সচেতনতা ও প্রতিরোধই হতে পারে ক্যানসারের সবচেয়ে কার্যকর প্রতিকার
Published: 8th, March 2025 GMT
একসময় ক্যানসারকে দুরারোগ্য ব্যাধি হিসেবেই ধরা হতো, তবে আজকাল চিকিৎসা-পদ্ধতির অগ্রগতির কারণে কিছুটা হলেও এর প্রতিকার সম্ভব হয়েছে। তবু বিশ্বজুড়ে ক্যানসারে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে। তাই এর প্রতিকারের পাশাপাশি প্রতিরোধের দিকেও মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। সচেতনতা ও প্রতিরোধই হতে পারে এর সবচেয়ে কার্যকর উপায়। ২০১৪ সাল থেকে ফেব্রুয়ারিকে ক্যানসার প্রতিরোধ মাস হিসেবে পালন করা হয়ে আসছে। এ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে প্রতি বছর ফেব্রুয়ারিজুড়ে আয়োজিত হয় নানা সতর্কতামূলক আলোচনা, সেমিনার, গবেষণা ইত্যাদি।
সবার মাঝে ক্যানসারবিষয়ক সচেতনতা তৈরিতে এসকেএফ অনকোলোজি আয়োজন করে ‘বিশ্বমানের ক্যানসার-চিকিৎসা এখন বাংলাদেশে’ শীর্ষক অনলাইন আলোচনা। এটি গত ২৭ ফেব্রুয়ারি প্রচারিত হয় প্রথম আলো ডটকম এবং প্রথম আলো, এসকেএফ অনকোলোজি ও এসকেএফের ফেসবুক পেজে।
নাসিহা তাহসিনের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে ছিলেন জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক এবং সাবেক অধ্যাপক ডা.
শুরুতেই উপস্থাপক জানতে চান, ক্যানসার আসলে কেন হয়ে থাকে?
উত্তরে ডা. শেখ গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘ক্যানসার কারণ মূলত দুটি—জেনেটিক এবং পরিবেশগত। মা-বাবার জিনে যদি ক্যানসারের কোষ থাকে, সেই জিন দিয়ে যদি ফার্টিলাজেশন হয় এবং সন্তান জন্ম নেয়, তাদের ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি থাকে। যেমন দেখবেন অনেক শিশুর চোখ, কিডনি এবং লিভারে ক্যানসার হয়ে থাকে। পরিবেশগত কারণে নয়, মূলত জেনেটিক মিউটেশনের কারণেই তাদের এই ক্যানসার হয়ে থাকে। আর পরিবেশগত কারণে যে ক্যানসারগুলো হয়ে থাকে সেগুলোর হারই বেশি। জেনেটিক কারণে হয় ২২ থেকে ৩০ শতাংশ, পরিবেশগত কারণই মূলত ক্যানসারের সবচেয়ে বড় কারণ। ধূমপান, আমাদের খাদ্যাভ্যাস ও ভাইরাস ইনফেকশন ইত্যাদির কারণেই মূলত ক্যানসার বেশি হয়।’
বিশ্ব ক্যানসার দিবস, বাংলাদেশে ক্যানসারের বর্তমান অবস্থা ও চিকিৎসাপদ্ধতি এবং রোগ নির্ণয়ব্যবস্থা ইত্যাদি নিয়ে পরামর্শ দেন অধ্যাপক ডা. শেখ গোলাম মোস্তাফাউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভাসানচরকে নোয়াখালীর হাতিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন করার ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে
ভাসানচরকে নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলা থেকে বিচ্ছিন্ন করার ‘ষড়যন্ত্র’ চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে হাতিয়া দ্বীপ সমিতির উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনের আগে প্রেসক্লাবের সামনে ‘হাতিয়ার সর্বস্তরের সাধারণ মানুষ’–এর ব্যানারে একটি মানববন্ধন হয়।
আয়োজকদের দাবি, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের অনুমোদনক্রমে ২০১৬-১৭ সালের দিয়ারা জরিপে মেঘনা নদী ও বঙ্গোপসাগরের মোহনায় জেগে ওঠা ভাসানচরকে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে হাতিয়া দ্বীপ সমিতির সভাপতি জাহেদুল আলম বলেন, ২০১৬-১৭ সালেই নবসৃষ্ট ভাসানচর অংশটির (ভাসানচর, শালিকচর, চর বাতায়ন, চর মোহনা, চর কাজলা এবং কেউয়ারচর) দিয়ারা জরিপ শেষ করে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর। এর ফলাফল ২০১৮ সালের ১৮ এপ্রিল প্রকাশ করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে সরকারি গেজেটে ভাসানচর অংশের ছয়টি মৌজা নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
জাহেদুল আলম আরও বলেন, ২০১৮ সালে সন্দ্বীপের জনৈক অধিবাসীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। পরবর্তী সময়ে সব কার্যক্রম শেষ করে ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি ভাসানচরকে হাতিয়া উপজেলার অন্তর্ভুক্ত করে গেজেট নোটিশ জারি করা হয়েছে। ভাসানচর অংশের সর্বশেষ জরিপ অনুযায়ী, বর্ণিত ছয়টি মৌজা নিয়ে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার চরঈশ্বর ইউনিয়নের অধীন ভাসানচর থানা গঠিত হয়। ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি এর গেজেট প্রকাশিত হয়েছে।
হাতিয়া দ্বীপ সমিতির সভাপতির দাবি, ‘দীর্ঘদিন পর দূরভিসন্দিমূলকভাবে চলতি বছরের ২৩ মার্চ জোনাল সেটেলমেন্ট অফিস চট্টগ্রাম, নোয়াখালী (হাতিয়া) ও চট্টগ্রাম (সন্দ্বীপ) অংশের সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে প্রতিবেদন পাঠায়। একই দিন চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসকের কার্যালয় (রাজস্ব শাখা) আন্তজেলা সীমানা বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য গঠিত কমিটির প্রথম সভার কার্যবিবরণীর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের আদেশ জারি করা হয়। এটা সুস্পষ্ট প্রশাসনিক ষড়যন্ত্র বলে আমরা মনে করছি।’
জাহেদুল আলম বলেন, ‘জোনাল সেটেলমেন্ট অফিসারের কার্যালয়ের প্রতিবেদনটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, ত্রুটিপূর্ণ ও পক্ষপাতদুষ্ট। একটি কুচক্রী মহল ওই অঞ্চলের শান্তি ও শৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার অপপ্রয়াসে ভাসানচরকে একটি ইস্যু হিসেবে সামনে এনেছে, যা অনভিপ্রেত। এ বিষয়ে আমরা প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।’
হাতিয়া দ্বীপ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, যুবদলের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক শিল্পবিষয়ক সম্পাদক কারিমুল হাই নাঈম, হাতিয়া দ্বীপ সমিতির সাবেক সভাপতি হেদায়েত হোসেন, ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহ নেওয়াজ, নোয়াখালী জেলা শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সহসভাপতি শাহ মিজানুল হক মামুন, অ্যাডভোকেট শাহ মো. মাহফুজুল হক প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।