজনকে মারধর করে হাত ভেঙে দেওয়া ঠিক হয়নি। এর নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তির দাবি জানান তিনি।
সাঁথিয়া থানার ওসি সাইদুর রহমান বলেন, উভয় পক্ষ মামলা করেছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
সোনারগাঁয়ে ঐতিহাসিক গোয়ালদী শাহী মসজিদ সংস্কারের দাবিতে মানববন্ধন
সোনারগাঁওয়ে সুলতানি শাসনামলে নির্মিত ৫০৬ বছরের পুরনো অনন্য মুসলিম নিদর্শন গোয়ালদী শাহী মসজিদ সংস্কার ও যথাযথভাবে সংরক্ষণের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ‘সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটি’।
শুক্রবার (৭ মার্চ) দুপুরে উপজেলার গোয়ালদী এলাকায় অবস্থিত গোয়ালদী শাহী মসজিদের সামনে এই মানববন্ধনে অংশ নেন স্থানীয় সংস্কৃতি কর্মী, কবি, লেখক, গণমাধ্যম কর্মী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।
সংগঠনটির আহ্বায়ক কবি ও সংস্কৃতি কর্মী শাহেদ কায়েসের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, সোনারগাঁওয়ে স্বাধীন সুলতানদের শাসনামলে ১৫১৯ খ্রিষ্টাব্দে সুলতান আলাউদ্দিন হোসেনশাহের আমলে গোয়ালদী শাহী মসজিদটি নিমার্ণ করা হয়।
এ মসজিদটি প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের আওতাধীন থাকলেও মসজিদটির বিভিন্ন অংশ বর্তমানে ঝঁকির মুখে রয়েছে। বিশেষ করে মসজিদের দক্ষিণ-পশ্চিম কোনের স্তম্ভটি হেলে পড়েছে। যে কোনো সময় ধসে পড়তে পারে।
এছাড়া মসজিদের চার কোনায় চারটি স্তম্ভের উপরের মাথার গোলাকার গম্বুজ ইতিমধ্যে ধসে গেছে। দ্রুত এর সংস্কার করা না হলে ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো বিলীন হয়ে যাবে।এ ঐতিহাসিক মসজিদটি দ্রুত সংস্কার করে যথাযথ সংরক্ষণ ও রক্ষনাবেক্ষনের জন্য দাবি জানান তারা।
মানবন্ধনে সভাপতির বক্তব্যে সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটির আহবায়ক, বিশিষ্ট কবি ও সংস্কৃতি কর্মী শাহেদ কায়েস বলেন, প্রাচীন বাংলার রাজধানী সোনারগাঁওয়ের প্রবেশ মুখগুলোতে যদি সোনারগাঁ অঞ্চলের প্রতিটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনের সিটিজেন চার্টার স্থাপন করা হয় তাহলে পর্যটকরা সহজেই এ স্থানগুলো পরিদর্শন করতে পারবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাতে এ বিষয়ে উদ্যোগ গ্রহন করেন সেজন্য সংগঠনের পক্ষ থেকে আমরা,জোড় দাবী জানাই।
মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটির সদস্য সচিব লেখক ও সাংবাদিক রবিউল হুসাইন, উদীচী’র সোনারগাঁ শাখার সভাপতি শংকর প্রকাশ, সোনারগাঁ সাহিত্য নিকেতনের সাংগঠনিক সম্পাদক মোফাখখার সাগর, শিক্ষা ও গবেষণা সম্পাদক মোয়াজ্জেনুল হক, সোনারগাঁও প্রেস ক্লাবের প্রচার সম্পাদক খায়রুল আলম খোকন, কবি ও সাংবাদিক এরশাদ হুসাইন অন্য ও সোনারগাঁ সাহিত্য নিকেতনের নির্বাহী সদস্য রোকেয়া আক্তার বেবী ও শিক্ষিকা শামীমা নাসরিন। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, সোনারগাঁ সাহিত্য নিকেতনের অর্থ সম্পাদক সেলিম আহমেদ প্রধান, সংগঠক খাদিজা আক্তার, ইস্কান্দার আলী আলভী ও মোমেন মিয়া প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সোনারগাঁওয়ের ঐতিহাসিক পানাম সেতু সংরক্ষণের জন্য এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি ‘সোনারগাঁয়ের ইতিহাস-ঐতিহ্য ও প্রত্নসম্পদ সংরক্ষণ কমিটি’ মানববন্ধন কর্মসূচু পালন করে। পরে এ সেতু সংরক্ষণের জন্য গত ৬ মার্চ বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টা, সংস্কৃতি উপদেষ্টা, প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক, সোনারগাঁ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সোনারগাঁয়ের প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কাসটোডিয়ান বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।