যে সুরায় আছে কোরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনি
Published: 8th, March 2025 GMT
আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের সুরা হুদের ৬ থেকে সুরা ইউসুফের ৫২ নম্বর আয়াত পর্যন্ত তিলাওয়াত করা হবে। পারা হিসেবে ১২তম পারার এই পর্বে কোরআনের ব্যাপারে কাফেরদের সংশয়, পবিত্র কোরআন অকাট্য, নির্ভুল এবং ধ্রুব সত্য, দৃঢ়তার সঙ্গে ইসলামে অটল থাকা, সৃষ্টিতত্ত্ব, পূর্ববর্তী নবীদের দাওয়াত, তাঁদের প্রতি নিজ সম্প্রদায়ের বিরূপ আচরণ, কাফেরদের প্রতি আল্লাহর আজাব এবং ইউসুফ (আ.
সুরা হুদে দুই ধরনের মানুষের কথা
সুরা হুদের ১৫ থেকে ২৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা দুই ধরনের মানুষের পরিচয় তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে অবিশ্বাসীদের জীবনের সব ব্যস্ততা, কাজকর্ম ও চেষ্টা শুধু দুনিয়াকে ঘিরে। তারা সারাক্ষণ শুধু দুনিয়ার ভাবনায় বিভোর থাকে। দুনিয়াকে প্রতিদিনই নতুন করে সাজাতে চায়। তারা আল্লাহ ও পরকাল স্মরণ করে না। অপরদিকে বিশ্বাসীদের দুনিয়ার জন্য প্রয়োজনমতো জীবনধারণের ব্যবস্থায় কাজ করলেও তাদের চূড়ান্ত লক্ষ৵ থাকে আখিরাতের প্রতি। তারা পরকাল সামনে রেখে দুনিয়া সাজায়। আল্লাহকে পেতে জীবন গড়ে। অবিশ্বাসীদের উপমা দেওয়া হয়েছে অন্ধ ও বধিরের সঙ্গে, আর বিশ্বাসীদের উপমা দেওয়া হয়েছে চক্ষুষ্মান ও শ্রবণশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তির সঙ্গে।
আরও পড়ুনপ্রাচীন ৬ জাতি ধ্বংসের কাহিনি১৬ মার্চ ২০২৪দ্বিতীয় মানবসভ্যতার সূচনাসুরা হুদের ২৫ থেকে ৪৯ নম্বর আয়াতে পৃথিবীর দ্বিতীয় মানবসভ্যতার নবী নুহ (আ.)-এর আগমন, অবিশ্বাসীদের প্রতি তাঁর একত্ববাদের দাওয়াত, তাদের অস্বীকৃতি, আজাবের ভয় দেখানো, আল্লাহর আদেশে নুহ নবী (আ.)–এর নৌকা নির্মাণ, নৌকা নিয়ে অবিশ্বাসীদের মশকরা, নৌকায় বিশ্বাসী মানুষ ও প্রতিটি সৃষ্টির জোড়ায় জোড়ায় আরোহণ, মহাপ্লাবনে পৃথিবী ধ্বংস ও নৌকায় আরোহীরা বেঁচে যাওয়ার বয়ান রয়েছে।
নুহ (আ.) পৃথিবীর দ্বিতীয় নবী ও প্রথম রাসুল। আদম (আ.)-এর পর তিনি নবী-রাসুল হয়ে পৃথিবীতে এলেন। মাঝখানে কেটে গেছে অনেক বছর। এর মধ্যে মানুষ আল্লাহকে ভুলে গেছে। মানুষ বিস্মৃত হয়েছে একত্ববাদের বাণী। তিনি পথভোলা মানুষকে এক আল্লাহর পথে দাওয়াত দিলেন। মুষ্টিমেয় কিছু লোক ছাড়া কেউ তাঁর কথা শুনল না। তারা হত্যার হুমকি দিল। তিনি শাস্তির ভয় দেখালেন। তারা শাস্তির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ল। আল্লাহ নুহ নবীকে (আ.) নৌকা বানানোর আদেশ দিলেন। মানব ইতিহাসে তিনি প্রথম নৌকা বানালেন।
একদিন বিশ্বাসীদের নিয়ে তিনি নৌকায় উঠলেন। সঙ্গে নিলেন জোড়াবিশিষ্ট কিছু জীবজন্তু। পরে নেমে এল মহাপ্লাবন। জমিন বিদীর্ণ করে উঠে এল পানি। আসমান থেকে অঝোর ধারায় বর্ষিত হলো পানি। ধ্বংস হলো সবকিছু, বেঁচে গেলেন নুহ (আ.) ও তাঁর সঙ্গীরা। গড়ে উঠল নতুন সমাজ। শুরু হলো দ্বিতীয় মানবসভ্যতার সূচনা।
আরও পড়ুনহালাল খাবার গ্রহণ ও অসিয়তের গুরুত্ব১৫ মার্চ ২০২৪অদৃশ্যের খবর জানেন শুধু আল্লাহআল্লাহ সুরা হুদের ৪৯ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘এটি গায়েবের খবর, আমি আপনার প্রতি অহি প্রেরণ করছি। এর আগে এটা আপনার এবং আপনার জাতির জানা ছিল না।’ অদৃশ্যের খবর আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। অদৃশ্য জগৎ ও ভূপৃষ্ঠের অতি ক্ষুদ্র বিষয়েও তিনি অবগত। তিনি অবগত আছেন অণু-পরমাণু সম্পর্কেও। তিনি ছাড়া পৃথিবীর কোনো নবি-রাসুল, ফেরেশতা, জিন, পীর-মাশায়েখ-আলেম; কেউ অদৃশ্যের খবর জানেন না। কেউ কেউ মনে করেন, নবীরা অদৃশ্যের খবর জানেন; এটি ভুল বিশ্বাস—এমন বিশ্বাসে ইমান ভেঙে যায়। গায়েব তো ওই জ্ঞান, যা কোনো মাধ্যম ছাড়া সরাসরি জানা থাকে। মাধ্যম ছাড়া কোনো কিছু সরাসরি জানা একমাত্র আল্লাহর পক্ষেই সম্ভব। সৃষ্টির পক্ষে তা সম্ভব নয়।
যে সুরায় আছে কোরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনি
পবিত্র কোরআনের ১২তম সুরা ইউসুফ মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ১১১। এ সুরায় ইউসুফ (আ.)-এর কাহিনি থাকায় এর নাম রাখা হয়েছে সুরা ইউসুফ। ইউসুফ (আ.)-এর ঘটনাকে আল্লাহ নিজে ‘আহসানুল কাসাস’ তথা ‘শ্রেষ্ঠ কাহিনি’ আখ্যায়িত করেছেন।
আরও পড়ুনকোরআনের আয়াত ও দাম্পত্য সম্পর্কে সমঝোতা১৪ মার্চ ২০২৪ইউসুফ (আ.)-এর চমকপ্রদ কাহিনিইউসুফ (আ.) ছিলেন ইয়াকুব (আ.)-এর সন্তান। ইয়াকুব (আ.)-এর ছিল ১২ সন্তান। ইউসুফ (আ.) ছিলেন অত্যন্ত সুদর্শন। বাবা তাঁকে বেশ ভালোবাসতেন। ইউসুফ (আ.) শৈশবে একটি স্বপ্ন দেখেন, যা ছিল তাঁর নবী হওয়ার শুভবার্তা; এ কারণে বাবা ইয়াকুব (আ.)-এর মন পড়ে থাকত তাঁর প্রতি। ইউসুফ (আ.)-এর প্রতি বাবার তুমুল ভালোবাসায় অন্য ভাইয়েরা মেনে নিতে পারেননি। তাঁরা ইউসুফ (আ.)-এর ক্ষতি করতে চাইতেন।
একদিন তাঁরা ইউসুফ (আ.)-কে নিয়ে জঙ্গলের এক কুয়ায় ফেলে দেন। বাবাকে ইউসুফ (আ.)-এর মৃত্যুর মিথ্যা সংবাদ দেন তাঁরা। পুত্রশোকে কাঁদতে কাঁদতে ইয়াকুব (আ.) দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন।
সেই কুয়ার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল একটি কাফেলা। কাফেলার লোকেরা পানি ওঠানোর জন্য কুয়ায় বালতি ফেলতেই বালতিতে উঠে আসেন ইউসুফ (আ.)। তারা তাঁকে মিসরে বিক্রি করে দেয়। মিসরের প্রধানমন্ত্রী তাঁকে কিনে নেন। সেখানেই সে বড় থাকে। একদিন যৌবনে পা রাখেন ইউসুফ (আ.)। সে সময় আজিজে মিসরের স্ত্রী জুলেখা ইউসুফ (আ.)-এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। তিনি ইউসুফ (আ.)-কে মন্দ সম্পর্কে লিপ্ত হতে আহ্বান করলে ইউসুফ তা প্রত্যাখ্যান করেন।
বদনাম থেকে বাঁচার জন্য জুলেখা তাঁকে জেলে পুরে দেন। সেখানে ইউসুফ (আ.) আল্লাহর পথে মানুষকে দাওয়াত দেন। অনেকে দাওয়াত গ্রহণ করে। পরে বাদশাহর স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলার কারণে তিনি বাদশাহর সুদৃষ্টি পেতে সমর্থ হন। কারাগার থেকে তাঁর মুক্তি মেলে।
আগামীকাল তারাবিতে জোলেখার অপবাদে ইউসুফ (আ.)-এর নির্দোষ প্রমাণিত হওয়া, মিসরের মন্ত্রী হওয়া, বাবা ইয়াকুবের (আ.) দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়া, বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ ইত্যাদি কাহিনি পড়া হবে।
রায়হান রাশেদ: লেখক ও আলেম
আরও পড়ুননারীর মর্যাদা ও অধিকার এবং অলৌকিক তিন ঘটনা১২ মার্চ ২০২৪উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অব শ ব স দ র ক রআন র আল ল হ র আয় ত র জন য ইউস ফ
এছাড়াও পড়ুন:
যে সুরায় আছে কোরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনি
আজ খতমে তারাবিতে পবিত্র কোরআনের সুরা হুদের ৬ থেকে সুরা ইউসুফের ৫২ নম্বর আয়াত পর্যন্ত তিলাওয়াত করা হবে। পারা হিসেবে ১২তম পারার এই পর্বে কোরআনের ব্যাপারে কাফেরদের সংশয়, পবিত্র কোরআন অকাট্য, নির্ভুল এবং ধ্রুব সত্য, দৃঢ়তার সঙ্গে ইসলামে অটল থাকা, সৃষ্টিতত্ত্ব, পূর্ববর্তী নবীদের দাওয়াত, তাঁদের প্রতি নিজ সম্প্রদায়ের বিরূপ আচরণ, কাফেরদের প্রতি আল্লাহর আজাব এবং ইউসুফ (আ.)-এর জীবনের চমকপ্রদ গল্প, জাতীয় জীবনে বিপর্যয়ের কারণ, বান্দার জন্য আল্লাহর পুরস্কারসহ ইত্যাদি বিষয়ের বয়ান রয়েছে।
সুরা হুদে দুই ধরনের মানুষের কথা
সুরা হুদের ১৫ থেকে ২৪ নম্বর আয়াতে আল্লাহ তায়ালা দুই ধরনের মানুষের পরিচয় তুলে ধরেছেন। এর মধ্যে অবিশ্বাসীদের জীবনের সব ব্যস্ততা, কাজকর্ম ও চেষ্টা শুধু দুনিয়াকে ঘিরে। তারা সারাক্ষণ শুধু দুনিয়ার ভাবনায় বিভোর থাকে। দুনিয়াকে প্রতিদিনই নতুন করে সাজাতে চায়। তারা আল্লাহ ও পরকাল স্মরণ করে না। অপরদিকে বিশ্বাসীদের দুনিয়ার জন্য প্রয়োজনমতো জীবনধারণের ব্যবস্থায় কাজ করলেও তাদের চূড়ান্ত লক্ষ৵ থাকে আখিরাতের প্রতি। তারা পরকাল সামনে রেখে দুনিয়া সাজায়। আল্লাহকে পেতে জীবন গড়ে। অবিশ্বাসীদের উপমা দেওয়া হয়েছে অন্ধ ও বধিরের সঙ্গে, আর বিশ্বাসীদের উপমা দেওয়া হয়েছে চক্ষুষ্মান ও শ্রবণশক্তিসম্পন্ন ব্যক্তির সঙ্গে।
আরও পড়ুনপ্রাচীন ৬ জাতি ধ্বংসের কাহিনি১৬ মার্চ ২০২৪দ্বিতীয় মানবসভ্যতার সূচনাসুরা হুদের ২৫ থেকে ৪৯ নম্বর আয়াতে পৃথিবীর দ্বিতীয় মানবসভ্যতার নবী নুহ (আ.)-এর আগমন, অবিশ্বাসীদের প্রতি তাঁর একত্ববাদের দাওয়াত, তাদের অস্বীকৃতি, আজাবের ভয় দেখানো, আল্লাহর আদেশে নুহ নবী (আ.)–এর নৌকা নির্মাণ, নৌকা নিয়ে অবিশ্বাসীদের মশকরা, নৌকায় বিশ্বাসী মানুষ ও প্রতিটি সৃষ্টির জোড়ায় জোড়ায় আরোহণ, মহাপ্লাবনে পৃথিবী ধ্বংস ও নৌকায় আরোহীরা বেঁচে যাওয়ার বয়ান রয়েছে।
নুহ (আ.) পৃথিবীর দ্বিতীয় নবী ও প্রথম রাসুল। আদম (আ.)-এর পর তিনি নবী-রাসুল হয়ে পৃথিবীতে এলেন। মাঝখানে কেটে গেছে অনেক বছর। এর মধ্যে মানুষ আল্লাহকে ভুলে গেছে। মানুষ বিস্মৃত হয়েছে একত্ববাদের বাণী। তিনি পথভোলা মানুষকে এক আল্লাহর পথে দাওয়াত দিলেন। মুষ্টিমেয় কিছু লোক ছাড়া কেউ তাঁর কথা শুনল না। তারা হত্যার হুমকি দিল। তিনি শাস্তির ভয় দেখালেন। তারা শাস্তির প্রতি চ্যালেঞ্জ ছুড়ল। আল্লাহ নুহ নবীকে (আ.) নৌকা বানানোর আদেশ দিলেন। মানব ইতিহাসে তিনি প্রথম নৌকা বানালেন।
একদিন বিশ্বাসীদের নিয়ে তিনি নৌকায় উঠলেন। সঙ্গে নিলেন জোড়াবিশিষ্ট কিছু জীবজন্তু। পরে নেমে এল মহাপ্লাবন। জমিন বিদীর্ণ করে উঠে এল পানি। আসমান থেকে অঝোর ধারায় বর্ষিত হলো পানি। ধ্বংস হলো সবকিছু, বেঁচে গেলেন নুহ (আ.) ও তাঁর সঙ্গীরা। গড়ে উঠল নতুন সমাজ। শুরু হলো দ্বিতীয় মানবসভ্যতার সূচনা।
আরও পড়ুনহালাল খাবার গ্রহণ ও অসিয়তের গুরুত্ব১৫ মার্চ ২০২৪অদৃশ্যের খবর জানেন শুধু আল্লাহআল্লাহ সুরা হুদের ৪৯ নম্বর আয়াতে বলেন, ‘এটি গায়েবের খবর, আমি আপনার প্রতি অহি প্রেরণ করছি। এর আগে এটা আপনার এবং আপনার জাতির জানা ছিল না।’ অদৃশ্যের খবর আল্লাহ ছাড়া আর কেউ জানেন না। অদৃশ্য জগৎ ও ভূপৃষ্ঠের অতি ক্ষুদ্র বিষয়েও তিনি অবগত। তিনি অবগত আছেন অণু-পরমাণু সম্পর্কেও। তিনি ছাড়া পৃথিবীর কোনো নবি-রাসুল, ফেরেশতা, জিন, পীর-মাশায়েখ-আলেম; কেউ অদৃশ্যের খবর জানেন না। কেউ কেউ মনে করেন, নবীরা অদৃশ্যের খবর জানেন; এটি ভুল বিশ্বাস—এমন বিশ্বাসে ইমান ভেঙে যায়। গায়েব তো ওই জ্ঞান, যা কোনো মাধ্যম ছাড়া সরাসরি জানা থাকে। মাধ্যম ছাড়া কোনো কিছু সরাসরি জানা একমাত্র আল্লাহর পক্ষেই সম্ভব। সৃষ্টির পক্ষে তা সম্ভব নয়।
যে সুরায় আছে কোরআনের শ্রেষ্ঠ কাহিনি
পবিত্র কোরআনের ১২তম সুরা ইউসুফ মক্কায় অবতীর্ণ। এ সুরার আয়াত সংখ্যা ১১১। এ সুরায় ইউসুফ (আ.)-এর কাহিনি থাকায় এর নাম রাখা হয়েছে সুরা ইউসুফ। ইউসুফ (আ.)-এর ঘটনাকে আল্লাহ নিজে ‘আহসানুল কাসাস’ তথা ‘শ্রেষ্ঠ কাহিনি’ আখ্যায়িত করেছেন।
আরও পড়ুনকোরআনের আয়াত ও দাম্পত্য সম্পর্কে সমঝোতা১৪ মার্চ ২০২৪ইউসুফ (আ.)-এর চমকপ্রদ কাহিনিইউসুফ (আ.) ছিলেন ইয়াকুব (আ.)-এর সন্তান। ইয়াকুব (আ.)-এর ছিল ১২ সন্তান। ইউসুফ (আ.) ছিলেন অত্যন্ত সুদর্শন। বাবা তাঁকে বেশ ভালোবাসতেন। ইউসুফ (আ.) শৈশবে একটি স্বপ্ন দেখেন, যা ছিল তাঁর নবী হওয়ার শুভবার্তা; এ কারণে বাবা ইয়াকুব (আ.)-এর মন পড়ে থাকত তাঁর প্রতি। ইউসুফ (আ.)-এর প্রতি বাবার তুমুল ভালোবাসায় অন্য ভাইয়েরা মেনে নিতে পারেননি। তাঁরা ইউসুফ (আ.)-এর ক্ষতি করতে চাইতেন।
একদিন তাঁরা ইউসুফ (আ.)-কে নিয়ে জঙ্গলের এক কুয়ায় ফেলে দেন। বাবাকে ইউসুফ (আ.)-এর মৃত্যুর মিথ্যা সংবাদ দেন তাঁরা। পুত্রশোকে কাঁদতে কাঁদতে ইয়াকুব (আ.) দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলেন।
সেই কুয়ার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল একটি কাফেলা। কাফেলার লোকেরা পানি ওঠানোর জন্য কুয়ায় বালতি ফেলতেই বালতিতে উঠে আসেন ইউসুফ (আ.)। তারা তাঁকে মিসরে বিক্রি করে দেয়। মিসরের প্রধানমন্ত্রী তাঁকে কিনে নেন। সেখানেই সে বড় থাকে। একদিন যৌবনে পা রাখেন ইউসুফ (আ.)। সে সময় আজিজে মিসরের স্ত্রী জুলেখা ইউসুফ (আ.)-এর প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। তিনি ইউসুফ (আ.)-কে মন্দ সম্পর্কে লিপ্ত হতে আহ্বান করলে ইউসুফ তা প্রত্যাখ্যান করেন।
বদনাম থেকে বাঁচার জন্য জুলেখা তাঁকে জেলে পুরে দেন। সেখানে ইউসুফ (আ.) আল্লাহর পথে মানুষকে দাওয়াত দেন। অনেকে দাওয়াত গ্রহণ করে। পরে বাদশাহর স্বপ্নের ব্যাখ্যা বলার কারণে তিনি বাদশাহর সুদৃষ্টি পেতে সমর্থ হন। কারাগার থেকে তাঁর মুক্তি মেলে।
আগামীকাল তারাবিতে জোলেখার অপবাদে ইউসুফ (আ.)-এর নির্দোষ প্রমাণিত হওয়া, মিসরের মন্ত্রী হওয়া, বাবা ইয়াকুবের (আ.) দৃষ্টিশক্তি ফিরে পাওয়া, বাবার সঙ্গে সাক্ষাৎ ইত্যাদি কাহিনি পড়া হবে।
রায়হান রাশেদ: লেখক ও আলেম
আরও পড়ুননারীর মর্যাদা ও অধিকার এবং অলৌকিক তিন ঘটনা১২ মার্চ ২০২৪