নির্ধারিত সূচির বাইরে বাংলাদেশে খেলতে আসবে পাকিস্তান
Published: 8th, March 2025 GMT
আসছে মে’তে পাকিস্তান সফর করবে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। এই সফরে ৩টি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচের সিরিজ খেলবে লাল সবুজের দল। নির্ধারিত এই সিরিজের বাইরেও বাংলাদেশ সফর করবে পাকিস্তান।
ইতিমধ্যে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) ব্যাপরটি জানিয়েছে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড ((পিসিব)। এখনো আলোচনা চলছে দুই দেশের বোর্ডের মধ্যে। সংবাদমাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদ।
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির সেমি ফাইনাল দেখতে পিসিবির আমন্ত্রণে দুবাই হয়ের পাকিস্তান গিয়েছিলেন ফারুক। সেখান থেকে ফিরে এসে আজ শনিবার (৮ মার্চ) তৃতীয় বিভাগ ক্রিকেট লিগ কোয়ালিফায়িং টুর্নামেন্টের উদ্বোধন করেন মিরপুর শের-ই-বাংলায়। এরপর গণমাধ্মের মুখোমুখি হয়ে নানা বিষয়ে কথা বলেন বিসিবি প্রেসিডেন্ট।
আরো পড়ুন:
বাংলাদেশের আফগানিস্তানের দিকে তাকানো উচিত: নাসের হুসেইন
নিয়ম রক্ষার ম্যাচে বাংলাদেশ যেখানে এগিয়ে!
পাকিস্তানের আগমন নিয়ে ফারুক বলেন, “পাকিস্তান আমাদের বলেছিল, এফটিপির বাইরে একটা সফরে তারা আমাদের দেশে আসবে। অত্যন্ত ব্যস্ত সূচির মধ্যে ছোট্ট একটা সফর হতে পারে জুলাইয়ের দিকে। এটা আমরা মোটামুটি ঠিক করেছি। চূড়ান্ত করা হলে আপনারা জেনে যাবেন।”
জুনে শ্রীলঙ্কা সফর করবে বাংলাদেশ। এই সফরে টেস্ট, ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে নাজমুল হোসেন শান্তর দল। এই সফর শেষে ঘরের মাঠে হতে পারে বাংলাদেশ-পাকিস্তান সিরিজ।
পিসিবি ছাড়াও বিসিসিআই ও শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট বোর্ডের সঙ্গে ফারুকের বৈঠক হয় এবার, “আনুষ্ঠানিক বা অনানুষ্ঠানিক যে মিটিংগুলো করেছি, সেগুলো শেষ হয়ে গেছে। পাকিস্তান বোর্ড, ভারতীয় বোর্ড এমনকি শ্রীলঙ্কান বোর্ডের সঙ্গেও কথা বলেছি। সবার সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নটা জরুরি। সম্পর্ক ভালো হলে যে কোনো জিনিস পাওয়া সহজ হয়। যে কোনো পর্যায়েই এটা আমি বিশ্বাস করি। এটা আমরা চেষ্টা করেছি।”
এ ছাড়াও ত্রিদেশীয় সিরিজ আয়োজন নিয়েও ফারুক দিয়েছেন সুখবর, “ত্রিদেশীয় সিরিজটার ব্যাপারে আমরা আলোচনা করেছি, ভবিষ্যতে আমাদের যখন ফাঁকা সময় থাকবে, যদি কোনো সুযোগ থাকে, তাহলে যে দেশেই হোক, আমরা অংশগ্রহণ করতে পারি। অংশগ্রহণকারী দল হিসেবে থাকবে বাংলাদেশ। এটা আমরা আলাপ করেছি।”
ঢাকা/রিয়াদ/নাভিদ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
মশিউর সিকিউরিটিজের অর্থ আত্মসাৎ, শাস্তির দাবি বিনিয়োগকারীদের
মশিউর সিকিউরিটিজ লিমিটেডের প্রতারণার ফাঁদে পড়ে পুঁজি হারিয়েছেন বিনিয়োগকারী ফারহানা জাফরিন। তিনি মশিউর সিকিউরিটিজের মাধ্যমে শেয়ার কেনাবেচার জন্য এক কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছিলেন। সেই বিনিয়োগের একটি টাকাও ফেরত পাননি জাফরিন। তার মতো অনেক বিনিয়োগকারী মশিউর সিকিউরিটিজের প্রতারণার শিকার হয়ে কোটি টাকা হারিয়েছেন।
নিঃস্ব বিনিয়োগকারীরা তাদের বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরতে চেয়ে প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। পাশাপাশি প্রতারক প্রতিষ্ঠানসহ ডিএসই ও বিএসইসির দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১০ এপ্রিল) রাজধানীর বিজয়নগরে ক্যাপিটাল মার্কেট জার্নালিস্ট ফোরামের (সিএমজেএফ) কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীরা এসব অভিযোগ করেন।
আরো পড়ুন:
আইন লঙ্ঘন করা দুই ব্রোকারেজ হাউজকে জরিমানা
পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের বিশেষ তহবিলের মেয়াদ বাড়াল বাংলাদেশ ব্যাংক
সংবাদ সম্মেলন লিখিত বক্তব্যে বিনিয়োগকারীরা বলেন, ‘আমরা ক্ষতিগ্রস্ত বিনিয়োগকারীরা এখানে সমবেত হয়েছি মশিউর চিকিউরিটিজ (ডিএসই মেম্বার ১৩৪) এর দুর্নীতির বিষয়ে আপনাদের অবহিত করতে। প্রতিষ্ঠানটি যেভাবে গ্রাহকে ধোকা দিয়েছে তা আমরা এখন পেশ করব। মশিউর সিকিউরিটিজের অর্থ আত্মসাৎ এর উদ্দেশ্যে ক্লায়েন্টের শেয়ার বিক্রি করে এবং অনুমোদনহীন ব্যাক অফিস সফটওয়্যার ব্যবহার করে ক্লায়েন্টের মেইলে জাল পোর্টফলিও পাঠায়, যা মূল পোর্টফোলিওর অনুরূপ। যাতে করে গ্রাহক বুঝতে না পারে তার পোর্টফোলিওতে থাকা শেয়ার বিক্রি হয়েছে। পরবর্তীতে তারা টাকা আত্মসাৎ করে। আমরা জানি শেয়ার বিক্রি কিংবা ক্রয় করলে সিডিবিএল হতে কনফার্মেশন মেসেজ আসে। এক্ষেত্রে গ্রাহকের মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করে নিজেদের মোবাইল নম্বর চালিয়ে দেয় মশিউর সিকিউরিটিজ। এভাবে প্রতিষ্ঠানটি জালিয়াতির আশ্রয় নেয়।’
এছাড়া রেকর্ড ডেটের আগে বেশি দামে যে পরিমাণ শেয়ার বিক্রি করে রেকর্ড ডেটের পর সেই পরিমাণ শেয়ার কিনে রেখে দিত। যাতে বিনিয়োগকারী বুঝতে না পারে। ফলে বিনিয়োগকারী লভ্যাংশ পেত না এবং বিক্রি ও ক্রয়ের মূল্য পার্থকের টাকা হিসাব থেকে সরিয়ে নিত। নিরব দীর্ঘমেয়াদী প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের সাথে তারা এ ধরনের প্রতারণার কাজ করেছে। অনেক ক্ষেত্রে গ্রাহকের পোর্টফোলিয়তে রক্ষিত নগদ টাকা গ্রাহককে ফেরত না দিয়ে নিজেরা আত্মসাৎ করেছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিনিয়োগকারীরা আরো বলেন, ‘মানুষের সারা জীবনের সঞ্চয় মশিউর সিকিউরিটি নিয়ন্ত্রণ সংস্থার নাকের ডগা দিয়ে নিয়ে যাবে যা দুঃখজনক এবং স্পর্শকাতর। নিয়ন্ত্রণ সংস্থা বিনিয়োগকারীদের অর্থের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। নিয়ন্ত্রণ সংস্থার দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের সহায়তায় মশিউর সিকিউরিটিজ এ ধরনের কাজ করেছে। দীর্ঘদিন গ্রাহকের অর্থ ও শেয়ারের প্রকৃত তথ্য প্রতিষ্ঠানটি আড়াল করার মাধ্যমে ১৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ করে।’
‘আমরা সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, অর্থ উপদেষ্টাসহ সংশ্লিষ্ট সবার মনযোগ আকর্ষণ করছি। এ ধরনের প্রতিষ্ঠিত প্রতারকের হাত থেকে আমাদের অর্থ উদ্ধারে সহযোগিতা চাই এবং প্রতারকের দৃষ্টান্তমূলক শান্তি চাই।’
‘বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ সংস্থাকে জানানো হলে তারা তদন্তের নামে কালক্ষেপণ করেছে। এখন পর্যন্ত দৃশ্যমান কোনো অগ্রগতি হয়নি। ইতোমধ্যে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) এবং বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) এ বিষয়টি লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।’
বিনিয়োগকারী ফারহানা জাফরিন বলেন, “আমি চাকরি জীবনের সব জমানো পুঁজি মশিউর সিকিউরিটিজে রেখে আজ নিঃস্ব। আমি একটি টাকাও ফেরত পাইনি।”
আবু মাসুদ নামে একজন বিনিয়োগকারী বলেন, “আমি ৩৬ লাখ টাকা বিনিয়োগ করেছি। আমাদের পোর্টফলিও এক রকম দেখাতো, আর তাদের অন্য সার্ভারে আরেক রকম পোর্টফলিও হিসাব রাখতো। যার কারণে আমরা সঠিক তথ্য পেতাম না। তারা আমাদের নম্বরের জায়গায় তাদের নিজেদের নম্বর দিয়ে সিডিবিএলে তথ্য পাঠিয়েছেন। যার কারণে আমরা সিডিবিএল থেকে কোনো তথ্য পেতাম না।”
শাহজাহান আলী বলেন, “মশিউর সিকিউরিটিজ আমাকে ৪০ লাখ ১৫ হাজার ৯০০ টাকার চেক দিয়েছে। কিন্তু টাকা তুলতে গিয়ে দেখি চেক ডিজ ওনার হয়। যার ফলে আমরা আর টাকা পাইনি। মশিউর সিকিউরিটিজের প্রতারণার জন্য আমরা নিয়ন্ত্রক সংস্থার হস্তক্ষেপ কামনা করছি।”
এদিকে এ বিষয়ে মশিউর সিকিউরিটিজ লিমিটেড কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ঢাকা/এনটি/এসবি