সংখ্যালঘু মুসলিমদের উন্নয়নে কল্পতরু ভারতের কর্ণাটক রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দাদারামাইয়া এবারের বাজেটে সংখ্যালঘু মুসলিমদের উন্নয়ন খাতে ১ হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ করেছেন। এর মধ্যে ১৫০ কোটি রুপি ওয়াকফ সম্পত্তি সংরক্ষণে বরাদ্দ দেয়া হয়েছে।

বাজেটে এমন ঘটনার পর সংখ্যালঘু তোষণের অভিযোগ তুলে রীতিমতো ফুঁসে উঠেছে বিরোধী দল বিজেপি। কংগ্রেস সরকারের বাজেটকে হালাল বাজেট বলেও কটাক্ষ করেছে বিজেপি।

শুক্রবার (৭ মার্চ) ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেট পেশ করেছে কংগ্রেস শাসিত ভারতের কর্ণাটক রাজ্য সরকার। রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দাদারামাইয়া প্রায় ৪ লাখ ৯ হাজার ৫৪৯ কোটি রুপির বাজেট পেশ করেন। ওই বাজেটে সংখ্যালঘু মুসলিম সম্প্রদায়ের উন্নয়নের জন্য একাধিক উন্নয়ন প্রকল্পের ঘোষণা দিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী। 

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে করিডোর চায় মেঘালয়

হিন্দুদের রক্ষা করা বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের দায়িত্ব: ভারত

সংখ্যালঘু উন্নয়নের জন্য ১ হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে। বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে ওয়াকফ সম্পত্তি এবং মুসলিম কবরস্থানের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ১৫০ কোটি রুপি। যে ওয়াকফ আইন বদলে ফেলতে উদ্যত হয়েছেন ভারতের নরেদ্র মোদি সরকার, সেই ওয়াকফ বোর্ডকেই বাড়তি অর্থ বরাদ্দ দিয়েছেন কংগ্রেসি মুখ্যমন্ত্রী।

এছাড়াও উর্দু স্কুলের জন্য ১০০ কোটি রুপি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাশাপাশি প্রতিটি জেলায় মুসলিমদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য মাল্টিপারপাস হল নির্মাণে ৫০ লাখ রুপি বরাদ্দ করা হয়েছে। বিদেশে অধ্যয়নরত সংখ্যালঘু শিক্ষার্থীদের জন্য রাষ্ট্রীয় সহায়তা ২০ লাখ রুপি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩০ লাখ রুপি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। 

এছাড়াও রাজ্যের সব রেজিস্টার্ড ইমামদের জন্য মাসিক ৬ হাজার রুপি করে ভাতাও ঘোষণা করা হয়েছে কর্ণাটকের বাজেটে। মুয়াজ্জিনদের ভাতা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৫ হাজার রুপি।

সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণভাবে বাজেটে ক্যাটাগরি-২বি এর অধীনে সরকারি টেন্ডার এবং চুক্তিতে মুসলিমদের জন্য ৪ শতাংশ সংরক্ষণের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে- যার লক্ষ্য অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি প্রচার করা এবং সংখ্যালঘুদের জন্য ন্যায্য ব্যবসায়িক সুযোগ নিশ্চিত করা। বিধানসভা ভোটের আগে এই সংরক্ষণ বাতিল করেছিল তৎকালীন বিজেপি সরকার। সেটাই ফের চালু করলেন সিদ্দাদারামাইয়া।

সংখ্যালঘু মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় নতুন শিল্প প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (আইটিআই) স্থাপন করার ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে এই বাজেটে। 

কর্ণাটক এক্সামিনেশন অথরিটির (কেইএ) অধীনে মুসলিম ছাত্রীদের জন্য ৫০ শতাংশ ফি ছাড়, উল্লাল শহরে মুসলিম ছাত্রীদের জন্য একটি আবাসিক প্রি-ইউনিভার্সিটি (পিইউ) কলেজ স্থাপন, বেঙ্গালুরুর হজ ভবনের সম্প্রসারণ, মুসলিম ছাত্রীদের জন্য আত্মরক্ষা প্রশিক্ষণ, মুসলিমদের বিবাহের জন্য ৫০ হাজার রুপি আর্থিক সহায়তাসহ একগুচ্ছ ঘোষণাও দেওয়া হয়েছে বাজেটে।  

যদিও কংগ্রেস সরকারের এই বাজেট ঘিরে রাজনৈতিক বিতর্কের জন্ম নিয়েছে। কর্ণাটকের বিরোধী দল বিজেপি এই পদক্ষেপের তীব্র বিরোধিতা করে এটিকে ‘হালাল বাজেট’ এবং ‘প্রকাশ্য তোষণ’ বলে অভিহিত করেছে। 

বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র প্রদীপ ভান্ডারী এই বাজেটকে ‘আধুনিক মুসলিম লীগ বাজেট’ বলে কটাক্ষ করেছেন। পাশাপাশি কংগ্রেস-নেতৃত্বাধীন কর্ণাটক সরকারের নীতিগুলোকে পাকিস্তানে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহর প্রশাসনের সঙ্গে তুলনা করেছেন।

তবে বিজেপির এই অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়ে কর্ণাটকের ক্যাবিনেট মন্ত্রী জামির আহমেদ খান বলেন, “৪ লাখ ৯ হাজার কোটি রুপির বাজেট পেশ করা হয়েছে। রাজ্যে মোট জনসংখ্যার ১৪ শতাংশ হলো মুসলিম। কিন্তু সেখানে মাত্র ১ হাজার ৭০০ কোটি রুপি মুসলমানদের উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে। জনসংখ্যা অনুযায়ী, ১৪ শতাংশের জন্য ৬০ হাজার কোটি রুপি বরাদ্দ করার কথা ছিল। তাহলে কী করে এটা সংখ্যালঘুদের বাজেট হয়? বিজেপির কিছু সাধারণ জ্ঞান থাকা উচিত।”

ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ম খ যমন ত র ন র জন য দ র জন য সরক র র

এছাড়াও পড়ুন:

ফতুল্লা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে ফিলিস্তিনের পক্ষে বিক্ষোভ সমাবেশ

ফিলিস্তিনে মুসলিম নিধনের প্রতিবাদে ফতুল্লা প্রেসক্লাবের উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার বিকালে ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়। 

ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সভাপতি আবদুর রহিম এর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমীন শিকদার, ফতুল্লা থানা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহবায়ক জাকির হোসেন রবিন, ফতুল্লা থানা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত আহবায়ক আঃ খালেক টিপু, দাপা তুফানী প্রধান জামে মসজিদের সাবেক খতীব মুফতী ওসমান গণি।

এসময় উপস্থিত ছিলেন ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি সেলিম মুন্সী, পিয়ার চাঁন, ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাবের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম সুজন, ফতুল্লা ব্লাড ডোনার্সের সভাপতি আশরাফুল ইসলাম তৌকির, সাধারণ সম্পাদক এসএম সানিসহ ফতুল্লা প্রেসক্লাব, ফতুল্লা রিপোর্টার্স ক্লাব, ফতুল্লা রিপোর্টার্স ইউনিটি, ফতুল্লা থানা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল সহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

এসময় একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে ফতুল্লার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পূণরায় ফতুল্লা প্রেসক্লাবের সামনে এসে শেষ হয়।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ