পারমাণবিক চুক্তি আলোচনায় ট্রাম্পের কোনো চিঠি পায়নি ইরান
Published: 8th, March 2025 GMT
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছ থেকে পারমাণবিক চুক্তির বিষয়ে আলোচনার জন্য ইরান এখনো কোনো চিঠি পায়নি। ইরান দূতাবাসের এক মুখপাত্র গত শুক্রবার এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, ‘আমরা এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো চিঠি পাইনি।’
এর আগে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছিলেন, গত বৃহস্পতিবার তিনি ইরানের নেতৃত্বের কাছে দেশটির পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনার আগ্রহ প্রকাশ করে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের চিঠি পাঠানোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ইরান দূতাবাসের মুখপাত্র এ মন্তব্য করেছেন। ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনিকে ট্রাম্প একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। ওই চিঠিতে তেহরানের দ্রুত অগ্রসরমাণ পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ন্ত্রণে একটি নতুন চুক্তির বিষয়ে আলোচনার আহ্বান জানানো হয়েছে।
এদিকে ইরানের ওপর কঠোর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলে দেশটির সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি।
আরাঘচি সংবাদ সংস্থা এএফপিকে বলেন, ‘যতক্ষণ যুক্তরাষ্ট্র তাদের সর্বোচ্চ চাপের নীতি এবং হুমকি বজায় রাখবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা তাদের সঙ্গে সরাসরি কোনো আলোচনায় বসব না।’
জানুয়ারিতে ক্ষমতায় আসার পর থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন ইরানের জ্বালানি তেল খাতসহ দেশটির বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। সর্বোচ্চ চাপ প্রয়োগের কৌশলের অংশ হিসেবে তারা এ পদক্ষেপ নিয়েছে।
গত শুক্রবার ফক্স বিজনেস নিউজে সম্প্রচারিত ডোনাল্ড ট্রাম্পের একটি আংশিক সাক্ষাৎকার থেকে তাঁর ওই মন্তব্যকে তাৎক্ষণিকভাবে তুলে ধরে ইরানের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম। যদিও এখনো ট্রাম্পের চিঠি পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি খামেনির কার্যালয়। আগামীকাল রোববার ট্রাম্পের সাক্ষাৎকারটি পূর্ণাঙ্গভাবে সম্প্রচারিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তবে পারমাণবিক আলোচনাসংক্রান্ত যুক্তরাষ্ট্রের চিঠি পেলে ইরানের ৮৫ বছর বয়সী সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি কী প্রতিক্রিয়া দেবেন, তা এখনো স্পষ্ট নয়। কারণ, ২০১৫ সালে ইরানের পারমাণবিক চুক্তির আলাপ-আলোচনা শুরুর আগপর্যন্ত খামেনির কাছে লেখা চিঠিগুলো গোপন রেখেছিলেন তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা।
অন্যদিকে হোয়াইট হাউস ট্রাম্পের এ মন্তব্যের বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, তিনি ইরানের নেতাদের কাছে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। আর তাতে তিনি পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে আলোচনা করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
আরও পড়ুনইরানের নেতাকে ট্রাম্পের চিঠি১২ ঘণ্টা আগে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ভিন্নমতের জায়গাগুলো নিয়ে আলোচনা হবে, এনসিপির সঙ্গে বৈঠকে আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, এক নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। এখন আমাদের কাজ সবাই মিলে যেন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি। যেন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন ফেরত না আসে।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১০টায় জাতীয় সংসদের এলডি হলে এই বৈঠক শুরু হয়।
এনসিপি নেতাদের উদ্দেশে আলী রায়ীজ আরও বলেন, সংস্কার কমিশনগুলোর পক্ষ থেকে যে সুপারিশ দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে আপনাদের কিছু একমত, কিছু ভিন্নমত আছে। আমরা একমতের জায়গাগুলো চিহ্নিত করতে পেরেছি, সেগুলো নিয়ে অগ্রসর হব। যেসব জায়গায় আংশিকভাবে একমত বা ভিন্নমত সেগুলো নিয়ে আজ আলোচনা করব এবং প্রয়োজনে আলোচনা অব্যাহত থাকবে। কেননা আমরা চাই, জাতির আকাঙ্ক্ষার জায়গা থেকে একটি জাতীয় সনদ তৈরি করতে।
বৈঠকে এনসিপি নেতাদের উদ্দেশে আলী রীয়াজ বলেন, ‘আপনারা প্রাণবাজি রেখে লড়াই করে ফ্যাসিবাদী শাসককে পলায়ন করতে বাধ্য করেছেন। সেই বিজয়ের পাশাপাশি আপনারা সুস্পষ্টভাবে বলেছেন, একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত চান এবং আপনাদের এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে মানুষের মধ্যে রাষ্ট্র সংস্কারের আকাঙ্ক্ষা উন্মত্ত হয়ে উঠেছে।’ তিনি বলেন, এ দেশের ইতিহাসে আমরা বারবার দেখেছি, গণতন্ত্রের আকাঙ্ক্ষাকে কীভাবে পর্যুদস্ত করা হয়, কী করে গণতন্ত্রের সংগ্রামের মধ্য দিয়ে যে বিজয় অর্জিত হয়, সে বিজয়কে বিভিন্নভাবে ভূলুণ্ঠিত করা হয়। রাষ্ট্রকে কীভাবে এক ব্যক্তির করতলগত করে একটি শাসনব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছিল।
আরও পড়ুন‘মৌলিক সংস্কার’ বলতে কী বোঝাতে চাইছে জাতীয় নাগরিক পার্টি৩ ঘণ্টা আগেএখন এক নতুন বাংলাদেশের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে বলে মন্তব্য করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ সবাই মিলে যেন একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে পারি। যেন বাংলাদেশে ফ্যাসিবাদী শাসন ফেরত না আসে, গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো স্থায়ী রূপ নেয় এবং যেন মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়। গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যা এবং সমস্ত নিপীড়ন মোকাবিলা করতে পারি। সেই ব্যবস্থাগুলোকে অপসারণ করতে পারি।’
সভায় কমিশনের সদস্য বদিউল আলম মজুমদার, ইফতেখারুজ্জামান ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, এনসিপির ৮ সদস্যের প্রতিনিধিদলে ছিলেন আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম, সদস্যসচিব আখতার হোসেন,
জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার তুষার, জাবেদ রাসিন, মূখ্য সমন্বয়ক নাসিরুদ্দিন পাটোয়ারী, দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ ও সিনিয়র যুগ্ম সদস্য সচিব নাহিদা সারোয়ার নিভা।