বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সভাপতি ফওজিয়া মোসলেম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘যাঁরা উপদেষ্টা আছেন, তাঁরা নানা আন্দোলনের ফসল। নারী একটা কঠিন সময় পার করছে, কিন্তু আন্দোলনের ফসল সেই নারীদের মুখ থেকে কোনো কথা শুনতে না পাওয়া আমাদের ক্ষুব্ধ ও ব্যথিত করেছে। তাঁদের প্রতি ধিক্কার জানাচ্ছি, তাঁরা কেন এই পরিস্থিতিতে নারীসমাজের পাশে এসে দাঁড়াচ্ছেন না। আহ্বান জানাই, এখনো সময় আছে নারীসমাজের পাশে দাঁড়ান।’

রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আজ শনিবার সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে নারীর প্রতি সহিংসতা ও বৈষম্যের প্রতিবাদে আয়োজিত সমাবেশে মহিলা পরিষদের সভাপতি এ কথা বলেন।

সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে ফওজিয়া মোসলেম আরও বলেন, ‘সমসুযোগ তৈরি করে নিতে হবে। এই দুঃসময়কে ভয় পাওয়া যাবে না। এই দুঃসময় ভেদ করে আলো ছিনিয়ে আনতে হবে। বাঙালি কোনো ধর্ষণ, খুন কিংবা নিপীড়নের কাছে মাথানত করবে না। সবাইকে একসঙ্গে এই প্রতিকূলতা ভেঙে এগিয়ে যেতে হবে।’

আইনশৃঙ্খলার ভঙ্গুর অবস্থার জন্য কোনো বিচার হচ্ছে না বলেন ফওজিয়া মোসলেম। এর উন্নতি না হলে শুধু নারীরাই নয়, যাঁরা শাসনক্ষমতায় আছেন, তাঁরাও নিরাপদে থাকবেন না, নৈরাজ্যের কাছে ভেসে যাবেন বলে জানান তিনি। তিনি দ্রুত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করার দাবি জানান।

নারী নির্যাতনকারীরা কীভাবে ছাড়া পাচ্ছে, সে প্রশ্ন তুলে মানবাধিকারকর্মী খুশী কবির বলেন, ‘তারা কীভাবে প্রশ্রয় পাচ্ছে? সরকারের পক্ষ থেকে কেন সুস্পষ্ট বক্তব্য দেওয়া হচ্ছে না? কেন আশ্বস্ত করা হচ্ছে না? এই সমাজ চাই না। এই সমাজ গ্রহণও করব না।’ নারীর অধিকার রক্ষায় সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

বাংলাদেশ নারী প্রগতি সংঘের পরিচালক শাহনাজ সুমি বলেন, ‘শাহবাগে নারী শিক্ষার্থীকে পোশাক নিয়ে হেনস্তা করার এবং সাইবার বুলিংয়ের এত সাহস কোথা থেকে পায়? রাষ্ট্রের নিরাপত্তা দেওয়ার কথা। কিন্তু ধর্ষক-নিপীড়কেরা ছাড় পেয়ে যাচ্ছে।’

আয়োজনে ‘নারীর ক্ষমতায়নে চাই সহিংসতামুক্ত জীবন, সম–অধিকার, সমমর্যাদা এবং সম সুযোগ’ শীর্ষক ঘোষণা পাঠ করেন কর্মজীবী নারী কাজী গুলশান আরা দীপা। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা, নারী বিদ্বেষের প্রকাশ অতিমাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েছে। নারীর প্রতি গণহেনস্তা ও মব সংস্কৃতির যে চিত্র গণমাধ্যমে উঠে আসছে, তা আতঙ্ক ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট। এই পরিস্থিতি নারীদের নির্ভয়ে চলাফেরার সুযোগ সীমিত করে দিচ্ছে। নারীর অগ্রযাত্রার পথে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ মহিলা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মালেকা বানু, জাতীয় নারী শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক সাহিদা পারভীন শিখা, শক্তি ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক নিলুফা বেগম, বাংলাদেশ আদিবাসী নারী নেটওয়ার্কের সমন্বয়কারী ফাল্গুনী ত্রিপুরা প্রমুখ। সামাজিক প্রতিরোধ কমিটির উদ্যোগে (৬৭টি নারী, মানবাধিকার ও উন্নয়ন সংগঠনের প্ল্যাটফর্ম) কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সমাবেশ, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

দলীয় শৃঙ্খলারক্ষায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না

দলীয় বিভিন্ন কার্যক্রম, রাজনৈতিক অবস্থান ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে সাংবাদিকদের সঙ্গে ঈদ শুভেচ্ছা করেছেন সিলেট জেলা ও নগর বিএনপির নেতারা। আজ শনিবার দুপুরে নগরীর জিন্দাবাজারে একটি অভিজাত হোটেলের মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি নেতারা জানান, দলীয়শৃঙ্খলা রক্ষায় কোনো ধরনের ছাড় দেওয়া হবে না। কেউ যদি বিএনপির নাম ব্যবহার করে অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়ায়, তার বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ সময় কারও ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডকে পুরো দলের ওপর চাপিয়ে না দিয়ে ন্যায়বিচারের ভিত্তিতে সংবাদ পরিবেশন করার অনুরোধ জানান নেতারা। 

বিএনপি নেতারা চা-শ্রমিকদের দুর্দশার কথা তুলে ধরে বলেন, দেশের অন্যতম বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত চা শিল্প বর্তমানে চরম সংকটে। চা-শ্রমিকরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। এ অবস্থায় মালিকপক্ষ, সরকার ও শ্রমিক সংগঠনকে একযোগে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। রমজানে চা-শ্রমিকদের মাঝে খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয় বলে তারা জানান।

সভায় আরও জানানো হয়, গত বছর গণআন্দোলনে নিহত ও আহত পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে সিলেট বিএনপি। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে ঈদ উপহার বিতরণ করা হয়েছে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে।

আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি প্রসঙ্গে নেতারা বলেন, ঈদ উপলক্ষে সিলেট নগর ও জেলার প্রতিটি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহযোগিতায় শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বজায় ছিল। এজন্য পুলিশ, র‌্যাব, ট্রাফিক বিভাগ, হাইওয়ে ও রেলওয়ে পুলিশসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানানো হয়।

বক্তারা বলেন, গণতন্ত্র, ন্যায়বিচার ও একটি নতুন আগামীর স্বপ্নে জনগণের যে প্রত্যাশা রয়েছে, তা তারা সরাসরি উপলব্ধি করতে পেরেছেন।

সভায় বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল কাইয়ুম চৌধুরী, নগর বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী এবং মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী। 

সভায় বক্তারা বলেন, পবিত্র রমজানে জেলার প্রতিটি উপজেলা-পৌরসভায় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডে এবং মহানগরীর থানার ওয়ার্ড-পাড়াগুলোতে দোয়া ও ইফতার মাহফিল করায় সাধারণ জনগণের সঙ্গে দলীয় নেতাকর্মীদের যোগাযোগ আরও গভীর হয়েছে। 

সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সহসভাপতি অ্যাডভোকেট আশিক উদ্দিন আশুক পিপি, শাহজামাল নুরুল হুদা, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি জিয়াউল গনি আরেফিন জিল্লুর, জেলা বিএনপির সহ সভাপতি নাজিম উদ্দিন লস্কর ও সামিয়া বেগম চৌধুরী, মহানগর বিএনপির সহ-সভাপতি ডা. আশরাফ আলী ও রহিম মল্লিক, মহানগর বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক নজিবুর রহমান নজিব, জেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক অ্যাডভোকেট হাসান আহমদ পাটোয়ারী রিপন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মার্কিন দূতাবাসের সামনে সতর্ক অবস্থানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী
  • যুবলীগ সন্ত্রাসীর হামলায় আহত শাহিনকে দেখতে গেলেন বাবু, শাস্তি দাবি
  • দলীয় শৃঙ্খলারক্ষায় কোনো ছাড় দেওয়া হবে না
  • কর্মস্থলে ফিরছেন উত্তরাঞ্চলের মানুষ 
  • মজুচৌধুরীর হাট লঞ্চঘাটে কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ভিড় 
  • নোয়াখালীতে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য থামান