প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলামকে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) চেয়ারম্যান পদে দুই বছরের জন্য চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দিয়েছে সরকার। আজ এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে তাঁকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একই দিনে পৃথক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে সংস্থাটির বর্তমান চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) ছিদ্দিকুর রহমান সরকারের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে।

রিয়াজুল ইসলাম বিএনপিপন্থী প্রকৌশলীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশের (এইবি) সভাপতি ছিলেন। এ ছাড়া ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর প্রকৌশলীদের প্রতিষ্ঠান ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশের (আইইবি) সভাপতি করা হয়েছিল তাঁকে।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে, দি টাউন ইমপ্রুভমেন্ট অ্যাক্ট ১৯৫৩ এর ধারা ৪(২) অনুযায়ী প্রকৌশলী মো.

রিয়াজুল ইসলামকে অন্য যে কোনো পেশা, ব্যবসা কিংবা সরকারি, আধা সরকারি, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান/সংগঠনের সঙ্গে কর্ম–সম্পর্ক পরিত্যাগের শর্তে যোগদানের তারিখ থেকে দুই বছর মেয়াদে রাজউকের চেয়ারম্যান পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ প্রদান করা হলো।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র য় জ ল ইসল ম সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

মশিউর সিকিউরিটিজের অর্থ আত্মসাৎ, শাস্তির দাবি বিনিয়োগকারীদের

মশিউর সিকিউরিটিজ লিমিটেডের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে পুঁজি হারিয়েছেন বিনিয়োগকারী ফারহানা জাফরিন। তিনি মশিউর সিকিউরিটিজের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচার জন্য এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। সেই বিনিয়োগের একটি টাকাও ফেরত পাননি জাফরিন। তার মতো অনেক বিনিয়োগকারী মশিউর সিকিউরিটিজের প্রতারণার শিকার হয়ে কোটি টাকা হারিয়েছেন।

নিঃস্ব বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরতে চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। পাশাপাশি প্রতারক প্রতিষ্ঠানসহ ডিএসই ও বিএসইসির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর বিজয়নগরে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীরা এসব অভিযোগ করেন।

আরো পড়ুন:

আইন লঙ্ঘন করা দুই ব্রোকারেজ হাউজকে জরিমানা

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক

সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে বিনিয়োগকারীরা বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা এখানে সমবেত হয়েছি মশিউর চিকিউরিটিজ (ডিএসই মেম্বার ১৩৪) এর দুর্নীতির বিষয়ে আপনাদের অবহিত করতে। প্রতিষ্ঠানটি যেভাবে গ্রাহকে ধোকা দিয়েছে তা আমরা এখন পেশ করব। মশিউর সিকিউরিটিজের অর্থ আত্মসাৎ এর উদ্দেশ্যে ক্লায়েন্টের শেয়ার বিক্রি করে এবং অনুমোদনহীন ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করে ক্লায়েন্টের মেইলে জাল পোর্টফলিও পাঠায়, যা মূল পোর্টফোলিওর অনুরূপ। যাতে করে গ্রাহক বুঝতে না পারে তার পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার বিক্রি হয়েছে। পরবর্তীতে তারা টাকা আত্মসাৎ করে। আমরা জানি শেয়ার বিক্রি কিংবা ক্রয় করলে সিডিবিএল হতে কনফার্মেশন মেসেজ আসে। এক্ষেত্রে গ্রাহকের মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে নিজেদের মোবাইল নম্বর চালিয়ে দেয় মশিউর সিকিউরিটিজ। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি জালিয়াতির আশ্রয় নেয়।’

এছাড়া রেকর্ড ডেটের আগে বেশি দামে যে পরিমাণ শেয়ার বিক্রি করে রেকর্ড ডেটের পর সেই পরিমাণ শেয়ার কিনে রেখে দিত। যাতে বিনিয়োগকারী বুঝতে না পারে। ফলে বিনিয়োগকারী লভ্যাংশ পেত না এবং বিক্রি ও ক্রয়ের মূল্য পার্থকের টাকা হিসাব থেকে সরিয়ে নিত। নিরব দীর্ঘমেয়াদী প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সাথে তারা এ ধরনের প্রতারণার কাজ করেছে। অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকের পোর্টফোলিয়তে রক্ষিত নগদ টাকা গ্রাহককে ফেরত না দিয়ে নিজেরা আত্মসাৎ করেছে।’

সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীরা আরো বলেন, ‘মানুষের সারা জীবনের সঞ্চয় মশিউর সিকিউরিটি নিয়ন্ত্রণ সংস্থার নাকের ডগা দিয়ে নিয়ে যাবে যা দুঃখজনক এবং স্পর্শকাতর। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিনিয়োগকারীদের অর্থের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। নিয়ন্ত্রণ সংস্থার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সহায়তায় মশিউর সিকিউরিটিজ এ ধরনের কাজ করেছে। দীর্ঘদিন গ্রাহকের অর্থ ও শেয়ারের প্রকৃত তথ্য প্রতিষ্ঠানটি আড়াল করার মাধ্যমে ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।’

‘আমরা সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবার মনযোগ আকর্ষণ করছি। এ ধরনের প্রতিষ্ঠিত প্রতারকের হাত থেকে আমাদের অর্থ উদ্ধারে সহযোগিতা চাই এবং প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি চাই।’

‘বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে জানানো হলে তারা তদন্তের নামে কালক্ষেপণ করেছে। এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। ইতোমধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) এ বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।’

বিনিয়োগকারী ফারহানা জাফরিন বলেন, “আমি চাকরি জীবনের সব জমানো পুঁজি মশিউর সিকিউরিটিজে রেখে আজ নিঃস্ব। আমি একটি টাকাও ফেরত পাইনি।”

আবু মাসুদ নামে একজন বিনিয়োগকারী বলেন, “আমি ৩৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি। আমাদের পোর্টফলিও এক রকম দেখাতো, আর তাদের অন্য সার্ভারে আরেক রকম পোর্টফলিও হিসাব রাখতো। যার কারণে আমরা সঠিক তথ্য পেতাম না। তারা আমাদের নম্বরের জায়গায় তাদের নিজেদের নম্বর দিয়ে সিডিবিএলে তথ্য পাঠিয়েছেন। যার কারণে আমরা সিডিবিএল থেকে কোনো তথ্য পেতাম না।”

শাহজাহান আলী বলেন, “মশিউর সিকিউরিটিজ আমাকে ৪০ লাখ ১৫ হাজার ৯০০ টাকার চেক দিয়েছে। কিন্তু টাকা তুলতে গিয়ে দেখি চেক ডিজ ওনার হয়। যার ফলে আমরা আর টাকা পাইনি। মশিউর সিকিউরিটিজের প্রতারণার জন্য আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”

এদিকে এ বিষয়ে মশিউর সিকিউরিটিজ লিমিটেড কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

ঢাকা/এনটি/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ