নারী নির্যাতনসহ সার্বিক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ এখন চরম উদ্বিগ্ন বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেছেন, উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, রাস্তাঘাট ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নারীদের বিভিন্নভাবে হেনস্তা করার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এ ধরনের প্রবণতা বিপজ্জনক। এসব ঘটনা ঘটিয়ে নৈরাজ্য ও অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করা হচ্ছে। নারীদের সম্মান রক্ষা এবং নারী স্বাধীনতা রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব, যা নারীদের সংবিধান স্বীকৃত অধিকার। নারী নির্যাতনসহ সার্বিক নৈরাজ্যকর পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ এখন চরম উদ্বিগ্ন।
গতকাল শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন বিএনপি মহাসচিব। সরকারকে নারী নির্যাতনসহ সব ধরনের নৈরাজ্যকর পরিস্থিতি কঠোর হাতে দমন করে দেশে ন্যায়বিচার ও শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

নারী নির্যাতনসহ নারীদের বিভিন্নভাবে হেনস্তার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, দেশের উন্নয়ন, অগ্রগতিসহ সব ক্ষেত্রে নারীরা পুরুষের পাশাপাশি অগ্রণী ভূমিকা পালন করছেন। শিক্ষা ক্ষেত্রেও নারীরা যে অগ্রগামিতা দেখাচ্ছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। দেশের মতো বিদেশেও নারীরা প্রশসংনীয় ভূমিকা রেখে দেশের সম্মান বৃদ্ধি করছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন স্থানে ছাত্রী, নারী শ্রমিকসহ বিভিন্ন পেশার নারীকে যৌন হয়রানি, শ্লীলতাহানি এবং হেনস্তা করা হচ্ছে। ধর্ষণ ও নির্যাতন করে নারীদের হত্যা করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আওয়ামী সরকার নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়নি এবং বিচারহীনতার কারণে নির্যাতনকারীরা আরও উৎসাহিত এবং বেপরোয়া হয়েছে, যা এখনও চলমান রয়েছে। 
বিএনপি মহাসচিব বলেন, নারীদের সম্মান রক্ষা এবং নারী স্বাধীনতা রক্ষা করা আমাদের নৈতিক দায়িত্ব। এর তীব্র নিন্দা ও বিরোধিতা করে সবাইকে সচেতনভাবে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান তিনি। 

 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ম র জ ফখর ল ইসল ম আলমগ র ন র য তনসহ

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে হুমকির মুখে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা, উত্তরাখন্ডে হিন্দু নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর

পেহেলগামের ঘটনার পর ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা হুমকির মধ্যে পড়েছেন। কোনো কোনো জায়গায় তাঁরা আক্রান্ত হয়েছেন। কোথাও দ্রুত তাঁদের কাশ্মীরে ফিরে যেতে হুকুম জারি করা হয়েছে। কোথাও বাড়ি ছাড়া করা হচ্ছে। এই প্রবণতা রুখতে জম্মু–কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ থেকে শুরু করে সব রাজনৈতিক নেতা–নেত্রী গভীরভাবে চিন্তিত। পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি গতকাল বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে অনুরোধ করেন এই প্রবণতা কড়া হাতে দমন করতে।

গত বৃহস্পতিবার শ্রীনগরে সর্বদলীয় বৈঠকে গৃহীত প্রস্তাবেও রাজ্যে রাজ্যে এই অরাজকতা বন্ধের দাবি জানানো হয়। দেশবাসীর উদ্দেশে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘দয়া করে কাশ্মীরিদের শত্রু ভাববেন না। পেহেলগামের হামলার জন্য কাশ্মীরিরা দায়ী নন। ৩৫ বছর ধরে আমরাও হামলার শিকার। আমরা ভুক্তভোগী।’

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সূত্র আজ শুক্রবার প্রথম আলোকে বলেন, কোনো কোনো রাজ্যে এ ধরনের অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটেছে। কাশ্মীরি শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের হুমকি দেওয়া হয়েছে। রাজ্য সরকারদের বলা হয়েছে কঠোর ব্যবস্থা নিতে।

বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও এ বিষয়ে উদ্বিগ্ন। দলের এক নেতা শুক্রবার প্রথম আলোকে জানান, রাজ্যনেতাদের এ বিষয়ে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, উত্তরাখন্ড পুলিশ ইতিমধ্যেই রাজ্যের এক হিন্দুত্ববাদী নেতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস জানিয়েছে, উত্তরাখন্ডের হিন্দু রক্ষা দলের নেতা ললিত শর্মার বিরুদ্ধে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ এফআইআর দাখিল করেছে। শর্মা এক ভিডিও বার্তায় কাশ্মীরি শিক্ষার্থী ও ব্যবসায়ীদের অবিলম্বে রাজ্য ছেড়ে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেন। হুমকি দিয়ে বলেন, না হলে তাঁদের হাল অকল্পনীয় হবে।

উত্তরাখন্ড পুলিশের অতিরিক্ত মহাপরিচালক এ পি অংশুমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কাশ্মীরিদের নিরাপত্তায় তাঁরা তৎপর। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে।

নিরাপত্তা নিশ্চিয়তা সত্ত্বেও উত্তরাখন্ড থেকে অন্তত ২০ জন ছাত্র ইতিমধ্যেই অন্যত্র চলে গেছেন বলে দাবি করেছেন দুন কলেজ গোষ্ঠীর অ্যাডমিশন কো–অর্ডিনেটর মোহসিন আব্বাস। তিনি জানান, ওই ছাত্ররা দিল্লি চলে গেছেন।

উত্তরাখন্ডের মতো হাল হয়েছে উত্তর প্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ ও পাঞ্জাবেও। উত্তর প্রদেশের প্রয়াগরাজ জেলায় এক বাড়িওলা কাশ্মীরি শিক্ষার্থী ও চাকরিজীবীদের বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। হিমাচল প্রদেশের কাংড়া উপত্যকায় আর্নি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রাবাসের দরজা ভেঙে কাশ্মীরি ছাত্রদের নিগ্রহ করা হয়। পাঞ্জাবের রাজধানী চণ্ডীগড়ের ডেরা বসসিতে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের হোস্টেলেও কাশ্মীরি ছাত্ররা আক্রান্ত হন।

জম্মু কাশ্মীর স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের আহ্বায়ক নাসির খুয়েহামি অভিযোগ করেছেন, পেহেলগাম–কাণ্ডের পর বিভিন্ন রাজ্য থেকে কাশ্মীরি ছাত্রদের ওপর হামলা ও হুমকির অন্তত আটটি ঘটনার খবর তাঁর কাছে এসেছে। তিনি জানান, বিপন্ন ছাত্রদের জন্য তাঁরা বেশ কয়েকটা হেল্পলাইন নম্বর চালু করেছেন। নয়াদিল্লির জম্মু–কাশ্মীর রেসিডেন্ট কমিশনারও বেশ কিছু সর্বক্ষণের হেল্পলাইন চালু করেছেন। খুয়েহামি জানান, তাঁরা ইতিমধ্যে লোকসভার বিরোধী নেতা রাহুল গান্ধীর সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কংগ্রেস নেতার কার্যালয় থেকে খুয়েহামিকে জানানো হয়েছে, এ বিষয়ে অমিত শাহর সঙ্গে রাহুল গান্ধী অবশ্যই কথা বলবেন। রাজ্যে রাজ্যে কাশ্মীরি পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বলবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে হুমকির মুখে কাশ্মীরি শিক্ষার্থীরা, উত্তরাখন্ডে হিন্দু নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর