Prothomalo:
2025-04-12@08:21:24 GMT

সমাজের সব ক্ষেত্রে আসুক সমতা

Published: 8th, March 2025 GMT

আজ আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এবার নারী দিবসের প্রতিপাদ্য ‘সমতা ক্ষমতায়ন অধিকার: নারী কন্যা সবার।’ স্লোগানটি সমাজে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নারীদের প্রতি ন্যায় ও সমতার ভিত্তিতে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তাকে সামনে নিয়ে এসেছে। 

সামগ্রিকভাবে দারিদ্র্য দূরীকরণ, জেন্ডারকেন্দ্রিক অর্থনৈতিক প্রকল্প গ্রহণ ও বাস্তবায়ন, সবুজ অর্থনীতি ও যত্নশীল সমাজ গঠন, নারীবাদী সংগঠনগুলোকে শক্তিশালী করা এবং সর্বোপরি সর্বত্র নারীর উপস্থিতিকে দৃঢ় করতে নারীর ক্ষমতায়ন ও অধিকারকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। উদ্বেগের বিষয় হলো যুদ্ধ, সংঘর্ষ ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সাম্প্রতিক বছরগুলোকে নারীর সেবা খাতে যেখানে বৈশ্বিক সহায়তা কমে আসছে, সেখানে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বব্যাপী ইউএসএআইডির প্রকল্প বন্ধ করে দিয়েছেন। এতে নারীর উন্নয়নে আর্থিক সহায়তা আরও কমে যাবে।  

বৈশ্বিক পরিস্থিতি থেকে বাংলাদেশের দিকে তাকালে দেখতে পাই, নানাবিধ বাধা পেরিয়ে বাংলাদেশের নারীরা সামনে এগিয়ে যাচ্ছেন। সন্তান, সম্পদের সুরক্ষা তো বটেই; দুর্যোগের ঝুঁকি মোকাবিলায় তঁাদের অবদান সারা বিশ্বে স্বীকৃত। শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, মানবসম্পদ উন্নয়নেও নারীর অবদান উল্লেখযোগ্য। গড় আয়ুতে নারী অনেক আগেই পুরুষকে ছাড়িয়ে গেছেন।

আমাদের সংবিধান নারী–পুরুষনির্বিশেষে পাঁচ মৌলিক অধিকারের স্বীকৃতি দিয়েছে। এই সংবিধানে জাতি, ধর্ম, বর্ণনির্বিশেষে সমানাধিকার নিশ্চিতের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও  নারীর প্রতি বৈষম্য ঘোচেনি। ইউনিসেফের এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের মেয়েরা অপুষ্টির দুষ্টচক্রে আটকা পড়েছে। 

নারীরা দেশের পোশাক খাতে বিপ্লবের সূচনা করেছেন। অথচ গবেষণা বলছে, অঞ্চলভেদে দেশে নারী পোশাকশ্রমিকদের মজুরিতে ৫১ থেকে ৬০ শতাংশ বৈষম্য বিরাজমান। এটি খুবই উদ্বেগের বিষয়। হাসপাতালগুলোয় নারীদের আসনসংখ্যা এখনো পুরুষের সমান করা যায়নি। প্রশাসনে নারীদের সংখ্যা বেড়েছে, কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়নে তঁাদের অংশগ্রহণ সীমিত। 

এখনো নারীদের জন্য নিরাপদ শৌচাগারের ব্যবস্থা নেই, ট্রেনে-বাসে নারী ও কন্যাশিশুরা ধর্ষণ ও নিগ্রহের শিকার হয়। বাড়ি থেকে বের হয়ে স্কুল-কলেজ বা কর্মস্থলে যেতে গণপরিবহনে আতঙ্কের মধ্যে থাকতে হয়। বাল্যবিবাহের দিক দিয়ে বাংলাদেশের অবস্থান সারা বিশ্বে অষ্টম এবং দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে প্রথম।  

গবেষণা, সমীক্ষা আর সূচকে দেশে নারীর প্রতি বৈষম্যের যে ছবি, তা বেদনাদায়ক। আমরা মনে করি, নারীর সম-অধিকার প্রতিদিনের ইস্যু, জরুরি ইস্যু। শুধু ৮ মার্চ নারীর প্রতি সমানুভূতি না দেখিয়ে, বছরের বাকি ৩৬৪ দিনও জেন্ডার সমতার কথা মাথায় রেখে কাজ করতে হবে। 

২০২৪ সালের ছাত্র–জনতার অভ্যুত্থানে নারীরা অগ্রণী ভূমিকা রেখেছেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে একাধিকবার আন্তর্জাতিক শিরোপা জিতেছেন নারী ফুটবলাররা। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, নারী খেলোয়াড়দের প্রতি রাষ্ট্র বরাবর বৈষম্যমূলক আচরণ করে এসেছে, তাঁদের ন্যায্য মজুরি ও সুযোগ–সুবিধা থেকেও বঞ্চিত রাখা হয়। মাঠ থেকে আবাসস্থল—কোথাও নারী খেলোয়াড়দের অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা যায়নি। 

কাজী নজরুল ইসলাম যেমন বলেছিলেন, ‘বিশ্বে যা–কিছু মহান সৃষ্টি চির–কল্যাণকর/ অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ নারী ও পুরুষ উভয়কে নিয়ে আমাদের সমাজ ও বিশ্ব। কাউকে পেছনে রেখে এগিয়ে যাওয়া যাবে না। ২০২৫ সালে এসে, বাংলাদেশের নারীর ক্ষমতায়নে যেমন উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আছে, তেমনি সামাজিক বাধাও কম নয়। বিভিন্ন স্থানে নারীদের ফুটবল খেলা ও গান গাওয়ায় বাধা দিচ্ছেন একশ্রেণির মানুষ। পোশাক নিয়েও তাদের হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে বিভিন্ন স্থানে। রাস্তায়, পরিবহনে চলতে গিয়ে এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও চরম বুলিংয়ের শিকার হতে হচ্ছে নারীদের। এসব পেরিয়ে বাংলাদেশের নারী পরিবার, কর্মক্ষেত্রসহ সমাজজীবনের সব ক্ষেত্রে নিজের অবস্থান আরও সুদৃঢ় করতে সক্ষম হবে, এবারের নারী দিবসে এটাই প্রত্যাশিত।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

২০২৭ সাল পর্যন্ত লিভারপুলে সালাহ

লিভারপুলের ভেরিফাইড ফেসবুক পেজে ৬ মিনিটের ব্যবধানে তিনটি পোস্ট করা হয় আজ। প্রথম পোস্টে মাঠে লাল গালিচার ওপর একটি চেয়ার। চেয়ারটি দেখে বোঝা যায়, সেটি গণ্যমান্য কারও বসার আসন। দুই মিনিট পরই আরেকটি পোস্ট—লিভারপুলের জার্সি গায়ে সেই চেয়ারে বসে হাসছেন মোহাম্মদ সালাহ। ক্যাপশনে লেখা, ‘তিনি থাকছেন।’

আরও পড়ুনব্রাজিল–আর্জেন্টিনার মহাদেশ থেকে ৬৪ দলের বিশ্বকাপ আয়োজনের প্রস্তাব ১ ঘণ্টা আগে

লিভারপুল সমর্থকদের এতটুকুতেই বুঝে ফেলার কথা। মিসরীয় ফরোয়ার্ডের সঙ্গে ইংলিশ ক্লাবটির চুক্তি শেষ পর্যন্ত হবে কি হবে না, তা নিয়ে জল্পনা-কল্পনা চলছিল বহুদিন। আজ সেই প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে লিভারপুলের সঙ্গে নতুন চুক্তি করেছেন সালাহ, যেটা দুই মিনিট পরই ফেসবুকে বিবৃতিসহ আরও একটি পোস্টে নিশ্চিত করে অ্যানফিল্ডের ক্লাবটি।

নতুন চুক্তিতে ২০২৭ পর্যন্ত লিভারপুলে থাকছেন সালাহ। অর্থাৎ নতুন চুক্তিতে তাঁর মেয়াদ দুই বছর। চুক্তি সইয়ের পর লিভারপুলের ওয়েবসাইটকে সালাহ বলেছেন, ‘সই করেছি কারণ আমি মনে করি, আমাদের অন্যান্য ট্রফি জয়ের সুযোগ আছে এবং নিজের খেলাটা উপভোগ করতে পারব। এটা দারুণ ব্যাপার, কারণ সেরা বছরগুলো এখানে কাটিয়েছি। আট বছর খেলেছি, আশা করি এটা ১০ বছর হবে। নিজের জীবন এবং ফুটবলটা এখানে উপভোগ করছি। ক্যারিয়ারের সেরা বছরগুলো এখানে কাটিয়েছি।’

সমর্থকদের প্রতি ৩২ বছর বয়সী এই ফরোয়ার্ড বলেছেন, ‘(সমর্থকদের প্রতি) বলতে চাই, এখানে থাকতে পেরে আমি খুব খুব খুশি। সই করেছি কারণ আমি বিশ্বাস করি একসঙ্গে অনেক বড় বড় ট্রফি জিততে পারব...ভবিষ্যতে আমরা আরও ট্রফি জিততে যাচ্ছি।’

আরও পড়ুনওনানার ভুলে ভরা রাতে জয়বঞ্চিত ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড৪ ঘণ্টা আগে

এএস রোমা থেকে ২০১৭ সালে ৩ কোটি ৭০ লাখ পাউন্ডে (প্রায় ৫৭৩ কোটি ৩১ লাখ টাকা) লিভারপুলে যোগ দিয়ে প্রিমিয়ার লিগ, এফএ কাপ, লিগ কাপ, কমিউনিটি শিল্ড, সুপার কাপ, ক্লাব বিশ্বকাপ জয়ের পাশাপাশি চ্যাম্পিয়নস লিগও জিতেছেন সালাহ। শুধু কী তাই, লিভারপুলের ইতিহাসে সালাহ তৃতীয় সর্বোচ্চ গোলদাতাও (৩৯৩ ম্যাচে ২৪৩ গোল ও গোল বানিয়েছেন ১০৯টি)। তবে ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে লিভারপুলের হয়ে সালাহর বেশি গোল নেই আর কারও (২৮৩ ম্যাচে ১৮২ গোল)।

আগামী জুনে সালাহর সঙ্গে লিভারপুলের বর্তমান চুক্তির মেয়াদ ফুরোবে। চলতি মৌসুমে সালাহ একাধিকবার বলেছেন, তিনি চুক্তির মেয়াদ বাড়াতে চান। কিন্তু দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাটে-বলে হচ্ছিল না। সে কারণে সমর্থকদের মধ্যে সালাহর লিভারপুল ছেড়ে যাওয়ার শঙ্কা জেগেছিল। কারণ, সৌদি আরবের ঘরোয়া ফুটবল তাঁর প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেছিল। কিন্তু গত বুধবার জানা যায়, লিভারপুল ও সালাহর মধ্যে ইতিবাচক আলাপ হয়েছে এবং নতুন চুক্তি সন্নিকটে। সেটাই ঘটল আজ।

এত দিন সালাহর এজেন্ট রামি আব্বাসের সঙ্গে নতুন চুক্তির রূপরেখা নিয়ে আলোচনা করেছেন লিভারপুলের ক্রীড়া পরিচালক রিচার্ড হিউজ। সংবাদমাধ্যম এর আগে জানিয়েছিল, লিভারপুলে সবচেয়ে বেশি পারিশ্রমিক পাওয়া সালাহ অ্যানফিল্ডের ক্লাবটিতে থাকতে বেতন কমাতেও রাজি ছিলেন। কিন্তু ইএসপিএনকে সূত্র জানায়, নতুন চুক্তিতে বেতন কমানোর কথা ভাবেনি কোনো পক্ষই।

আরও পড়ুনআর্জেন্টিনাকে গুঁড়িয়ে দেওয়া প্রসঙ্গে নতুন করে যা বললেন রাফিনিয়া ১৪ ঘণ্টা আগে

জুনে তেত্রিশে পা রাখতে যাওয়া সালাহ এবার প্রিমিয়ার লিগে ৩১ ম্যাচে করেছেন ২৭ গোল। এখন পর্যন্ত তিনিই সর্বোচ্চ গোলদাতা। পাশাপাশি ১৭টি গোলও বানিয়েছেন। সব মিলিয়ে চলতি মৌসুমে ৪৫ ম্যাচে তাঁর গোলসংখ্যা ৩২।

চলতি মৌসুম শেষে লিভারপুলের যে তিন খেলোয়াড়ের চুক্তির মেয়াদ ফুরোবে, সালাহ তাঁদের মধ্যে সবার আগে নতুন চুক্তি করলেন। বাকি রইলেন ভার্জিল ফন ডাইক ও ট্রেন্ট আলেক্সান্দার-আর্নল্ড। ডাচ ডিফেন্ডার ডাইক জানিয়েছেন, তাঁর বিষয়ে আলোচনা এগিয়ে যাচ্ছে এবং নতুন চুক্তির বিষয়ে তিনি আশাবাদী। কিন্তু ট্রেন্ট আলেক্সান্দার-আর্নল্ড রিয়াল মাদ্রিদে যোগ দিতে পারেন বলে জোর গুঞ্জন আছে দলবদলের বাজারে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ২০২৭ সাল পর্যন্ত লিভারপুলে সালাহ