হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ২ শিক্ষার্থীর নামে মামলা
Published: 8th, March 2025 GMT
নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে ‘সম্পৃক্ত সন্দেহে’ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে আটক করেন র্যাব ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। পরে তাঁদের কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ, বাকি দুজনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।
গতকাল শুক্রবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহিনুল ইসলাম।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হান্নান, একই বর্ষের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবু তাহের এবং ২০২১-২২ বর্ষের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের তৌকির আহাম্মেদকে আটক করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে হান্নানকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। বাকি দুজনকে রাতে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার হাজতে রাখা হয়েছে।
পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে যুক্ত থাকার তথ্যের ভিত্তিতে হান্নানকে শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা কোটবাড়ী এলাকা থেকে নিয়ে যায় র্যাব-১১। পরে রাতে তাঁকে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। মোহাম্মদ হান্নানকে ছাড়াতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগর শাখার কয়েকজন নেতা থানায় গিয়েছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের ভাষ্য।
এর আগে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকা থেকে তাহের ও তৌকিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে জেলা ডিবি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। রাতে পুলিশ বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে মামলা করেছে।
র্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা একটি তথ্যের ভিত্তিতে হান্নানকে এনেছিলাম কথা বলার জন্য। জিজ্ঞাসাবাদে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। এরপর তাঁকে থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’
কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহিনুল ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে তিনজনকে এনেছিল র্যাব ও ডিবি। তাঁদের মধ্যে কথা বলে একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর অপর দুজনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। তাঁরা দুজন এখন থানাহাজতে আছেন। আজ শনিবার তাঁদের আদালতে পাঠানো হবে।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: জ জ ঞ স ব দ র পর
এছাড়াও পড়ুন:
বেঁদেপল্লীতে যুবককে হত্যা: ওসির অপসারণ দাবি
ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার কাশিপুর বেঁদেপল্লীতে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে আবু তালেব নামে এক যুবককে হত্যা করা হয়। ওই ঘটনায় হওয়া মামলা থেকে মাস্টারমাইন্ডকে বাদ দেওয়ার প্রতিবাদে কালীগঞ্জ থানায় অবস্থান ও সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন বেঁদেপল্লীর বাসিন্দারা।
বিক্ষোভ চলাকালে তারা কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদারের অপসারণের দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন।
রবিবার (৬ এপ্রিল) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় দুই শতাধিক নারী-পুরুষ থানায় অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। সেখানে তারা প্রায় এক ঘণ্টা অবস্থান নেন। এরপর তারা শহরের নিমতলা বাসস্ট্যান্ড এলাকায় অবস্থান নিয়ে প্রায় এক ঘণ্টা যশোর-ঝিনাইদহ সড়ক অবরোধ করে রাখানে। ফলে রাস্তার দুই পাশে অসংখ্য গাড়ি আটকা পড়ে। পরে তিনদিনের মধ্যে ওসির অপসারণের আল্টিমেটাম দিয়ে মহাসড়ক থেকে সরে যান বেঁদেপল্লীর বাসিন্দারা।
আরো পড়ুন:
গাইবান্ধা সদর হাসপাতালে দুর্নীতি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ
কারখানা বন্ধের ঘোষণায় সাভারের সড়কে শ্রমিকদের বিক্ষোভ
কালীগঞ্জ থানার ওসি (তদন্ত) মোফাজ্জেল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, “হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা হয়েছে, আসামিও গ্রেপ্তার হয়েছেন। এখন তারা (বেঁদেপল্লীর মানুষ) মামলায় নতুন করে আরো আসামি করার দাবি নিয়ে থানায় এসে বিশৃঙ্খলা শুরু করে। তাদের থানা চত্বরে বিশৃঙ্খলা না করার জন্য বলা হয়। এরপর বিক্ষোভকারীরা উত্তেজিত হয়ে থানার পাশে মহাসড়ক অবরোধ করে।”
আরো পড়ুন: গভীর রাতে ডাকাডাকি, বের হতেই যুবককে হত্যা
গত ৩ এপ্রিল ভোররাতে পূর্ব শত্রুতার জেরে আবু তালেব নামে এক যুবককে বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে লোহার রড দিয়ে আঘাত করে হত্যা করা হয়। ওই দিনই নিহতের ভাই আব্দুল আলীমকে থানায় ডেকে মামলার বাদী করানো হয়। এজাহারে কি লেখা আছে তার কিছুই জানেন না বলে অভিযোগ করেন বাদী। মামলায় রুবেল হোসেন নামে একজনকে আসামি করা হয়েছে। যাকে ওইদিনই গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নিহতের ভাই ও মামলার বাদী মোহাম্মদ আব্দুল আলীম বলেন, “ঘটনার দিন আমরা থানায় যায়। এক পর্যায়ে থানার ওসি আমাদের সবাইকে বের করে দেন। পরে বাড়ি থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দিয়ে একটি মামলা নথিভুক্ত করেন। এজাহারে কি লেখা সেটি জানি না। ওসি নিজের মন মতো এজাহারে একজনকে আসামি করেছেন। হত্যার মাস্টারমাইন্ড সেলিম নামে একজন। তিনি চিহ্নিত মাদক কারবারি। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মাদক মামলা রয়েছে। এই হত্যার মাস্টারমাইন্ড সেলিমকে ওসি মামলা থেকে বাদ দিয়েছেন।”
তিনি অভিযোগ করে বলেন, “কালীগঞ্জ থানার অনেক পুলিশ সদস্য বেঁদেপল্লীতে গিয়ে সেলিমের সঙ্গে বসে আড্ডা নেন। আমরা দ্রুত এই ওসির অপসারণ চাই। এই ওসি অপসারণ না হলে আমার ভাইয়ের হত্যার বিচার পাবো না।”
মামলার আসামি রুবেল হোসেনের স্ত্রী মাবিয়া খাতুনও বিচারের দাবিতে এসেছিলেন থানায়। তিনি জানান, তার স্বামীকে ভোররাতে ডেকে নিয়ে যায় সেলিম। তাকে ইয়াবা ও গাঁজা সেবন করিয়ে আবু তালেবকে হত্যা করানো হয়। তিনি তার স্বামী রুবেল হোসেন ও সেলিমের বিচার চান।
নিহত আবু তালেবের স্ত্রী জানেদা বেগম বলেন, “ওসি টাকার বিনিময়ে সেলিমের নাম বাদ দিয়েছেন। এই ওসিকে কালীগঞ্জে চাই না।”
এ বিষয়ে জানতে কালীগঞ্জ থানার ওসি শহিদুল ইসলাম হাওলাদারের সরকারি মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। ঝিনাইদহের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনজুর মোরশেদের মোবাইলে ফোন দিলেও সাড়া মেলেনি।
ঝিনাইদহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান জাকারিয়া মোবাইলে কল করা হলে তিনি জানান, কনস্টেবল নিয়োগ পরীক্ষার জন্য তিনি নড়াইলে আছেন। পুলিশ সুপারের সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন তিনি।
ঢাকা/শাহরিয়ার/মাসুদ