আমি বিশ্বাস করি যে আমরা এবার জয়ী হবো: এএফপিকে নাহিদ
Published: 8th, March 2025 GMT
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, তিনি ও তার দলের নেতারা যদি আগামী সরকার গঠন করতে না-ও পারেন, তারপরও তারা এমন একটি রাজনৈতিক শক্তির সূচনা করবেন, যা আগামী কয়েক দশক ধরে প্রভাব বজায় রাখবে।
তিনি বলেন, ‘কেউই জানতেন না, একটি অভ্যুত্থান হবে। তবে এটি হয়েছে। আমি আন্তরিকতার সঙ্গে আশা করি এবং বিশ্বাস করি যে আমরা এবার বিজয়ী হতে চলেছি। তবে এই নির্বাচনই পৃথিবীর শেষ নয়.
বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন। আজ শুক্রবার সাক্ষাৎকারটি প্রকাশ করা হয়েছে।
নাহিদ ইসলাম বলেছেন, বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে ব্যাপক সংস্কারের ইচ্ছা নেই। তিনি বলেন, ‘যেসব সংস্কারের জন্য তরুণরা প্রাণ দিয়েছে, সেগুলো নিয়েও তাদের কোনও আগ্রহ নেই। তাই আমরা একটি রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
এনসিপি নিজেকে একটি বৃহৎ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দল হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে। তিনি বলেন, ‘আমরা নারীদের এগিয়ে এনেছি এবং সব বর্ণ ও ধর্মের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করেছি। আমরা নিশ্চিত করব যে সব নাগরিক তাদের অধিকার ভোগ করতে পারে।’
এনসিপির প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) আগামী জাতীয় নির্বাচন যত দ্রুত সম্ভব আয়োজনের দাবি জানিয়েছে। বিএনপির যুক্তি, জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে একটি সরকার গঠনের জন্য দ্রুত নির্বাচন প্রয়োজন। তবে নাহিদ ইসলাম বলেছেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হয়, কিন্তু এটি সত্য নয়।’
তিনি আরও বলেছেন, হাসিনার পতনের পর দেশে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন আয়োজন ‘সম্ভব নয়’।
এনসিপির আরেকটি লক্ষ্য হলো গণপরিষদ গঠন। এই পরিষদ বাংলাদেশের সংবিধানের গোড়া থেকে সংস্কার করবে এবং স্থায়ী গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে। নাহিদ বলেছেন, ‘আমরা একটি বৃহৎ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক দল গঠন করতে চাই, যেখানে সবাই অংশ নিতে পারবে।’
গত বছরের জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের সবচেয়ে পরিচিত মুখগুলোর একটি নাহিদ ইসলাম। হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গঠিত অন্তর্বর্তী সরকারে ড. ইউনূসের আমন্ত্রণে যোগ দেন তিনি। গত সপ্তাহে সরকার থেকে পদত্যাগ করেন নাহিদ। এরপর তার নেতৃত্বে আত্মপ্রকাশ পায় তরুণদের নতুন দল এনসিপির।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: জ ত য় ন গর ক প র ট এনস প ন হ দ ইসল ম ন হ দ ইসল ম বল ছ ন এনস প সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের চারটি ধারা নিয়ে রিট পর্যবেক্ষণসহ নিষ্পত্তি
‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ–২০২৫’–এর চারটি ধারার বৈধতা নিয়ে রিট পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে নিষ্পত্তি করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। রিটের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরী ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ আজ সোমবার এ আদেশ দেন। আদালতের পূর্ণাঙ্গ আদেশ পেলে পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে বলা যাবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট আইনজীবী।
ওই অধ্যাদেশের ৩, ৪, ৬ ও ৯ ধারার বৈধতা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আজমল হোসেন গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রিটটি করেন, যা ১৭ মার্চ হাইকোর্টের একটি দ্বৈত বেঞ্চে শুনানির জন্য ওঠে। সেদিন দ্বৈত বেঞ্চের বিচারপতি বিব্রতবোধের কথা জানিয়ে বিষয়টি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠাতে আদেশ দেন। প্রধান বিচারপতি শুনানির জন্য বিচারপতি মো. আকরাম হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে বিষয়টি পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় শুনানি শেষে আজ আদেশ দেওয়া হয়।
আদালতে রিটের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জয়নুল আবেদীন ও এম বদরুদ্দোজা বাদল, আইনজীবী কায়সার কামাল ও মোহাম্মদ শিশির মনির এবং রিট আবেদনকারী আইনজীবী মো. আজমল হোসেন নিজেও শুনানিতে অংশ নেন। রাষ্ট্রপক্ষে অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনীক আর হক ও ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান মিলন শুনানিতে ছিলেন।
পরে আইনজীবী মো. আজমল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, অধ্যাদেশের ৩, ৪, ৬ ও ৯ ধারার বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়। শুনানি শেষে কিছু পর্যবেক্ষণ সাপেক্ষে আদালত রিটটি নিষ্পত্তি করে আদেশ দিয়েছেন। পূর্ণাঙ্গ আদেশ পেলে পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে বলা যাবে।
এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগে বিচারক নিয়োগের লক্ষ্যে উপযুক্ত ব্যক্তি বাছাই করে প্রধান বিচারপতি কর্তৃক রাষ্ট্রপতিকে পরামর্শ দিতে ‘সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশ–২০২৫’ শিরোনামে অধ্যাদেশ গত ২১ জানুয়ারি গেজেট আকারে জারি করে আইন মন্ত্রণালয়।
অধ্যাদেশের কয়েকটি ধারা সংশোধনে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়ে ২৩ জানুয়ারি আইনি নোটিশ পাঠান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. আজমল হোসেন। এ বিষয়ে তিন দিনের মধ্যে পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানানো হয়। আইনি নোটিশের জবাব না পেয়ে হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় রিটটি করেন তিনি। অধ্যাদেশের ৩, ৪, ৬ ও ৯ ধারার বৈধতা নিয়ে রিটটি করা হয়। অধ্যাদেশের ৩ ধারায় কাউন্সিল প্রতিষ্ঠা, ৪ ধারায় কাউন্সিল সচিব, ৬ ধারায় কাউন্সিলের ক্ষমতা ও কার্যাবলি এবং ৯ ধারায় আপিল বিভাগের বিচারক নিয়োগবিষয়ক সুপারিশ সম্পর্কে বলা রয়েছে।
রিট আবেদনে দেখা যায়, ওই ধারাগুলো কেন সংবিধানের সঙ্গে সাংঘর্ষিক ঘোষণা করা হবে না, এ বিষয়ে রুল চাওয়া হয়েছিল। রুল হলে তা বিচারাধীন অবস্থায় অধ্যাদেশটির কার্যক্রম স্থগিতও চাওয়া হয়েছিল। রিটে আইন মন্ত্রণালয়ের দুই সচিবকে বিবাদী করা হয়।