অভিনয়ে আর আগের মতো পাওয়া যায় না নন্দিত অভিনেত্রী অপি করিমকে। উপস্থাপনায়ও অনিয়মিত। কোনো উৎসব আয়োজনেই শুধু পর্দায় দেখা মেলে তাঁর। নারীর কৃতিত্বকে স্মরণ ও সম্মান জানাতে প্রতিবছর ৮ মার্চ বিশ্বজুড়ে উদযাপিত হয় আন্তর্জাতিক নারী দিবস। লিঙ্গবৈষম্য সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এ দিনটি বিশেষ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ এই দিবস উপলক্ষে ওয়েব কনটেন্টে ‘নারীদের নিয়ে কিছু না বলা সত্য কথা’ বলবেন অপি করিম। সম্প্রতি নির্মিত হয়েছে এ সচেতনতামূলক ওয়েব কনটেন্ট। যার কেন্দ্রীয় ভূমিকায় রয়েছেন এ অভিনেত্রী। রাসেল মাহমুদের স্ক্রিপ্টে এটি নির্মাণ করেছেন সজল আহমেদ।
অপি করিম বলেন, ‘নারী দিবস উপলক্ষে কিছু সত্য কথা বলতেই ওটিটি কনটেন্টটিতে হাজির হব। আশা করছি, নারীদের সচেতনতা বাড়াতে এটি সাহায্য করবে।’
সজল আহমেদ বলেন, ‘এ কনটেন্টের মাধ্যমে নারীদের চলমান কিছু বাস্তব প্রেক্ষাপট, তাদের কিছু সত্য কথা দেশবাসীর কাছে তুলে ধরতে চাই। পাশাপাশি একটি সামাজিক বার্তা দিতে দেওয়া হয়েছে। এ রকম সচেতনতামূলক একটা কনটেন্টের জন্য একজন সফল নারীই প্রয়োজন ছিল, কারণ একজন সফল নারীর কাছ থেকে মেসেজটা গেলে সাধারণ মানুষ সেটা সহজেই গ্রহণ করবেন। এর জন্য অপি করিম আপুকেই আমার কাছে সবচেয়ে সফল নারী বলে মনে হয়েছে। যার কারণে আমি তাঁকেই নিয়েছি।’
জানা গেছে, আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে আজ থেকে কনটেন্টটি অনলাইনে উন্মুক্ত হবে।
বড় পর্দায় অপি করিম সর্বশেষ অভিনয় করেন ‘মায়ার জঞ্জাল’ সিনেমায়। কথাসাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুটি ছোটগল্প অবলম্বনে নির্মিত এ সিনেমা পরিচালনা করেছেন ভারতীয় নির্মাতা ইন্দ্রনীল রায় চৌধুরী ও প্রযোজনা করেছেন বাংলাদেশি নির্মাতা জসীম আহমেদ। ছবিটি অনেকগুলো আন্তর্জাতিক পুরস্কার পেয়েছে। সিনেমায় তাঁর বিপরীতে অভিনয় করেছেন কলকাতার ঋত্বিক চক্রবর্তী।
উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
আর্নে স্লট: কিংবদন্তির জায়গা নিলেন এবং নিজেই কিংবদন্তি হয়ে গেলেন
ফ্ল্যাশব্যাকে এক বছর আগের এই সময়ে ফিরে যাওয়া যাক। লিভারপুল শহরের লাল অংশ তখন মেঘাচ্ছন্ন। প্রায় কারও মনই ভালো নেই। পুরো শহরে তখন ছড়িয়ে পড়েছে বিদায়রাগিণী। লিভারপুলের পুনরুত্থানের নায়ক ইয়ুর্গেন ক্লপ ক্লাব ছাড়বেন। এমন কাউকে তো আর যেনতেনভাবে বিদায় দেওয়া যায় না! ক্লপের বিদায় রাঙানোর প্রস্তুতিতে নিজেদের ব্যস্ত করে রাখেন লিভারপুলবাসী। এই ব্যস্ততার মধ্য দিয়ে ক্লপকে হারানোর যন্ত্রণাটাকেও হয়তো কবর দিতে চান তাঁরা।
বিদায়ের এই ক্ষণ যতই ঘনিয়ে আসছিল, পুরো লিভারপুল শহর তখন ক্লপময় হয়ে উঠছিল। বিলবোর্ড, রাস্তার দেয়াল কিংবা কফি শপ—সব জায়গা ছেয়ে গেছে ক্লপের পোস্টারে। বিদায় আয়োজন যখন তুঙ্গে, তখনই আর্নে স্লটের কোচ হওয়ার বিষয়টি সামনে আসে।
খুব পরিচিত কোনো নাম নয়। নেদারল্যান্ডসের ক্লাব ফেইনুর্দের কোচ হিসেবে সাফল্য পেয়েছেন বটে, তবে লিভারপুলের মতো ক্লাবে কতটা কী করতে পারবেন, তা অনিশ্চিত। লিভারপুল সমর্থকরা অবশ্য তাঁর আসার পথে ফিরেও তাকালেন না। স্লট কে, কেমন তাঁর কোচিং–দর্শন, ক্লপের সঙ্গে তাঁর কী পার্থক্য, সেসব নিয়ে ভাবলেনও না কেউ।
কেউ কেউ অবশ্য আলটপকা মন্তব্যও করে বসলেন, ‘এক মৌসুমও টিকবে না’, ‘পরের মৌসুমে ৮–১০ নম্বরে থেকে শেষ করবে লিভারপুল, আর ছাঁটাই হবে স্লট’। এ রকম বহু মন্তব্য সে সময় খোদ লিভারপুল সমর্থকেরাও করেছিলেন। পরিস্থিতি এমন ছিল, স্লট তখন লিভারপুলে সবচেয়ে অগুরুত্বপূর্ণ একজন, যাঁকে নিয়ে কেউ ভাবছে না। ক্লপের পরিবর্তে কাউকে না কাউকে তো আসতেই হতো। ফলে কে আসছেন, তা নিয়ে অত মাথা ঘামানোর দরকার কী, কেউ একজন এলেই হলো!
আরও পড়ুনলিভারপুলের পথে থাকা আর্নে স্লটের ‘আবেদনময়ী’ ফুটবল–দর্শন কেমন ২৭ এপ্রিল ২০২৪টাক মাথার আপাতনিরীহ-দর্শন মানুষটির এই অনাদর মেনে নিতে পারেননি ক্লপ নিজেই। নিজের বিদায়বেলায় ক্লপকেই ‘স্লট, স্লট’ বলে স্লোগান ধরতে হয়েছিল। ক্লপ যেন সবাইকে মনে করিয়ে দিলেন, তিনিই ক্লাবের শেষ কোচ নন। দায়িত্ব নিতে অন্য একজন এরই মধ্যে চলে এসেছেন। ক্লপের সেই স্লোগান অবশ্য অ্যানফিল্ডের গ্যালারিতে কোনো ঢেউ তুলতে পারেনি। পারার অবশ্য কথাও নয়।
এমন নীরস ও হতশ্রী দশার ভেতর বাক্স–পেটরা নিয়ে অনেকটা আগন্তুকের মতো অ্যানফিল্ডের দায়িত্ব সামলাতে আসেন স্লট। নিজের প্রথম মৌসুমে দল গড়তে কোনো রসদও পাননি এই ডাচ কোচ। উইঙ্গার ফেদেরিকো কিয়েসাকেই কেবল দলে ভেড়াতে পেরেছেন। চোটপ্রবণ কিয়েসা সব মিলিয়ে খেলেছেন ১২ মাচ। মূলত ক্লপের রেখে যাওয়া দলকে নিয়েই পথচলা শুরু করেছিলেন স্লট।
এত প্রতিকূল পরিবেশে সত্ত্বেও নিজের লক্ষ্যের প্রতি অবিচল থেকেই ধীরপায়ে এসে ‘অল রেড’ ডাগআউটে দাঁড়ান স্লট। তারপর জাদুকরের মতো চোখ ইশারাতেই লিভারপুলকে জিতিয়েছেন একের পর এক ম্যাচ। একপর্যায়ে লিভারপুলের ট্রেবল জয়ের সম্ভাবনাও উজ্জ্বল করে তুলেছিলেন স্লট। মাঝের বাজে সময় অবশ্য দলটিকে চ্যাম্পিয়নস লিগ ও এফএ কাপ থেকে ছিটকে দিয়েছে। কিন্তু তত দিনে লিগ জয় অনেকটাই নিশ্চিত হয়ে গেছে।
স্লট নিয়েছিলেন ইয়ুর্গেন ক্লপের জায়গা