রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার আলোচিত অপরাধী চক্র ‘লও ঠেলা গ্রুপে’র প্রধান মো. ইমরান ওরফে মাওরা ইমরানকে ৮ সহযোগীসহ গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল শুক্রবার মোহাম্মদপুর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।

ডিবির তেজগাঁও বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপকমিশনার (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই চক্রের সদস্যরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, নারীদের উত্ত্যক্ত করা, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘লও ঠেলা গ্রুপের’ সক্রিয় ১০ সদস্য ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মার্কেট, গণপরিবহন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আশপাশে অবস্থান নিয়ে ডাকাতি করেন। ডাকাতির সময় বাধা দিলে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। তাঁরা মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, বছিলা, চাঁদ উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় নানা ধরনের অপরাধে জড়িত। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।

ডিবির অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ইমরানের সহযোগীরা হলেন, আজগর আলী, মো.

তাওহীদ, মো. বিকাশ হাসান, মো. আকাশ, মো. জুয়েল, মো. সাগর হোসেন, মো. আব্বাস ও মো. আমীর হোসেন। তাঁদের মধ্যে ৭ জনের বয়স ১৮ থেকে ২৫–এর মধ্যে। একজনের বয়স ৪০–এর বেশি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইমর ন

এছাড়াও পড়ুন:

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যাম্পিয়ন ভারত

আগ্রাসী ব্যাটিং করে শুরুতেই যেন টেনশন কমিয়ে দিয়েছিলেন রোহিত শর্মা। তবুও ফাইনাল বলে কথা। কখনো কখনো মনে হয়েছে ২০১৯ বিশ্বকাপ ফাইনালের পুনরাবৃত্তিও হতে পারে। শেষে এসে টানটান উত্তেজনা। কিন্তু না তেমন কিছু ঘটেনি।

সেট ব্যাটারদের আউটে কিছুটা উত্তেজনা সৃষ্টি হলেও আসলে ভারতীয় ব্যাটিং গভীরতার কাছে হার মানতে হয় কিউইদের। পুরো ম্যাচ জুড়ে দাপুটে খেলে ৪ উইকেটের জয়ে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত।

আরো পড়ুন:

যে কাজের পর নাঈম শেখের ব্যাটে ছুটছে রানের ফোয়ারা

বৃথা গেল আল-আমিনের সেঞ্চুরি, আবাহনীর জয়

এক বছরের ব্যবধানে দুটি বৈশ্বিক ট্রফি শোকেসে তোলে ভারত। ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর এবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। এর আগের বছর ঘরের মাঠে ২০২৩ বিশ্বকাপ জিতলে ষোলোকলা পূর্ণ হতো রোহিত-কোহলিদের।

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে ৭ উইকেটে ২৫১ রান করে নিউ জিল্যান্ড। তাড়া করতে নেমে ৬ বল হাতে রেখে ৪ উইকেটে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ভারত।

লোকেশ রাহুল ৩৩ বলে ৩৪ ও রবীন্দ্র জাদেজা ৬ বলে ৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন। জয় থেকে যখন ১১ রান দূরে তখন সাজঘরে ফেরেন হার্দিক পান্ডিয়া (১৮)।

ভারতের কাজটা সহজ করে অধিনায়ক রোহিত শর্মা। শুরু থেকে আক্রমণাত্বক ব্যাটিংয়ে এলোমেলো করে দেন নিউ জিল্যান্ড বোলিংকে। আরেক প্রান্তে শুভমান গিল দারুণ সঙ্গ দেন। ৫০ বলে ৩১ রানে বাজপাখি ফিলিপসের দারুণ ক্যাচে গিল ফেরেন সাজঘরে। এরপর কোহলি এসেই ১ রানে ফেরেন ব্রেসওয়েলের ঘূর্ণিতে। এলবিডব্লিউর শিকার হন, রিভিউ নিলেও কাজ হয়নি।

কোহলি ফেরার পর রোহিতও থামেন। তার ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৭৬ রান। ৮৩ বলে ৭টি চার ও ২টি ছয়ের মারে এই রান করেন ভারত অধিনায়ক। এরপর দলকে এগিয়ে নিয়ে যান আয়ার-অক্ষর। দুজনে ৭৫ বলে ৬১ রানের জুটি গড়ে জয়ের ভিত গড়ে দেন। আইয়ার ৬২ বলে ৪৮ রান করে ফিরলে ভাঙ্গে জুটি। অক্ষর ৪০ বলে ২৯ রান করেন। এরপর জয়ের রাহুল দলকে বন্দরে পৌঁছে দেন। কিউইদের হয়ে সর্বোচ্চ ২ উইকেট করে নেন স্যান্টনার-ব্রেসওয়েল।

এর আগে দারুণ শুরুর পর হঠাৎ ছন্দপতন ঘটে নিউ জিল্যান্ড ব্যাটিংয়ে। বোলিংয়ে এসেই প্রথম ওভারে বরুণ চক্রবর্তী ফেরান উইল ইয়ংকে (১৫)। ভাঙে ৫৭ রানের ওপেনিং জুটি। একই ওভারে রাচিন রবিন্দ্রর ক্যাচ মিস হয়।

রবীন্দ্রর উইকেট পাননি বরুণ। তাকে থামাতে দেরি করেননি কুলদীপ যাদব। অসাধারণ ডেলিভারিতে বোল্ড করে কিউই রানের গতি কমিয়ে দেন। রাচিন ফেরেন ৩৭ রানে। নতুন ব্যাটার কেন উইলিয়ামসনকেও বেশিদূর এগোতে দেননি যাদব। ১৮ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে কার্যত ছন্দ হারিয়ে ফেলে নিউ জিল্যান্ড।

এরপর এক প্রান্তে আগলে রেখে খেলতে থাকেন ড্যারিল মিচেল। টম ল্যাথামকে সঙ্গে নিয়ে ৬৬ বলের জুটিতে ৩৩ রান যোগ করেন।  ল্যাথাম ৩০ বলে ১৪ রানে আউট হলে ভাঙে জুটি। ল্যাথম ফিরলে মিচেলের সঙ্গী হন ফিলিপস। এই জুটিতে প্রতিরোধ গড়লেও রানের গতি ছিল ধীর। ৮৭ বলে আসে ৫৭ রান। ফিলিপস ৫২ বলে ৩৪ রান করে আউট হলে ভাঙে জুটি।

মিচেল ক্রিজে থাকলেও শেষ দিকে সুবিধা আদায় করতে পারেননি। ৯২ বলে ফিফটি করেন এই অলরাউন্ডার। তার ব্যাট থেকে ১০১ বলে সর্বোচ্চ ৬৩ রান আসে। শেষে দারুণ খেলেন ব্রেসওয়েল। মাত্র ৪০ বলে ৫৩ রান করে দলীয় সংগ্রহ আড়াইশ পার করেন।

ভারতের হয়ে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট নেন বরুণ-কুলদীপ। ৭৬ রানের ইনিংস খেলে ফাইনালে ম্যাচসেরা হন রোহিত। আর টুর্নামেন্টে ৪ ম্যাচ খেলে ২৬৩ রান ও ৩ উইকেট নিয়ে সিরিজ সেরা হন নিউ জিল্যান্ডের অলরাউন্ডার রাচিন।

ঢাকা/রিয়াদ/আমিনুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ