মাদারীপুরে দু’পক্ষের সংঘর্ষে দুই ভাই নিহত
Published: 8th, March 2025 GMT
মাদারীপুরে ড্রেজারের বালু তোলার পাইপ বসানো নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষের হামলায় দুই ভাই নিহত হয়েছে। এছাড়া গুরুতর আহত হয়েছে আরও তিনজন। শনিবার দুপুরে মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের সরদার কান্দি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের সরদার কান্দি গ্রামের মৃত আজিবার সরদারের দুই ছেলে আতাবুর সরদার (৪০) ও সাইফুল সরদার (৩৫)। তাদের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মাদারীপুর সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে।
আহতরা হলেন- খোয়াজপুর ইউনিয়নের মুজাম সরদারের ছেলে পলাশ সরদার (১৭), একই ইউনিয়নের আজিজুল হাওলাদারের ছেলে তাজেল হাওলাদার (১৮), আজিবার সরদারের ছেলে অলিল সরদার (৪০)। সাইফুল স্বেচ্ছাসেবক লীগ খোয়াজপুর ইউনিয়ন শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের টেকেরহাট এলাকার মোল্লা বাড়ি ও সরদার বাড়ির মাঝখানে ড্রেজারের বালু তোলার পাইপ বসানো নিয়ে দুই পক্ষের কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে সংঘর্ষ বাঁধে। এ ঘটনায় গুরুতর আহত অবস্থায় কয়েকজনকে মাদারীপুর সদর হাসপাতালে নিয়ে যায় স্থানীয়রা। হাসপাতালে নেওয়ার পর আতাবুর সরদার (৪০) ও সাইফুল সরদারের (৩৫) মৃত্যু হয়।
মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: স ঘর ষ স ব চ ছ স বক ল গ ম দ র প র সদর ব র সরদ র সরদ র র
এছাড়াও পড়ুন:
যে কারণে দোয়া ইউনুস পড়া হয়
হজরত ইউনুস (আ.) ছিলেন একজন নবী। সুরা ইউনুস নামে পবিত্র কোরআনে স্বতন্ত্র একটি সুরা আছে। এই সুরায় তওহিদের প্রমাণ ও অংশীবাদের প্রতিবাদ রয়েছে। সুরাটিতে অবিশ্বাসীদের সম্বোধন করে তওহিদ, ওহি, নবুয়ত ও পরকালের সত্যতা ঘোষণা করা হয়েছে।
সুরা ইউনুস ছাড়াও কোরআনে আরও ছয়টি সুরায় হজরত ইউনুস (আ.) সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। দুজন নবী মায়ের নামে পরিচিত হয়েছেন। একজন হজরত ঈসা ইবনে মরিয়ম (আ.), অন্যজন হজরত ইউনুস ইবনে মাত্তা (আ.)। মাত্তা হজরত ইউনুস (আ.)-এর মায়ের নাম। মায়ের নামেই তাঁকে ইউনুস ইবনে মাত্তা বলা হয়। কোরআনে তাঁকে তিনটি নামে উল্লেখ করা হয়েছে—ইউনুস, জুননুন ও সাহিবুল হুত। জুননুন ও সাহিবুল হুতের অর্থ মাছওয়ালা। মাছ–সংশ্লিষ্ট ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে তাঁকে এ নামে ডাকা হয়েছে।
হজরত ইউনুস (আ.)-কে বর্তমান ইরাকের মসুল নগরীর কাছাকাছি নিনাওয়া জনপদে নবী হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। সুরা সাফফাতের ১৪৭ আয়াতে এ নিয়ে আলোচনা আছে। তিনি মসুলবাসীকে আল্লাহর পথে ডাকলেন। আখিরাতের বিষয়ে সতর্ক করলেন। কিন্তু তাঁর সম্প্রদায়ের লোকেরা তাঁর কথা শোনেনি। নবী ইউনুস (আ.) তাদের ইমান নিয়ে হতাশ হয়ে পড়লেন।
আরও পড়ুন‘রাব্বানা আতিনা ফিদ্দুনিয়া’ কেন পড়ব২৪ মার্চ ২০২৪তিন দিনের মধ্যে আল্লাহর আজাব তাদের ওপর নিপতিত হচ্ছে ঘোষণা দিয়ে তিনি নিজ এলাকা ছেড়ে গেলেন। কিন্তু এলাকা ছাড়ার ব্যাপারে তিনি আল্লাহর নির্দেশের অপেক্ষা করেননি। আল্লাহর নির্দেশের অপেক্ষা না করে তাঁর নিজে নিজে বের হয়ে যাওয়াটা আল্লাহর পছন্দ হয়নি। এ ধরনের বিচ্যুতিতে আল্লাহ তাঁর প্রিয় বান্দাদের শিক্ষা দিয়ে থাকেন।
হজরত ইউনুস (আ.) এলাকা ছাড়ার পর লোকজন ভয় পেয়ে গেল যে এবার নিশ্চিত আল্লাহর আজাব চলে আসবে। তারা লোকালয় ছেড়ে বনবাদাড়ের দিকে চলে গেল। গবাদিপশু ও শিশুদেরও সঙ্গে নিল। সেখানে সবাই আল্লাহর কাছে আশ্রয় ও ক্ষমা প্রার্থনা করল। তাদের তওবার কারণে আল্লাহ তাদের ওপর থেকে আজাব সরিয়ে নেন।
এলাকা ছাড়ার পর হজরত ইউনুস (আ.) ভাবলেন, তার সম্প্রদায় হয়তো আল্লাহর আজাবে ধ্বংস হয়ে গেছে। তিনি কল্পনাও করেননি যে তারা তওবা করে আল্লাহর প্রতি ইমান নিয়ে আসবে। তিনি যখন জানতে পারলেন, তারা সবাই ইমান নিয়ে এসেছে, একদিকে তিনি অবাক হলেন, অন্যদিকে ভীত হয়ে পড়লেন। তিনি তাদের বলেছিলেন, তিন দিনের মধ্যে আল্লাহর আজাব আসবে, কিন্তু সেই আজাব সরে গেছে। তারা তাকে মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করে হত্যা করতে পারে। সে সময়ে মিথ্যা বলার শাস্তি ছিল হত্যা। এ আশঙ্কায় তিনি দেশে না ফিরে দূর দেশে যাওয়ার জন্য মানুষবোঝাই একটি নৌকায় চড়ে বসলেন। নৌকা মাঝনদীতে পৌঁছামাত্র প্রচণ্ড ঝড় শুরু হলো। প্রবল ঢেউয়ে নৌকা ডুবে যাওয়ার উপক্রম হলো। অবস্থা বেগতিক দেখে মাঝি বললেন, মালিকের অবাধ্য হয়ে এই নৌকায় কেউ উঠেছে। এমন কেউ থেকে থাকলে তাকে নদীতে ফেলে দিতে হবে। না হলে অন্য যাত্রীরা এই বিপদ থেকে রক্ষা পাবে না।
যাত্রীদের মধ্যে লটারি করা হলো। তিনবার লটারি করা হলে প্রতিবারই হজরত ইউনুস (আ.)-এর নাম এল। হজরত ইউনুস (আ.) তখন নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়লেন। একটি বিশালদেহী মাছ এসে তাঁকে গিলে ফেলল। মাছটির প্রতি আল্লাহর নির্দেশ ছিল, হজরত ইউনুস (আ.)-এর যেন কোনো ক্ষতি না হয়।
আরও পড়ুনযে কারণে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন পড়া হয়২৫ মার্চ ২০২৪মাছের পেটে গিয়ে হজরত ইউনুস (আ.) একটি দোয়া পড়ে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইলেন। ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। সেটিই দোয়া ইউনুস নামে পরিচিত। তিনি বললেন, ‘লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৮৭ ) অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ তুমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তুমি পবিত্র মহান, আমি তো সীমালঙ্ঘনকারী।’
এই দোয়ার ফলে মাছের পেট থেকে আল্লাহ তাঁকে মুক্তি দেন। কোরআনে আছে, ‘সে যদি আল্লাহর মহিমা আবৃত্তি না করত, তাহলে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত তাকে মাছের পেটে থাকতে হতো।’ (সুরা সাফফাত, আয়াত: ১৪৩-১৪৪)
কিছুদিন পর মাছটি হজরত ইউনুস (আ.)-কে নদীতীরে উগড়ে ফেলে দিল। আল্লাহ সেখানে তাঁর শারীরিক প্রশান্তির জন্য একটি লতাবিশিষ্ট গাছ উদ্গত করে দেন। কোরআনে আল্লাহ বলেন, ‘তারপর ইউনুসকে আমি তৃণহীন প্রান্তরে ফেলে দিলাম, তখন সে অসুস্থ ছিল। পরে তাকে ছায়া দেওয়ার জন্য আমি একটি লাউগাছ গজালাম।’ (সুরা সাফফাত, আয়াত: ১৪৫-১৪৬)
আরও পড়ুনপাপ থেকে প্রত্যাবর্তন করার নাম তওবা২৬ মার্চ ২০২৪‘লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৮৭ )
দোয়া ইউনুসের অর্থ
অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ তুমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তুমি পবিত্র মহান, আমি তো সীমালঙ্ঘনকারী।’
দোয়া ইউনুস এর ফজিলত
মাছের পেটে গিয়ে হজরত ইউনুস (আ.) একটি দোয়া পড়ে আল্লাহর কাছে আশ্রয় চাইলেন। ক্ষমা প্রার্থনা করলেন। সেটিই দোয়া ইউনুস নামে পরিচিত। তিনি বললেন, ‘লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৮৭ ) অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ তুমি ছাড়া কোনো উপাস্য নেই। তুমি পবিত্র মহান, আমি তো সীমালঙ্ঘনকারী।’
এই দোয়ার ফলে মাছের পেট থেকে আল্লাহ তাঁকে মুক্তি দেন। কোরআনে আছে, ‘সে যদি আল্লাহর মহিমা আবৃত্তি না করত, তাহলে পুনরুত্থান দিবস পর্যন্ত তাকে মাছের পেটে থাকতে হতো।’ (সুরা সাফফাত, আয়াত: ১৪৩-১৪৪)
যেকোনো বিপদে পড়লে আল্লাহর সাহায্য ও আশ্রয় কামনা করতে হয়।
হজরত সাদ (রা.)-এর বরাতে একটি হাদিস পাওয়া যায়। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, জুননুন ইউনুস (আ.) মাছের পেটে দোয়া করেছিলেন, লা ইলাহা ইল্লা আন্তা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন। কোনো মুসলমান যখনই এই দোয়া পড়ে, আল্লাহ অবশ্যই তার দোয়া কবুল করে থাকেন। (তিরমিজি, হাদিস: ৩৫০৫)
আরও পড়ুনহাসবুনাল্লাহু ওয়া নিমাল ওয়াকিল কখন পড়বেন২৬ মার্চ ২০২৪