‘লও ঠেলা গ্রুপের’ প্রধান ইমরানসহ ৯ জন গ্রেপ্তার
Published: 8th, March 2025 GMT
রাজধানীর মোহাম্মদপুর এলাকার আলোচিত অপরাধী চক্র ‘লও ঠেলা গ্রুপে’র প্রধান মো. ইমরান ওরফে মাওরা ইমরানকে ৮ সহযোগীসহ গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। গতকাল শুক্রবার মোহাম্মদপুর থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
ডিবির তেজগাঁও বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপকমিশনার (ডিসি) জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই চক্রের সদস্যরা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, নারীদের উত্ত্যক্ত করা, মাদক ব্যবসাসহ বিভিন্ন অপরাধে জড়িত।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে ডিবি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, ‘লও ঠেলা গ্রুপের’ সক্রিয় ১০ সদস্য ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। তাঁরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকার মার্কেট, গণপরিবহন, বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আশপাশে অবস্থান নিয়ে ডাকাতি করেন। ডাকাতির সময় বাধা দিলে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে। তাঁরা মোহাম্মদপুরের ঢাকা উদ্যান, বছিলা, চাঁদ উদ্যানসহ আশপাশের এলাকায় নানা ধরনের অপরাধে জড়িত। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
ডিবির অভিযানে গ্রেপ্তার হওয়া ইমরানের সহযোগীরা হলেন, আজগর আলী, মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইমর ন
এছাড়াও পড়ুন:
ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে গুমের ঢেউ, বেড়েছে রহস্যজনক মৃত্যু
শওকত আহমেদের মৃতদেহ যখন পাওয়া গেল, তখন তাঁর চোখ দুটি ছিল রক্তাক্ত। তাঁর চুল খসে পড়ছে। ১৮ বছর বয়সী এ যুবকের হাত-পায়ের চামড়া উঠে যাচ্ছিল। তাঁর বাবা মোহাম্মদ সাদিক এসব তথ্য জানান। ঘটনাটি গত ১৬ মার্চের। এর তিন দিন পরই সাদিক জানতে পারেন তাঁর বড় ছেলে রিয়াজও (২৫) মারা গেছেন। তারা দু’জনই এক মাস আগে নিখোঁজ হয়েছিলেন।
ভারত শাসিত কাশ্মীরের গুজ্জার সম্প্রদায়ের মানুষ তারা। স্থানীয় আইন প্রয়োগ সংস্থার কর্মকর্তারা জানান, শওকত ও রিয়াজ কাশ্মীরের কুলগাম অঞ্চলের একটি নালায় ডুবে গিয়েছিলেন, যা তাদের বাড়ি থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে। তাদের ময়নাতদন্ত রিপোর্টে ‘সম্ভাব্য আত্মহত্যা’ বলে উল্লেখ করা হয়।
কিন্তু সাদিক ও গুজ্জার সম্প্রদায়ের অধিকাংশ মানুষ ভারতের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এ বয়ান মানতে নারাজ। সাদিক জানেন না তাঁর দুই ছেলের গুম হওয়া ও পরে মারা যাওয়ার আসল কারণ কী; এটি নিরাপত্তা বাহিনী করেছে, নাকি সশস্ত্র বিদ্রোহীরা। আলজাজিরাকে তিনি বলেন, তাদের নির্যাতন করে হত্যা করা হয়েছে।
সরকারি বাহিনী এ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করছে। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বয়ানের ওপর গভীর অবিশ্বাস রয়েছে ওই অঞ্চলের মানুষের, যেখানে সম্প্রতি ব্যাপক হারে বেড়েছে গুম। এসব গুমের কিছুদিন পরই মিলছে মৃতদেহ। মুখতার আহমদ আওয়ান নামে ২৪ বছরের আরেক যুবক নিখোঁজ রয়েছেন, যার খোঁজ এখনও মেলেনি। তারা বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে বের হয়ে আর ফেরেননি।
সরকারের ওপর অনাস্থা কাশ্মীরের ইতিহাসের সঙ্গে সংযুক্ত। অ্যাসোসিয়েশন অব প্যারেন্টস অব ডিসঅ্যাপিয়ার্ড পারসন্সের (এপিডিপি) তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৯ সালে ভারত শাসিত এলাকাটিতে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু হলে এ পর্যন্ত ৮ থেকে ১০ হাজার কাশ্মীরি নিখোঁজ হয়েছেন।
কেবল এ তিনজনই নয়, কাশ্মীরে যেন গুমের ঢেউ বয়ে যাচ্ছে। গত ৫ মার্চ কুলগামের পাশের কাঠুয়া জেলা থেকে যুগেশ সিং (৩২), দর্শন সিং (৪০) ও ১৫ বছরের বরুণ সিং নিখোঁজ হন। তারা বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে ফিরছিলেন। তিন দিন পর তাদের মরদেহ পাওয়া যায়। কয়েকদিন পর কাঠুয়া থেকেই মোহাম্মদ দিন ও রহমান আলি নামে আরও দুই কিশোর গুম হয়। এক মাস পার হলেও এখনও তাদের খোঁজ মেলেনি।
২০২০ সালে ভারতের এক সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাজৌরি জেলায় গুজ্জার সম্প্রদায়ের তিন তরুণকে অপহরণ ও হত্যার অভিযোগ ওঠে। পরে পুলিশ এ ঘটনায় ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট গঠন করে। এতে সেনা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বন্দুকযুদ্ধের নাটক সাজানোর অভিযোগ আনা হয়। কোর্ট মার্শালে ওই কর্মকর্তা দোষী সাব্যস্ত ও সাজাপ্রাপ্ত হন। তবে পরে তিনি জামিন পেয়ে যান।