সৌদি প্রো লিগের ম্যাচে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো শুক্রবার (৭ মার্চ, ২০২৫) দিবাগত রাতে আল শাবাবের বিপক্ষে গোল করলেন, যেটি তার ক্যারিয়ারের ৯২৬ তম গোল। এই পর্তুগিজ তারকা যখন বয়স ৩০ অতিক্রম করেন, তখন তার গোল সংখ্যা ছিল ৪৬৩টি। অর্থাৎ যে বয়সে মানুষ সর্বোচ্চ এক দেড়শ গোল পায় (৩০ এর পর), সেই বয়সে রোনালদো গোল করেছেন যৌবনকালের সমান ৪৬৩টি।

রোনালদো শাবাবের বিপক্ষে যখন গোল করেন তখন বাংলাদেশ সময় রাত ১২টা অতিক্রম করে ফেলেছে। অর্থাৎ ৮ মার্চ, বিশ্ব নারী দিবস। আর এ দিনে বাঙালিদের সবচেয়ে বেশি যে লাইনটা চোখের সামনে আসে তা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের- বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর/অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। এই পঙক্তিটাই রোনালদোর ৯২৬ নাম্বার গোলের পর একটু বদলে বলা যায়- অর্ধেক তার ৩০ এর আগে অর্ধেক তার পর।

আরো পড়ুন:

বাংলাদেশের বিপক্ষের ম্যাচকে সামনে রেখে অবসর ভেঙে ফিরলেন ছেত্রী

এক লাল কার্ডে ৯ মাস নিষিদ্ধ কোচ

শুক্রবার (৭ মার্চ) রাতে আল শাবাবের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করেছে ১০ জনের আল নাসর। ওই ম্যাচে আল নাসরের হয়ে একটি গোল করেন রোনালদো।

ঘরের মাঠ আল আওয়াল পার্কে রোনালদো অবশয গোল করেও জিতাতে পারেননি দলকে। আল শাবাবের বিপক্ষে ২-২ গোলে ড্র করেছে ১০ জনের আল নাসর। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ের ২ ও ১১ মিনিটে নাসরের হয়ে গোল দুটি করেন আয়মান ইয়াহিয়া ও রোনালদো। তবে বিরতির পর খেলা শুরু হলে ৭ মিনিটের মাথায় সরাসরি লাল কার্ড দেখেন নাসরের ডিফেন্ডার আল ফাতিহ। প্রতিপক্ষের এক জন কমে যাওয়ার সুযোগ ২টি গোল করে ম্যাচ ড্র করে শাবাব।

ফলে সৌদি প্রো লিগে বাজে সময় শেষ হলো না আল নাসরের। ২৪ ম্যাচে ৪৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার চারে আছে দলটি। শীর্ষে থাকা আল-ইত্তিহাদের সঙ্গে পয়েন্ট ব্যবধান ১০। ফলে এ মৌসুমেও শিরোপার আশা একপ্রকার শেষ রোনালদোদের।

তবে দল ছন্দে না থাকলেও রোনালদো ঠিক ছন্দে আছেন। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে আল নাসরের হয়ে ৩১ ম্যাচ খেলে ২৬ গোল করার পাশাপাশি ৪ অ্যাসিস্ট করেছেন পর্তুগিজ মহাতারকা। ৫ বারের ব্যালন ডি-অর জয়ী তারকা ২০২৩ সালেসৌদি ক্লাবটিতে যোগ দেওয়ার পর এখন পর্যন্ত করেছেন ৯০ গোল।

ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত পাঁচটি ক্লাবের হয়ে খেলেছেন রোনালদো। যার মাঝে তিনটিতেই তার গোল সংখ্যা তিন অঙ্ক ছুঁয়েছে। রিয়াল মাদ্রিদে করেছেন ৪৫০ গোল, ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে দুই ধাপে আছে ১৪৫টি আর জুভেন্টাসে গোল সংক্যা ১০১টি। আল নাসরে একশ হতে দেরি নেই। কেবল তিন অংক ছুঁতে পারেননি শৈশবের ক্লাব স্পোর্টিং লিসবনে।

ঢাকা/নাভিদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল কর ছ ন গ ল কর

এছাড়াও পড়ুন:

যুক্তরাষ্ট্রের আরও ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রে সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে আরও ১০০ পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ। সরকারে এমন উদ্যোগের কথা জানিয়ে আজ সোমবার সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (ইউএসটিআর) কাছে চিঠি লিখেছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। 

এর আগে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের আরোপ করা বাড়তি ৩৭ শতাংশ তিন মাসের জন্য স্থগিত চেয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্র সরকার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর যে অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা প্রত্যাহার করে। এরপর থেকে বাংলাদেশের সকল রপ্তানি পণ্যের ওপর ১৫ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপ করা হয়। অথচ বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর গড়ে ৬ দশমিক ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছে। উল্লেখ্য, কাঁচা তুলা ও লোহার স্ক্র্যাপের ক্ষেত্রে আমাদের শুল্ক হার যথাক্রমে শূন্য ও এক শতাংশ।

চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বড় তুলা আমদানিকারক দেশ, যা দিয়ে তৈরি পোশাক শিল্প চালিত হয়। অথচ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের পণ্যগুলোর ওপর বেশি শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের শুল্ক তালিকায় ১৯০টি পণ্যের ওপর শুল্ক হার শূন্য এবং আরও ১০০টি পণ্যকে শুল্কমুক্ত তালিকায় যুক্ত করার চিন্তাভাবনা চলছে।

এতের আরও বলা হয়, ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতা ফোরাম চুক্তি (টিকফা) অনুযায়ী, উভয় দেশ বাণিজ্য ও বিনিয়োগের পথে প্রতিবন্ধকতা চিহ্নিত করে তা যৌথভাবে দূর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বাংলাদেশ সব সময় গঠনমূলক সংলাপ ও সহযোগিতায় বিশ্বাসী। যুক্তরাষ্ট্রের রপ্তানিতে যদি কোনো বাধা থাকে তা দূর করতে প্রস্তুত। এ বিষয়ে ঢাকায় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের বাণিজ্য শাখার সঙ্গে একাধিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে এবং বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ সরকার শুল্ক হার কমানো, সব ধরনের অশুল্ক বাধা দূর করা এবং পারস্পারিক বাণিজ্যকে আরও লাভজনক করতে বিভিন্ন সংস্কারমূলক উদ্যোগ নিয়েছে। এসব উদ্যোগের মধ্যে রয়েছে: আমদানি নীতির হালনাগাদ, কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, ট্রেডমার্ক ও পেটেন্ট সুরক্ষা ইত্যাদি।

এছাড়া আমরা যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি, মার্কিন অটো নির্মাতা প্রতিষ্ঠানকে বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব, বেসরকারি উদ্যোক্তাদের মাধ্যমে সয়াবিন, গম, তুলা ইত্যাদি বড় আকারে আমদানির উদ্যোগ এবং যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি খাতকে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য ও অন্যান্য সেবামূলক খাতে বিনিয়োগে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

চিঠিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, তার বিশ্বাস এসব উদ্যোগ দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ভারসাম্য আনতে এবং উভয় দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে সহায়ক হবে। প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনুস এবং তাঁর সরকারসহ বাণিজ্য উপদেষ্টা ব্যক্তিগতভাবে ইউএসটিআর দপ্তরের সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য সম্পর্ক আরও মজবুত করতে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ হারে পাল্টা শুল্ক আরোপ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এ ঘোষণা দেন। শুধু বাংলাদেশ নয়, বিশ্বের বেশির দেশের পণ্যে এমন শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। যে দেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য–ঘাটতি বেশি, সেই দেশের ওপর বেশি হারে শুল্ক আরোপ হয়েছে। এ নিয়ে বিশ্বজুড়ে তোলপাড় চলছে। বাংলাদেশেও সরকারের উচ্চমহল ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে আলোচনা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ প্রধান উপদেষ্টা ও বাণিজ্য উপদেষ্টা এ বাড়তি শুল্কের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রে দুই চিঠি দেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ