যুক্তরাষ্ট্রে ১৫ বছরে প্রথম ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর
Published: 8th, March 2025 GMT
যুক্তরাষ্ট্রের সাউথ ক্যারোলাইনা অঙ্গরাজ্যে সাবেক প্রেমিকার বাবা-মাকে বেসবল ব্যাট দিয়ে হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত ব্র্যাড সিগমন (৬৭) নামে এক ব্যক্তির ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছে। দেশটিতে গত ১৫ বছরের মধ্যে প্রথমবার এ ধরনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হলো।
সাউথ ক্যারোলাইনা কারাগারের মুখপাত্র ক্রিস্টি শেইন বলেছেন, অঙ্গরাজ্যের রাজধানী কলম্বিয়ায় ব্রড রিভার কারেকশনাল ইনস্টিটিউশনে তিন সদস্যের ফায়ারিং স্কোয়াড ব্র্যাড সিগমনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করেছে।
শেইন আরও বলেন, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৬টা ৫ মিনিটে তাঁর মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। ৬টা ৮ মিনিটে একজন চিকিৎসক সিগমনকে মৃত ঘোষণা করেন।
বুলেটপ্রুফ কাচের আড়াল থেকে মৃত্যুদণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন, সিগমন একটি কালো জাম্পস্যুট পরেছিলেন এবং তাঁর হৃৎপিণ্ড বরাবর কাগজ বা কাপড় দিয়ে তৈরি একটি নিশানা চিহ্ন ছিল। তাঁকে মৃত্যুদণ্ডের নির্ধারিত চেয়ারে বেঁধে রাখা হয়েছিল।
সিগমনের আইনজীবী জেরাল্ড ‘বো’ কিং চূড়ান্ত বিবৃতি পাঠ করেন। ওই বিবৃতিতে সিগমন বলেছেন, মৃত্যুদণ্ড ঠেকানোর প্রচেষ্টায় যেসব খ্রিষ্টান সহকর্মী সহায়তা করেছেন, তাঁদের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে বার্তা দিতে চান তিনি।
এরপর সিগমনের মাথায় কালো টুপি পরিয়ে দেওয়া হয়। প্রায় দুই মিনিট পর ফায়ারিং স্কোয়াড প্রায় ১৫ ফুট (পাঁচ মিটার) দূর থেকে একটি দেয়ালের ফাটল দিয়ে রাইফেল দিয়ে গুলি করে। সাউথ ক্যারোলাইনা সংশোধন বিভাগের স্বেচ্ছাসেবকেরা ফায়ারিং স্কোয়াডে ছিলেন।
ডব্লিউওয়াইএফএফ নিউজ ফোর টিভি স্টেশনের অ্যানা ডবিন্স বলেন, ‘সব একসঙ্গে এমনভাবে ছোড়া হয়েছিল, মনে হয়েছিল কেবল একটি শব্দ। তাঁর বাহু নমনীয় ছিল। তাঁর শরীরের মধ্যভাগে কিছু একটা নড়ে উঠেছিল। আমি অবশ্যই সেটিকে শ্বাসপ্রশ্বাস বলব না। আমি আসলে জানি না। তবে দুই বা তিন সেকেন্ড ধরে সেখানে কিছু একটা নড়াচড়া করছিল।’
মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের ঘটনাটি খুব দ্রুত সম্পন্ন হয়েছে উল্লেখ করে অ্যানা বলেন, ‘যখন গুলি সিগমনের শরীরে প্রবেশ করে, তখন আমি রক্ত ছড়িয়ে পড়তে দেখি।’
সিগমন ২০০১ সালে ডেভিড এবং গ্ল্যাডিস লার্ককে হত্যার দায় স্বীকার করেছিলেন। বিচারে তিনি দোষ স্বীকার করে সুপ্রিম কোর্টের কাছে শেষ মুহূর্তে মৃত্যুদণ্ড স্থগিত রাখার আবেদন করেছিলেন। কিন্তু তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।
সাউথ ক্যারোলাইনার গভর্নর হেনরি ম্যাকমাস্টারও তাঁর ক্ষমার আবেদন প্রত্যাখ্যান করেছেন।
কীভাবে মৃত্যুদণ্ড নেবেন—তা বেছে নেওয়ার সুযোগ ছিল সিগমনের হাতে। প্রাণঘাতী ইনজেকশন, ফায়ারিং স্কোয়াড কিংবা বৈদ্যুতিক চেয়ারের মধ্যে তিনি ফায়ারিং স্কোয়াড বা গুলি করে মৃত্যুদণ্ড বেছে নেন।
যুক্তরাষ্ট্রে সর্বশেষ ফায়ারিং স্কোয়াডে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল ২০১০ সালে ইউটাতে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স গমন র
এছাড়াও পড়ুন:
কামরাঙ্গীরচরে চা দোকানিকে মারধরের পর হাতবোমার বিস্ফোরণ, পরে গণপিটুনিতে দুজন নিহত
রাজধানীর কামরাঙ্গীরচরে গণপিটুনিতে মো. মাসুদ (২৯) ও নাদিম (৩৫) নামের দুই যুবক নিহত হয়েছেন বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন সোহাগ (৩০) নামের একজন। বুধবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কামরাঙ্গীরচরের সিলেটিয়া বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ জানিয়েছে, গণপিটুনির শিকার ৩ ব্যক্তিসহ ৯–১০ জন কয়েকটি মোটরসাইকেলে করে সিলেটি বাজার এলাকার চা দোকানদার নূর মোহাম্মদকে চাঁদাবাজির মামলা তুলে নিতে হুমকি দিচ্ছিলেন। এতে রাজি না হলে তাঁরা নূর মোহাম্মদকে কুপিয়ে জখম করেন। নূর মোহাম্মদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন লাঠিসোঁটা নিয়ে আসেন। এ সময় ঘটনাস্থলে কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে মোটরসাইকেলে করে হামলাকারীরা পালানোর চেষ্টা করেন। পাঁচ–ছয়জন পালিয়ে যেতে পারলেও তিনজনকে কয়েক হাজার মানুষ ঘিরে ফেলে পিটুনি দেন।
পুলিশের লালবাগ অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জাহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গণপিটুনিতে মাসুদ ঘটনাস্থলে মারা যান। থানা–পুলিশ, সেনাবাহিনী, র্যাব সংবাদ পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে এসে নাদিম ও সোহাগকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় নাদিমের মৃত্যু হয়। সোহাগ গুরুতর অবস্থায় ঢাকা মেডিকেলে চিকিৎসাধীন।