নিজ বাড়ি থেকে ‘বেওয়াচ’ ও ‘নাইট রাইডার’ খ্যাত অভিনেত্রী পামেলা বাকের মরদেহ উদ্ধার কথা হয়েছে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৬২ বছর। নিজের মাথায় গুলি চালিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেছেন বলে প্রথমিকভাবে জানিয়েছে বিবিসি।

নিউ ইয়র্ক পোস্ট-এর রিপোর্ট অনুযায়ী, বুধবার হলিউড হিলসের নিজের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় পামেলার নিথর দেহ। লস অ্যাঞ্জেলসের চিকিৎসক পামেলার মৃত্যু নিশ্চিত করেন।

জানা যায়, পামেলাকে দীর্ঘক্ষণ ডেকেও যখন সাড়া পাওয়া যায়নি। তখন চিন্তিত হয়ে পড়েন পরিবারের সদস্যরা। রাত ১০ টা নাগাদ পামেলার বাড়িতে পৌঁছায় উদ্ধারকারী দল।

পামেলার মৃত্যুতে তার প্রাক্তন স্বামী ডেভিড হ্যাসেলহফ গভীর শোক জানিয়েছেন। তিনি বলেন, পামেলার মৃত্যুতে আমাদের পরিবার গভীরভাবে শোকাহত। এই কঠিন সময়ে সকলের ভালোবাসা এবং সমর্থনের জন্য আমরা কৃতজ্ঞ।

১৯৮৯ সালে হলিউড অভিনেতা ডেভিড হ্যাসেলহফের সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন পামেলা। দীর্ঘদিনের বৈবাহিক সম্পর্কে থাকার পর ২০০৬ সালে আলাদা হয় দু’জনের পথ। দুই কন্যা সন্তানকে নিয়ে একাই থাকতেন এই অভিনেত্রী।

বলা দরকার, পামেলা বাক ১৯৭০ সালে অভিনয় শুরু করেন। তার অভিনয়ের মধ্যে ছিল সোপ অপেরা ‘দ্য ইয়ং অ্যান্ড দ্য রেস্টলেস’, ‘চিয়ার্স’, ‘দ্য ফল গাই’, ‘টি.

জে. হুকার’, ‘সুপারবয়’ এবং ‘ভাইপার’।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে এশিয়ার শেয়ারবাজার

ট্রাম্পের পাল্টা শুল্কে গতকাল রীতিমতো রক্তাক্ত হয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শেয়ারবাজার। এশিয়ার দেশগুলো থেকে শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র—সবখানেই এই রক্তপাত হয়েছে। তবে সেই ধাক্কা কাটিয়ে আজ সকালে এশিয়ার বিভিন্ন দেশের শেয়ারবাজার ঘুরে দাঁড়িয়েছে।

গতকাল ১০ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পতন হয়েছিল ভারতের শেয়ার সূচক সেনসেক্স ও নিফটির। সেই দুই সূচক আজ বেশ ভালোভাবেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে। আজ সকালে সেনসেক্স বেড়েছে ১ হাজার ২০৬ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ; নিফটি বেড়েছে ৩৬৫ পয়েন্ট বা ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গতকাল সেনসেক্সের পতন হয়েছিল ৩ দশমিক ২ শতাংশ এবং নিফটির পতন হয়েছিল ৩ শতাংশ।

এদিকে আজ মঙ্গলবার সকালে এশিয়ার অন্যান্য দেশের শেয়ার সূচকও ঘুরে দাঁড়িয়েছে। সেই সঙ্গে ইউএস স্টক ফিউচার্সের অবস্থানও ঊর্ধ্বমুখী। এক দিন বড় ধরনের দরপতন হলে পরদিন শেয়ারবাজার সাধারণত ঘুরে দাঁড়ায়। সেই সঙ্গে ওয়াশিংটনও শুল্কের বিষয়ে আপস-রফা করতে চায়—এমন ধারণা বাজারে ছড়িয়ে পড়ার কারণে আজ বাজারে কিছুটা ইতিবাচক ধারা দেখা যাচ্ছে বলে রয়টার্সের সংবাদে বলা হয়েছে।

শেয়ারবাজারের পাশাপাশি অন্যান্য বাজারেও ঘুরে দাঁড়ানোর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের ট্রেজারি বন্ডের সুদহার ছয় মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছিল; সেখান থেকে তার উত্থান অব্যাহত আছে। সোনার দামও বেড়েছে আজ। আউন্সপ্রতি সোনার দাম বেড়েছে ২৯ দশমিক ৪৫ ডলার বা শূন্য দশমিক ৯৯ শতাংশ। বন্ধ হয়েছে তেলের দর হ্রাস। আজ ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম ব্যারেলপ্রতি ১ দশমিক ৩৭ শতাংশ বেড়ে ৬৫ দশমিক শূন্য ৯ ডলারে উঠেছে।

বিষয়টি হলো, অনিশ্চয়তার মধ্যে সাধারণত সোনার দাম বাড়ে; কিন্তু এবার দেখা গেল, বাজারের সেই চিরাচরিত নিয়মও ভেঙে পড়েছে। বুধবার ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক ঘোষণার পর সাময়িকভাবে সোনার দাম বাড়লেও তারপর দ্রুতগতিতে কমতে থাকে সোনার দাম। এরপর আজ আবার বাড়ল সোনার দাম।

আজ সকালে এশিয়ার শেয়ার সূচকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে জাপানের নিক্কিই এশিয়া সূচক। ৬ দশমিক ৫ শতাংশ বেড়েছে এই সূচক। জাপান যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতার পথে আছে। যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রির টোকিওর সঙ্গে এই আলোচনায় এই নেতৃত্ব দিচ্ছেন।

অন্যদিকে হংকংয়ের হ্যাং সেং সূচকের উত্থান হয়েছে ১ দশমিক ৭ শতাংশ। চীনের মূল ভূখণ্ডের ব্লি চিপস সূচকের উত্থান হয়েছে শূন্য দশমিক ৬ শতাংশ। দক্ষিণ কোরিয়ার কোসপি সূচক ১ দশমিক ৩ শতাংশ ও অস্ট্রেলিয়ার ইক্যুইটির মানদণ্ড এএক্সজেওর উত্থান হয়েছে ১ শতাংশ। তাইওয়ানের মূল সূচক টিডব্লিউআইআইয়ের গতকাল পতন হয়েছিল ১০ শতাংশ। আজও এই সূচকের পতন হয়েছে ৩ শতাংশ।

ট্রাম্প নির্ভার

বিশ্বের অন্যান্য দেশের শেয়ার সূচকের মতো গতকাল সোমবার সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবসে প্রায় দুই হাজার পয়েন্ট পড়ে যায় মার্কিন বাজারের সূচক। ফলে আতঙ্কিত বিনিয়োগকারীদের মধ্যে শেয়ার বিক্রির হুড়োহুড়ি পড়ে যায়। সেদিন লেনদেন শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজে শুরু হয় চরম অস্থিরতা। প্রথমেই ১ হাজার ৭০০ পয়েন্ট নেমে যায় এই সূচক। কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যে ৮০০ পয়েন্ট লাফিয়ে ওঠে সেটি। এর পর আবার ৪১৪ পয়েন্ট নেমে যায় ওই শেয়ারের লেখচিত্র।

১৯৮৭ সালের ১৯ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রের শেয়ারবাজারের ইতিহাসে ‘কালো সোমবার’ (ব্ল্যাক মানডে) হিসেবে পরিচিত। সেদিন ২২ দশমিক ৬ শতাংশ পড়ে যায় ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যাভারেজ। ৩৮ বছর পর ওয়াল স্ট্রিটে সে রকম রক্তপাত হলো গতকাল।

এত কিছু সত্ত্বেও ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বিকার। পারস্পরিক শুল্ক নীতি থেকে সরে আসতে নারাজ তিনি। তাঁর যুক্তি, ‘বিশ্বের বহু দেশ এত দিন আমেরিকাকে লুট করেছে। পারস্পরিক শুল্কের ওষুধ তাদের ওপর কাজ করছে।’ মার্কিন শেয়ারবাজারের রক্তক্ষরণের দায় এড়িয়ে গেছেন তিনি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ