Prothomalo:
2025-04-28@03:02:40 GMT

সুই–সুতায় সচ্ছলতা এল জীবনে

Published: 8th, March 2025 GMT

পঞ্চম শ্রেণিতে উঠে অভাবের কারণে বিদ্যালয় ছেড়েছিলেন। ১৪ বছর বয়সে বাধ্য হয়েছিলেন বিয়ের পিঁড়িতে বসতে। দিনমজুর স্বামীর সংসারে এসেও অভাব পিছু ছাড়েনি। জোটেনি ঠিকমতো দুবেলার ভাত। কথায় কথায় স্বামী করতেন নির্যাতন। এরই মধ্যে তিনি স্বপ্ন দেখেছেন নিজে কিছু করার। একসময় স্বামী তাঁকে ছেড়ে চলে গেলে তিনি শুরু করেন সেলাইয়ের কাজ। আসে সাফল্য, অভাবের সংসারে আসে সচ্ছলতা। এই সংগ্রামী নারীর নাম লাভলী রানী। 

রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের উত্তর ঘনিরামপুর কলেজপাড়া এলাকায় তাঁর বাড়ি। সেলাইয়ের কাজ করে নিজেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। তাঁর দেখানো পথেই অনেকেই স্বাবলম্বী। সেলাইয়ের কাজ করে বেশ কাটছে তাঁদের দিন। এসব কর্মকাণ্ডের জন্য লাভলী জয়িতার পুরস্কার পেয়েছেন। 

লাভলী রানী প্রথম আলোকে বলেন, ১৯৮৪ সালে তারাগঞ্জ উপজেলার কুর্শা ইউনিয়নের বোয়ালপাড়া গ্রামের দরিদ্র একটি পরিবারে তাঁর জন্ম। চার ভাই–বোনের মধ্যে তিনি ছিলেন ছোট। ১৯৯৮ সালে বাবা বিশ্বম্ভর রায় কিশোরী মেয়েকে তুলে দেন উত্তর ঘনিরামপুর কলেজপাড়া গ্রামের সমর চন্দ্রের হাতে। স্বামীর বাড়িতে এসেও সুখী হননি লাভলী । প্রায় অনাহারে–অর্ধাহারে থাকতে হতো। কথায় কথায় স্বামী করতেন নির্যাতন। এরই মধ্যে কোলজুড়ে আসে দুই সন্তান। ছোট ছেলের বয়স যখন তিন মাস, স্বামী তাঁকে রেখে আরেকটি বিয়ে করেন। অথই সাগরে পড়েন লাভলী। অনেক ভেবেচিন্তে ঘর থেকে বের হন জীবিকার সন্ধানে।

লাভলী রানী একটি বেসরকারি সংস্থায় অফিস সহায়কের কাজ নেন। হাতে কিছু টাকা আসে। সেই টাকা দিয়ে একদিন কিনে আনেন ২টি ছাগল আর ১৫টি হাঁস-মুরগি। লাভলী ভরসা পান। মানুষ ঠকায়, কিন্তু হাঁস–মুরগি, গরু–ছাগল ঠকায় না। মুরগি ডিম পাড়ে, ছাগল বাচ্চা দেয়। লাভলীর মনে আরও কিছু করার স্বপ্ন জাগে। ২০১২ সালে তারাগঞ্জ পল্লী উন্নয়ন অফিসের অধীনে নেন হস্তশিল্পর ওপর প্রশিক্ষণ। তারাগঞ্জ বাজারে দোকান ভাড়া নিয়ে শুরু করেন সেলাইয়ের কাজ। আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি লাভলীকে। ভালো আয় হওয়ায় বদলাতে থাকে সংসারের চেহারা। তাঁর উন্নতি দেখে প্রতিবেশী অন্য অনেক নারী সেলাইয়ের কাজ শিখতে উদ্বুদ্ধ হন। লাভলী তাঁদের শিখিয়ে দেন। 

লাভলী রানী.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়: নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কর্মসূচি, ছাত্রদলের সভাপতি-সম্পাদককে নোটিশ

নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে দলীয় ব্যানারে কর্মসূচি পালন করায় শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। গতকাল রোববার ওই চিঠি দেওয়া হয়েছে। আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে তাঁদের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

গত বৃহস্পতিবার প্রক্টর মোখলেসুর রহমান স্বাক্ষরিত নোটিশে বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল শাবিপ্রবি শাখা ৮ এপ্রিল ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে শাবিপ্রবি ক্যাম্পাসে একটি মানববন্ধন করে, যা প্রশংসনীয়। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়ে শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন এবং ২১ এপ্রিল প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হত্যার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ব্যানারে মানববন্ধন ও র‍্যালি করেন, যা কিনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ থাকায় একটি শৃঙ্খলাভঙ্গের অপরাধ করেছেন এবং অপরাপর ছাত্রসংগঠনগুলোর ওপর এর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। তাই আপনাদের বিরুদ্ধে কেন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, তা আগামী তিন কার্যদিবসের মধ্যে প্রক্টর বরাবর লিখিতভাবে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো।’

গত ১৪ মার্চ শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নতুন কমিটির অনুমোদন দেওয়া হয়। কমিটিতে সভাপতি হিসেবে সফটওয়্যার প্রকৌশল বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রাহাত জামান ও সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের নাঈম সরকার মনোনীত হন।

গত বছরের ৬ নভেম্বর ক্যাম্পাসে দলীয় ব্যানারে রাজনৈতিক কার্যক্রমে আপাতত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তবে এ নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ক্যাম্পাসে দলীয় ব্যানারে কর্মসূচি করা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি রাহাত জামান প্রথম আলোকে বলেন, 'যে দুইটা বিষয়ে কর্মসূচি করেছি, সেগুলো জাতীয় ইস্যু। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীর ব্যানারে লুকিয়ে স্বার্থ হাসিল করতে চাইনি। আমরা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কাউকে জোর করিনি। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষেধাজ্ঞা যদি অমান্য হয়ে থাকে, আমরা তিনদিনের মধ্যে শোকজের জবাব দেব।'

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোখলেসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে শৃঙ্খলাভঙ্গের কাজ অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। আইন অমান্য করে কর্মসূচির কারণে ছাত্রদলের নেতাদের শোকজ করা হয়েছে। লিখিতভাবে তাঁদের জবাব পেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ