নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের সঙ্গে ‘সম্পৃক্ত সন্দেহে’ কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীকে আটক করেন র‍্যাব ও পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) সদস্যরা। পরে তাঁদের কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। তাঁদের মধ্যে একজনকে জিজ্ঞাসাবাদের পর ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ, বাকি দুজনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে।

গতকাল শুক্রবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহিনুল ইসলাম।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৭-২০১৮ শিক্ষাবর্ষের গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হান্নান, একই বর্ষের অ্যাকাউন্টিং বিভাগের শিক্ষার্থী আবু তাহের এবং ২০২১-২২ বর্ষের ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের তৌকির আহাম্মেদকে আটক করা হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে হান্নানকে ছেড়ে দিয়েছে পুলিশ। বাকি দুজনকে রাতে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানার হাজতে রাখা হয়েছে।

পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হিযবুত তাহ্‌রীরের সঙ্গে যুক্ত থাকার তথ্যের ভিত্তিতে হান্নানকে শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লা কোটবাড়ী এলাকা থেকে নিয়ে যায় র‍্যাব-১১। পরে রাতে তাঁকে কুমিল্লার কোতোয়ালি মডেল থানা-পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সেখান থেকে রাত সাড়ে ১০টার দিকে জিজ্ঞাসাবাদের পর তাঁকে ছেড়ে দেয় পুলিশ। মোহাম্মদ হান্নানকে ছাড়াতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কুমিল্লা মহানগর শাখার কয়েকজন নেতা থানায় গিয়েছিলেন বলে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজনের ভাষ্য।

এর আগে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় এলাকা থেকে তাহের ও তৌকিরকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করে জেলা ডিবি পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদের পর তাদের কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানায় হস্তান্তর করা হয়। রাতে পুলিশ বাদী হয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে মামলা করেছে।

র‍্যাব-১১, সিপিসি-২ কুমিল্লার কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার মাহমুদুল হাসান বলেন, ‘আমরা একটি তথ্যের ভিত্তিতে হান্নানকে এনেছিলাম কথা বলার জন্য। জিজ্ঞাসাবাদে তেমন কিছু পাওয়া যায়নি। এরপর তাঁকে থানায় হস্তান্তর করা হয় এবং থানা থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।’

কুমিল্লা কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহিনুল ইসলাম বলেন, নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহ্‌রীরের সঙ্গে সম্পৃক্ততার অভিযোগে তিনজনকে এনেছিল র‍্যাব ও ডিবি। তাঁদের মধ্যে কথা বলে একজনকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদের পর অপর দুজনের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। তাঁরা দুজন এখন থানাহাজতে আছেন। আজ শনিবার তাঁদের আদালতে পাঠানো হবে।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো.

আবদুল হাকিম বলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি যেন শিক্ষার্থীদের ছাড়িয়ে আনা যায়। রাত ১২টা পর্যন্ত থানায় ছিলাম। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়েছে।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জ জ ঞ স ব দ র পর

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ, দু’জন আটক

কুমিল্লার লালমাইয়ে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে জাহাঙ্গীর হোসেন নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় সালিশ বৈঠক করার অভিযোগে এনামুল হোসেন বাচ্চু নামে এক আওয়ামী লীগ নেতাকে আটক করা হয়েছে। শনিবার দু’জনকে আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন লালমাই থানার ওসি শাহ আলম।

আটক জাহাঙ্গীর হোসেন পেরুল উত্তর ইউনিয়নের উৎসবপদুয়া গ্রামের বাসিন্দা। পেশায় একজন সিএনজি চালিত অটোরিকশার চালক। এনামুল হোসেন বাচ্চু পেরুল উত্তর ইউনিয়নের পাড়া দৌলতপুর গ্রামের বাসিন্দা। তিনি পেরুল উত্তর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি।

ধর্ষণের শিকার কিশোরীর মা জানান, তাঁর মেয়ে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী। গত বৃহস্পতিবার দুপুরের পর জাহাঙ্গীর ঘরের পেছনের জানালা দিয়ে ডাক দিলে মেয়ে বের হয়ে যায়। জাহাঙ্গীর তাকে একটি বাগানে নিয়ে ধর্ষণ করে। মেয়ে ঘরে এসে ঘটনা বললে গ্রামের মাতবরদের বিষয়টি জানান তিনি। তাঁর ভাষ্য, গত শুক্রবার সকাল ৭টার দিকে উৎসবপদুয়ার মাতবর জয়নাল আবেদীন ও পাড়া দৌলতপুরের মাতবর এনামুল হোসেন বাচ্চু গ্রামের চায়ের দোকানে বসে জাহাঙ্গীরকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেন ও কান ধরে ওঠবস করান। সালিশে রায় কার্যকরের ৫০০০ টাকা তাৎক্ষণিক জয়নালের কাছে জমা দেওয়া হয়।

লালমাই থানার ওসি শাহ আলম সমকালকে জানান, প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগে জাহাঙ্গীর নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। ধর্ষণের ঘটনায় সালিশ বৈঠক করায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গ্রামের মাতবর এনামুল হোসেন বাচ্চুকে আটক করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলার পর রোববার আদালতে সোপর্দ করা হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • রাঙামাটির বাঘাইছড়িতে যৌথবাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ আটক ১
  • প্রতিবন্ধী কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগ, দু’জন আটক