শেরপুরের সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়ের কাংশা ইউনিয়নের অন্তত পাঁচটি এলাকায় বিস্তীর্ণ বনভূমি আগুনে পুড়ে গেছে। এতে জঙ্গলে বসবাস করা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণী ও বনজ গুল্মলতা আগুনে পুড়ে প্রাকৃতিক ভারসাম্য হুমকির মুখে পড়েছে।

স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, অসাধু ব্যবসায়ী ও বন কর্মকর্তাদের যোগসাজসে শালবাগান ধ্বংস করে বনের জায়গা দখলে নিতেই পরিকল্পিতভাবে আগুন লাগানো হচ্ছে। তবে বন বিভাগের কর্মকর্তারা বলছেন, বনে পর্যটক ও গরুর রাখালদের বিচরণ থাকায় তাঁরা যে বিড়ি বা সিগারেট খান, তা থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। এ বিষয়ে মাইকিং করে জনগণকে সচেতন করা হচ্ছে।

গত বুধবার থেকে ঝিনাইগাতীর কাংশা ইউনিয়নের হালচাটি, গান্ধীগাঁও, গজনী বিট, দরবেশ টিলা এলাকার বিস্তৃত শালবনে অন্তত ২০টি স্থানে আগুন লাগার ঘটনা ঘটে। এতে উপকারী কীটপতঙ্গ, পোকামাকড়সহ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র প্রাণী ও চারা গাছ পুড়ে গেছে। বন বিভাগের কর্মীরা চেষ্টা চালিয়ে শুক্রবার আগুন নেভাতে সক্ষম হন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের ভাষ্য, আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকে একটি স্বার্থান্বেষী মহল গারো পাহাড়ে শালবন ও বন বিভাগের জমি দখলের তৎপরতা শুরু করেছে। এ লক্ষ্যে দুর্বৃত্তরা বনের গাছ কাটার সুবিধার্থে ইচ্ছা করে আগুন লাগিয়ে দেয়। শুকনা মৌসুম থাকার কারণে শালবনের ঝরা পাতা এবং শুকনা ছোট গাছপালায় সহজে আগুন লেগে যায়। ফলে বনের শালগাছ সহজে কাটা সম্ভব হয়। আর এ সুযোগে অসাধু বন কর্মকর্তাদের যোগসাজশে লাখ লাখ টাকার গাছ কাটার পাশাপাশি বনের খালি জায়গা দখল করে বসতি স্থাপন করে।

স্থানীয় পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রিন ভয়েজের সাধারণ সম্পাদক মারুফুর রহমান বলেন, ‘গারো পাহাড়ের অগ্নিকাণ্ড পরিকল্পিত। সংরক্ষিত শাল-গজারি বন ধ্বংস করার অভিপ্রায় বন বিভাগের অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে এই কাজগুলো করা হচ্ছে বলে আমাদের কাছে অভিযোগ রয়েছে।’

জানতে চাইলে ময়মনসিংহ বন বিভাগের রাংটিয়া রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক এস বি তানভীর আহমেদ বলেন, এখন শুকনা মৌসুমে শালপাতা খুবই শুষ্ক অবস্থায় বনে পড়ে স্তূপ হয়ে থাকে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দা ও গজনি অবকাশ এলাকায় ট্যুরিস্টদের আনাগোনা বেশি। এ ছাড়া বনে গরুর রাখালের বিচরণ থাকায় তাঁরা যে বিড়ি বা সিগারেট খান, সেই আগুন থেকেই জঙ্গলে আগুনের সূত্রপাত ঘটছে বলে মনে করা হচ্ছে।

তানভীর আহমেদ আরও বলেন, ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থানের আগুনের নেভানো হয়েছে। এ ছাড়া মাইকিং করে স্থানীয় বাসিন্দাদের সচেতন করা হচ্ছে। তবে বনে কিছু গাছ কাটা হয়েছে। কাটা গাছ ইতিমধ্যে উদ্ধার করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: বন ব ভ গ র কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

গাজীপুরে গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজের আগুনে পাঁচজন দগ্ধ

গাজীপুরে একটি বাড়িতে গ্যাস সিলিন্ডারের লিকেজের আগুনে পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। গতকাল রোববার রাত আটটার দিকে নগরের মোগরখাল মোল্লা মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। দগ্ধদের ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গাজীপুর নগরের মোগরখাল মোল্লা মার্কেট এলাকার একটি বাসায় গতকাল রাত আটটার দিকে পারভিন আক্তার নামের এক নারী রান্না করছিলেন। এ সময় গ্যাস সিলিন্ডার লিকেজ থেকে হঠাৎ আগুন ধরে যায়। এতে পারভিনসহ পাঁচজন দগ্ধ হন। তাঁদের প্রথমে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে তাঁদের ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়।

দগ্ধ অন্য চারজন হলেন সীমা আক্তার (৩০), তাসলিমা আক্তার, পারভিন আক্তারের দেড় বছরের ছেলে আয়ান, শেফালী বেগম (৪০) ও তাঁর মেয়ে তানজিলা।
বাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কায়সার আহমেদ বলেন, গ্যাস লিকেজ থেকে আগুনে পাঁচজন দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, তাসলিমার শরীরের ৯৫ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। এ ছাড়া দুজন ৯০ শতাংশ, একজন ৩২ শতাংশ ও অন্য একজন ২৮ শতাংশ দগ্ধ হয়েছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ