আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সমনে রেখে প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে বরিশাল জেলা ও মহানগর জামায়াতে ইসলামী। দলটির পক্ষ থেকে জেলার ছয়টি সংসদীয় আসনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। 

সম্প্রতি বরিশাল নগরীর চৌমাথায় জামায়াতের রুকন সম্মেলনে প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল।

স্থানীয় কাউন্সিলরদের মতামত এবং কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত মোতাবেক প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। 

আরো পড়ুন:

ইউএনও’র কক্ষে জামায়াত নেতাদের মারধর, বিএনপির ৪ নেতাকে শোকজ

চার জামায়াত নেতাকে ইউএনওর সামনে ‘মারধরের’ অভিযোগ

রোকন সম্মেলনে অ্যাডভোকেট মোয়াযযম হোসাইন হেলাল জানান, দলীয় সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বরিশাল-১ (গৌরনদী-আগৈলঝাড়া) আসনে জামায়াতের হয়ে লড়বেন মাওলানা কামরুল ইসলাম খান। বরিশাল-২ (উজিরপুর-বানারীপাড়া) আসনে মাস্টার আব্দুল মান্নান, বরিশাল-৩ (মুলাদী-বাবুগঞ্জ) আসনে অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর ও বরিশাল-৪ আসনে (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) অধ্যাপক মাওলানা আবদুল জব্বার প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। বরিশাল-৫ (সদর) আসনে অ্যাডভোকেট মোযাযযম হোসাইন হেলাল এবং বরিশাল-৬ (হিজলা-মেহেন্দিগঞ্জ) আসনে অধ্যাপক মাওলানা মাহমুদুন্নবী তালুকদার নির্বাচনে অংশ নেবেন। 

বরিশাল জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাস্টার আব্দুল মান্নানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি অধ্যাপক মাওলানা মাহমুদুন্নবী তালুকদারের সঞ্চালনায় রোকন সম্মেলনে বিশেষ অতিথি ছিলেন- কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য অধ্যক্ষ জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য মাওলানা ফখর উদ্দিন খান রাযী।

বরিশাল মহানগর জমায়াতের প্রচার ও মিডিয়া বিষয়ক সম্পাদক বায়েজিদ বোস্তামী বলেন, ‍“বরিশালের ছয়টি আসনেরই প্রার্থী আগে থেকেই চূড়ান্ত ছিল। বরিশাল-৪ আসনের প্রার্থী আবুল হোসেন বশিরুল্লাহ অসুস্থ থাকার কারণে ওই আসনে নতুন প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। সাম্প্রতি রোকনদের সম্মেলনে সবার মতামতের ভিত্তিতে অধ্যাপক মাওলানা আবদুল জব্বারকে বরিশাল-৪ আসনের প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়।” 

বরিশাল মহানগর জামায়াতের আমির জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর বলেন, “নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠ পর্যায়ের নেতাকর্মীদের সুসংগঠিত করতে কাজ করা হচ্ছে। রোকন সম্মেলনে বরিশালের ছয়টি সংসদীয় আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। নির্বাচনের আগে এ তালিকার কিছুটা পরিবর্তন হলেও হতে পারে।”

ঢাকা/পলাশ/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর বর শ ল আসন র

এছাড়াও পড়ুন:

সাগর থেকে ১১ মাঝিমাল্লাসহ দুটি মাছ ধরার ট্রলার ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি

কক্সবাজারের টেকনাফের সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে বঙ্গোপসাগর থেকে দুটি মাছ ধরার ট্রলারসহ ১১ জন মাঝিমাল্লাকে করে ধরে নিয়ে গেছে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ)। অপহরণের শিকার মাঝিমাল্লাদের নাম জানা যায়নি। তবে ট্রলার দুটির মালিক অপহরণের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

আজ মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সেন্ট মার্টিন দ্বীপের অদূরে মৌলভীর শীল নামের এলাকায় বাংলাদেশ জলসীমা থেকে মাঝিমাল্লাদের ধরে নিয়ে যাওয়া হয় বলে সেখানে মাছ ধরায় নিয়োজিত জেলেরা জানিয়েছেন।

টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ফিশিং ট্রলার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম বলেন, আজ সকালে সেন্ট মার্টিনের অদূরে মাছ শিকারের সময় মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা স্পিডবোটে এসে মাছ শিকারে যাওয়া ট্রলারগুলো ধরে নিয়ে যায়। এর মধ্যে একটি ট্রলারের মালিক আবুল কালাম নিজে। অপরটির মালিক মোহাম্মদ শাওনের আরেক ব্যক্তি। এ ছাড়া আরও দুটি মাছ ধরার ট্রলার ধরে নেওয়া খবর পাওয়া যাচ্ছে। তবে সেগুলোর মালিক ও ট্রলারের নাম জানা যায়নি। ওই দুটি ট্রলারে ১০-১২ জন জেলে থাকতে পারেন।

আবুল কালাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিছুদিন পরপর আরাকান আর্মি এ ধরনের ঘটনা ঘটনাচ্ছে। ট্রলারমালিক, মাছ ব্যবসায়ীসহ জেলেদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এ সমস্যা সমাধানে সরকারের সহযোগিতা চাই আমরা।’

টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য আবদুল মান্নান বলেন, ‘সাগর থেকে আবারও মাছ ধরার ট্রলার চারটি ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। সাগরে মাছ ধরতে যাওয়া আমার এলাকার বেশ কয়েকটি ট্রলারকে ধাওয়া করেছে আরাকান আর্মির সদস্যরা। ট্রলারগুলো ফিরে এলে বিস্তারিত জানা যাবে।’

জানতে চাইলে কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের লে. কমান্ডার সালাউদ্দিন রশিদ তানভীর বলেন, টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালীয়া ঘাটের দুটি ট্রলারের ১১ জন জেলেসহ দুটি ট্রলার ধরে নিয়ে গেছে আরাকান আর্মি। এর বাইরে আরও কিছু তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। এ ব্যাপারের নিশ্চিত না হয়ে কিছু বলা যাচ্ছে না।

এ প্রসঙ্গে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, ‘মাছ ধরার ট্রলারসহ জেলেদের ধরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টি শুনেছি। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করে তাদের ফেরত আনার চেষ্টা চালানো হবে।

এর আগে গত ৫ মার্চ সেন্ট মার্টিন উপকূলে মাছ ধরার সময় ৬টি ট্রলারসহ প্রায় ৫৬ জেলেকে ধরে নিয়ে যান মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সদস্যরা। পরদিন তাঁদের ছেড়ে দিলেও ট্রলারের মাছ, তেল, জাল ও খাদ্যসামগ্রী সে দেশের নৌবাহিনীর সদস্যরা লুট করে নিয়ে গেছেন বলে অভিযোগ করেছেন ফিরে আসা জেলেরা।

এর আগে গত ২০ ফেব্রুয়ারি টেকনাফের নাফ নদী থেকে চারটি মাছ ধরার নৌকাসহ ১৯ বাংলাদেশি জেলেকে অপহরণ করা হয়। এই অপহরণের সঙ্গে মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মির (এএ) সদস্যরা জড়িত বলে জানা গেছে।

মিয়ানমারের বিদ্রোহী গোষ্ঠী ব্রাদারহুড অ্যালায়েন্সের সদস্য আরাকান আর্মি গত বছরের নভেম্বর মাস থেকে হামলা চালিয়ে রাখাইন রাজ্যের ১৭টি শহরের মধ্যে ১৩ টির নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে বলে সে দেশের গণমাধ্যমে প্রকাশিত খবরে জানা গেছে। গত বছরের ৮ ডিসেম্বর আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের মংডু টাউনশিপসহ সীমান্তের অধিকাংশ এলাকায় পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার দাবি করে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছিল। রাখাইনে বাংলাদেশ সীমান্তে বর্তমানে অনেকটাই কোণঠাসা মিয়ানমারের সেনা ও নৌবাহিনী। এর পর থেকে নাফ নদীতে তাঁদের জলসীমায় নৌযান চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ