কুমেক হাসপাতালের ৫ তলা থেকে পড়ে রোগীর মৃত্যু
Published: 8th, March 2025 GMT
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (কুমেক) সার্জারি বিভাগের পঞ্চম তলার বারান্দার বেড থেকে নিচে পড়ে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। ওই রোগীর নাম গনি মিয়া (৫০)। তিনি জেলার আদর্শ সদর উপজেলার দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা।
শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে ১২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
গনি মিয়ার স্ত্রী কোহিনুর বেগম জানান, হাতের সমস্যায় এক সপ্তাহ আগে স্বামী নিয়ে হাসপাতালে আসি। অপারেশন করার পর অনেক চেষ্টা করার পরও বেড না পেয়ে সার্জারি বিভাগের কর্মচারি (জমাদার) বিল্লাল হোসেনকে ৫০০ টাকার দিলে বারান্দায় দেয়ালের পাশে সিট দেওয়া হয়। যেখানে কোনো সুরক্ষা ব্যবস্থা ছিল না। রাতে পাশে হেলান দিতে গিয়ে নিচে পড়ে তিনি (স্বামী) মারা যান। নিচতলায় থাকা হাসপাতালের কর্মচারিরা বলেন, রাতে হঠাৎ তারা একটি বিকট শব্দ শোনার পর সেখানে ওই ব্যক্তিকে রক্তাক্ত অবস্থায় যায়। জরুরি বিভাগে নেওয়ার পর চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এদিকে এ ঘটনার পর হাসপাতালের লোকজন রোগীর বেডটি সরিয়ে নেন। বিল্লাল হোসেনও সটকে পড়েন।
কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিনুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনা শুনেছি, তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি।
হাসপাতালের উপ-পরিচালক পরিচালক ডা.
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
মসজিদের হিসাব নিয়ে বিরোধ: মাগুরায় হামলায় আহত যুবদল নেতার মৃত্যু
মাগুরায় প্রতিপক্ষের হামলায় আহত জেলা যুবদলের সদস্য মিরান হোসেন (৪৫) চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। গতকাল শনিবার রাত আটটার দিকে ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
গত ৩০ মার্চ রাতে মাগুরার শ্রীপুর উপজেলার নাকোল বাজারে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত হন মৃত সুলতান মুন্সির ছেলে মিরান হোসেন। তিনি মাগুরা জেলা যুবদলের সদস্য ছিলেন।
নিহত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে নাকোল মধ্যপাড়া জামে মসজিদের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন একই গ্রামের বাসিন্দা গ্রাম্য মাতবর জামিরুল ইসলাম ওরফে ধলা। নিহত ব্যক্তির স্বজনদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে দায়িত্ব পালন করে এলেও জামিরুল মসজিদের আয়–ব্যয়ের হিসাব ঠিকমতো প্রকাশ করতেন না। বিষয়টি নিয়ে যুবদল নেতা মিরান হোসেন প্রতিবাদ জানালে তাঁদের মধ্যে বিরোধ তৈরি হয়। ঈদের পরদিন মসজিদের হিসাব নিয়ে বসার কথা ছিল দুই পক্ষের। এমন পরিস্থিতিতে ঈদের আগের রাতে নাকোল বাজার চৌরাস্তায় জামিরুল ইসলামের লোকজনের সঙ্গে যুবদল নেতা মিরান হোসেনের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে চেলা কাঠ দিয়ে মিরান হোসেনের মাথায় আঘাত করেন জামিরুল ইসলামের লোকজন। এতে গুরুতর আহত হন মিরান। ওই রাতে প্রথমে তাঁকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় রাতেই তাঁকে ঢাকায় নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল রাতে মারা যান তিনি।
আজ রোববার সকালে শ্রীপুরের নাকোল মধ্যপাড়া মিরান হোসেনের বাড়ি গিয়ে দেখা যায় মরদেহ তখনো বাড়িতে এসে পৌঁছায়নি। পরিবারের পক্ষ থেকে জানান হয়, ময়নাতদন্ত শেষে আজ মরদেহ গ্রামের বাড়িতে আনা হবে।
মিরান হোসেনের চাচাতো ভাই শাহাবুদ্দিন আহম্মেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘শুধু অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করায় মিরানকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হলো। সেদিন চাঁদ রাতে বাজারে সবার সামনে জামিরুল ইসলাম, তাঁর দুই ছেলে ইমন, ইকবাল, ভাতিজা রবিউল ইসলাম, মুন্না, জিন্নাসহ ১০ থেকে ১৫ জন মিলে হামলা চালান। সবার সামনে এ ঘটনা ঘটেছে। আমরা এই ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
পরিবারের সদস্যরা জানান, যুবদল নেতা মিরান হোসেনের দুই মেয়ে। তিনি ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী। তাঁর বড় ভাই শারীরিক-মানসিকভাবে অসুস্থ, মেজ ভাই কয়েক বছর আগে বিদ্যুতায়িত হয়ে মারা গেছেন। ফলে পুরো পরিবার ওই একজনের ওপর নির্ভরশীল ছিল।
এদিকে যুবদলের ওই নেতার মৃত্যুর খবরে গতকাল রাতে শহরে বিক্ষোভ মিছিল করে যুবদল, ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা। রাত ১০টার দিকে নাকোলে অভিযুক্ত জামিরুল ইসলামের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এতে তাঁর বাড়ির কয়েকটি ঘর পুড়ে যায়। পরে ফায়ার সার্ভিস এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে জামিরুল ইসলামের বাড়িতে গেলে কাউকে পাওয়া যায়নি। জামিরুল ইসলামের মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।
মাগুরার শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইদ্রিস আলী প্রথম আলোকে বলেন, এ ঘটনায় এখনো মামলা হয়নি, কেউ গ্রেপ্তারও হননি। তবে নিহত ব্যক্তির স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে, তাঁরা দ্রুতই মামলা করবেন। ওই নেতার মৃত্যুর খবরে রাতে বিক্ষুব্ধ লোকজন অভিযুক্ত ব্যক্তির বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সহযোগিতায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়।