স্থানীয় সরকার কাঠামোকে কার্যকর না করলে বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা শক্তিশালী হবে না। জাতীয় রাজনীতির অস্থিরতা, ক্ষমতার দ্বন্দ্ব এবং স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের প্রবণতা কমিয়ে আনতে হলে স্থানীয় সরকারকে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রভাববলয় থেকে বেরিয়ে এসে অনেকটাই স্বতন্ত্রভাবে পরিচালিত হতে হবে।

কেন্দ্রীয় সরকার ও স্থানীয় সরকারের মধ্যে দূরত্ব বাড়াতে পারলে জাতীয় রাজনীতির চরিত্রও পরিবর্তিত হবে। তখন তা উন্নয়ননির্ভর থেকে নীতিনির্ভর হয়ে উঠবে। সেখানে স্থানীয় পর্যায়ের প্রতিনিধিরা জনগণের কল্যাণে কাজ করবেন। স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রভাব ও হস্তক্ষেপ কমে আসবে।

একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার থাকলে রাজনৈতিক দুর্বৃত্তায়নের প্রবণতা কমে যাবে। কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ যত কমানো যাবে, স্থানীয় সরকার ততই নিজস্ব ক্ষমতা ও দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করতে পারবে। তখন স্থানীয় সরকারের বাজেট, আয়-ব্যয়ের হিসাব এবং প্রশাসনিক স্বচ্ছতার কারণে জাতীয় রাজনীতির সঙ্গে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক স্বার্থের সংঘাত কমবে।

স্থানীয় সরকার যদি প্রকৃতপক্ষে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারলে জাতীয় রাজনীতি অলাভজনক একটি ব্যবস্থায় রূপান্তরিত হবে। আর তেমন হলে ক্ষমতা দখলের লড়াইও কমে আসবে। ক্ষমতা হস্তান্তর হবে অনেকটাই শান্তিপূর্ণভাবে। তাই কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রবণতার অবসান করে একটি কার্যকর গণতন্ত্রের জন্য স্থানীয় সরকারকে শক্তিশালী করা জরুরি।

সম্প্রতি রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য গঠিত ছয়টি কমিশন সরকারের কাছে সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন বাংলাদেশকে চারটি প্রদেশে ভাগ করার যে প্রস্তাব করেছে, বর্তমান প্রশাসনিক কাঠামো এবং আঞ্চলিক বাস্তবতা বিবেচনায় নিলে প্রাদেশিক বিভাজন ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। এটি শাসনব্যবস্থার স্থিতিশীলতা নষ্ট করে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে। এমন পরিস্থিতিতে কার্যকর স্থানীয় সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করাই হতে পারে প্রশাসনিক জটিলতা নিরসনের একটি কার্যকর উপায়। আর এর জন্য প্রয়োজন এক কাঠামোগত প্রক্রিয়া।

বাংলাদেশের সংবিধানে স্থানীয় সরকারকে ‘স্থানীয় শাসন’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে, যা কার্যকরভাবে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে একটি বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছে। একে সত্যিকার অর্থে স্থানীয় সরকার হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি দিতে হবে। নিশ্চিত করতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্তৃত্ব থেকে এর স্বাধীনতা। এ কাঠামোকে কার্যকর করার জন্য তিন স্তরের স্থানীয় সরকারব্যবস্থা চালু করা প্রয়োজন—ইউনিয়ন পরিষদ, উপজেলা পরিষদ ও জেলা পরিষদ।

একটি কার্যকর স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য তার কেন্দ্রস্থল হতে হবে জেলা পরিষদ, যা জেলা সরকারের আদলে পরিচালিত হবে। প্রতিটি পরিষদের সদস্যদের সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে হবে এবং পরিষদের সভাপতি ও সহসভাপতিদের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মাধ্যমেই মনোনীত করা উচিত। জবাবদিহি নিশ্চিত করতে ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে একটি মনিটরিং কাউন্সিল গঠন করতে হবে। এই কাউন্সিলের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের কার্যক্রম নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হবে। এর মাধ্যমে স্থানীয় প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে।

ঔপনিবেশিক আমলে তৈরি হওয়া স্থানীয় শাসনব্যবস্থা জনগণের প্রয়োজনের চেয়ে সরকারের প্রয়োজনকে বেশি গুরুত্ব দিত। তাই স্থানীয় পর্যায়ে প্রকৃত জনকল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। এ বাস্তবতায় স্থানীয় সরকারকে স্বশাসিত ও গণপ্রতিনিধিত্বশীল করে তোলা দরকার, যাতে এটি উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠতে পারে। সংবিধানের ৫৯ ও ৬০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে স্থানীয় সরকারকে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণের গুরুত্বপূর্ণ অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।

স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের প্রতি জনগণের জবাবদিহির নিশ্চয়তা বিধানের জন্য প্রয়োজনে রিকল বা প্রত্যাহার পদ্ধতি চালু করা দরকার। গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে ন্যূনতম ৬৫ শতাংশ ভোটারের আবেদন থাকলেই কেবল কোনো জনপ্রতিনিধিকে প্রত্যাহার করা যেতে পারে।

স্থানীয় সরকার যেন জনগণের দোরগোড়ায় সেবা পৌঁছে দিতে পারে, সে জন্য প্রশাসনিক সেবার বিকেন্দ্রীকরণ জরুরি। যে সেবা ইউনিয়ন পর্যায়ে দেওয়া সম্ভব, তার জন্য যেন উপজেলায় যেতে না হয় এবং যে সেবা উপজেলা পর্যায়ে দেওয়া সম্ভব, তার জন্য যেন জেলা পর্যায়ে যেতে না হয়। সেবার ক্ষেত্রে জনগণের চাহিদার ভিত্তিতেই স্থানীয় সরকারের কর্মপরিধি নির্ধারণ করতে হবে।

এ ছাড়া পরিকল্পনা ও বাজেট প্রণয়নের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে। স্থানীয় সরকারের আর্থিক ব্যবস্থাপনা যাতে স্বচ্ছ হয়, সে জন্য পৃথক তহবিল গঠন করতে হবে এবং এটি স্থানীয় উৎস থেকে সংগ্রহ করা অর্থ ও রাষ্ট্রীয় বাজেটের ওপর নির্ভর করবে। বাজেট ব্যবহারের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে মনিটরিং কাউন্সিলের রিপোর্ট পাওয়ার পরই পরবর্তী বাজেট অনুমোদন করা উচিত।

চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের যুগে প্রবেশের ফলে স্থানীয় সরকারকেও ডিজিটালাইজেশন প্রক্রিয়ার আওতায় আনতে হবে। জনগণ যাতে সহজেই সরকারি সেবা গ্রহণ করতে পারে এবং সরকারি কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারে, সে জন্য স্থানীয় সরকারব্যবস্থাকে তথ্যপ্রযুক্তির সঙ্গে সমন্বয় করে আধুনিকায়ন করতে হবে।

স্থানীয় সরকারের সঙ্গে বৈদেশিক শ্রমবাজারের কার্যকর যোগাযোগ স্থাপন করতে হবে। বাংলাদেশের বৈদেশিক শ্রমবাজারে যাঁরা কাজ করতে যান, তাঁদের বড় অংশই গ্রামীণ অঞ্চল থেকে আসে। স্থানীয় সরকারকে তাই প্রতিটি অঞ্চলের কর্মসংস্থানের প্রকৃত চিত্র তুলে ধরে কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য কার্যকর পরিকল্পনা নিতে হবে। পাশাপাশি বিদেশি নিয়োগদাতাদের স্থানীয় পর্যায়ে সংযুক্ত করে কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে হবে।

স্থানীয় সরকারের নির্বাচনকে সরকারের প্রভাবমুক্ত রাখতে হবে। নির্বাচন কমিশন নির্ধারিত তারিখে দেশের সব স্তরের স্থানীয় সরকার নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে। নির্বাচনে দলীয় পরিচয় ও প্রতীক ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করতে হবে। এর মাধ্যমে জনপ্রতিনিধিদের নির্বাচিত করার ক্ষেত্রে দলীয় স্বার্থের পরিবর্তে জনস্বার্থকে অগ্রাধিকার দেওয়া যাবে।

এ ছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্যদের স্থানীয় সরকারের কোনো সিদ্ধান্ত গ্রহণ বা প্রশাসনিক কাজে সম্পৃক্ত হওয়ার সুযোগ রাখা যাবে না। তাদের ভূমিকা কেবল জাতীয় পর্যায়ে আইন প্রণয়ন এবং সরকারের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা পর্যন্ত সীমাবদ্ধ রাখা উচিত।

স্থানীয় সরকারব্যবস্থার আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন হওয়া উচিত, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচনের পদ্ধতিতে। সরাসরি জনপ্রতিনিধিদের ভোটে নির্বাচিত হওয়ার পরিবর্তে পরিষদের সদস্যদের রোটেশন বা ঘূর্ণায়মান পদ্ধতিতে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়া হলে স্থানীয় পর্যায়ে একনায়কতন্ত্রের ঝুঁকি হ্রাস পাবে।

স্থানীয় সরকারকে স্বশাসিত ও জনমুখী করতে হলে তার প্রশাসনিক কাঠামো পুনর্গঠন করতে হবে এবং তাকে কোনো সরকারি দপ্তরের অধীনস্থ না রেখে স্বতন্ত্রভাবে পরিচালিত করার নীতি গ্রহণ করতে হবে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের কাজ হবে স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে সহায়তা প্রদান করা, কিন্তু তাদের নিয়ন্ত্রণ করা নয়।

স্থানীয় সরকারের কার্যক্রম আরও স্বচ্ছ করার জন্য প্রতিটি পরিষদের অধিবেশনে নাগরিকদের উপস্থিত থাকার সুযোগ এবং প্রশ্ন করার অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি দরিদ্র জনগোষ্ঠীর আর্থিক উন্নয়নে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের কার্যকর ভূমিকা রাখতে হবে এবং তাঁদের সম্মানজনক ভাতা নিশ্চিত করতে হবে।

একটি শক্তিশালী স্থানীয় সরকার শুধু প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের উপায় নয়। এটি হলো গণতন্ত্রের প্রকৃত রূপ। এখানে ক্ষমতা জনগণের হাতে ফিরে যাওয়ার প্রয়াস শুরু হবে এবং জাতীয় রাজনীতির কর্তৃত্ববাদী প্রবণতা রুদ্ধ হবে বলে আশা করা যায়। একটি শক্তিশালী, স্বশাসিত ও কার্যকর স্থানীয় সরকারব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করা গেলে তা জাতীয় রাজনীতির ওপর নিয়ন্ত্রণ কমিয়ে আনবে, প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধি করবে এবং ক্ষমতার ভারসাম্য রক্ষা করবে।

স্থানীয় সরকার যদি সত্যিকার অর্থে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, তবে জনগণের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত হবে এবং জাতীয় রাজনীতি শুধু ক্ষমতা দখলের প্রতিযোগিতায় সীমাবদ্ধ না থেকে জনকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডে মনোযোগী হবে। স্থানীয় প্রশাসনের স্বচ্ছতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত হলে দুর্নীতি কমবে এবং জনগণের করের অর্থ যথাযথভাবে ব্যবহৃত হবে। তৃণমূল পর্যায়ে গণতন্ত্রের ভিত্তি শক্তিশালী হলে জাতীয় পর্যায়ের রাজনৈতিক সংকট ও অস্থিরতা অনেকাংশেই কমে আসবে। এ ছাড়া স্থানীয় পর্যায়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি হলে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন কমে আসবে এবং শহরকেন্দ্রিক চাপও হ্রাস পাবে। তাই স্থানীয় সরকারকে কার্যকর ও গণমুখী করা শুধু একটি নীতিই নয়, বরং এটি টেকসই উন্নয়ন এবং গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গঠনের জন্য এক অনিবার্য শর্ত।

আলাউদ্দীন মোহাম্মদ যুগ্ম সদস্যসচিব, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ক ন দ র য় সরক র র স থ ন য় সরক র র র স থ ন য় সরক র জ ত য় র জন ত র স থ ন য় পর য য় ন শ চ ত করত য় সরক র র ক ন শ চ ত কর সরক র র প কর ত ত ব র র জন য ক র যকর ক জ করত ব যবস থ জনগণ র প রবণত জন য প উপজ ল ক ষমত গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরতা, দেশজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান বর্বরতার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে সোমবার (৭ এপ্রিল) সারা দেশে বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে। রাইজিংবিডি ডটকমের নিজস্ব প্রতিবেদক, জেলা প্রতিনিধি ও সংবাদদাতাদের পাঠানো তথ্য ও ছবি নিয়ে প্রতিবেদন।

মিছিলে উত্তাল ময়মনসিংহ
গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে মিছিলে মিছিলে উত্তাল ময়মনসিংহ নগরী। সোমবার সকালে পূর্বঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষার্থীসহ সর্বস্তরের জনগণ নগরীর টাউন হল মোড়ে জড়ো হন। এ সময় মাথায় কালো কাপড় ও হাতে প্ল্যাকার্ড নিয়ে প্রতিবাদ জানানো হয়। ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি শফিকুল ইসলাম খান বলেন, “গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে শহরের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ কর্মসূচি সকাল থেকে চলমান রয়েছে। সেসব কর্মসূচি যেন শান্তিপূর্ণভাবে শেষ হয় সে লক্ষ্যে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।”

কক্সবাজারে মিছিল
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে এবং ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে কক্সবাজার জেলায় বিভিন্ন উপজেলা ও শহরে প্রতিবাদ মিছিল হয়েছে। সোমবার দুপুরে এসব মিছিল জেলার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বের হয়ে গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। কক্সবাজারের বিভিন্ন উপজেলায় স্থানীয় সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলোর উদ্যোগে এসব কর্মসূচি পালিত হয়।

আরো পড়ুন:

মার্কিন শুল্ক পুনর্বিবেচনা চেয়ে ট্রাম্পকে প্রধান উপদেষ্টার চিঠি

বাধ্যতামূলক ছুটিতে ইসলামী ব্যাংকের এমডি

কুষ্টিয়ায় বিক্ষোভ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আয়োজনে কুষ্টিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল হয়েছে। বিক্ষোভ মিছিলে অংশ নেন বিভিন্ন সংগঠন ও সাধারণ জনতা। সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুষ্টিয়া জেলা শাখার সভাপতি আলহাজ্ব আহমদ আলী, সাধারণ সম্পাদক জি এম তাওহীদ আনোয়ার প্রমুখ।

আশুলিয়ায় বিক্ষোভ
গাজার জনগণের প্রতি সংহতি জানাতে সাভারের আশুলিয়ায় বিক্ষোভ মিছিল করেছেন জাতীয় বস্ত্র প্রকৌশল ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (নিটার) শিক্ষার্থীরা। সোমবার দুপুরে ক্যাম্পাসের ‘ইয়ার্ন শেড’ প্রাঙ্গণ থেকে মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

কালীগঞ্জে বিক্ষোভ মিছিল 
গাজীপুরের কালীগঞ্জে ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ ও বিক্ষোভ কর্মসূচি হয়েছে। সোমবার কালীগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণের আয়োজনে সরকারি কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজ থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে কালীগঞ্জের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণে শেষে কালীগঞ্জ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে পথসভায় মিলিত হয়।

কিশোরগঞ্জে বিক্ষোভ
কিশোরগঞ্জে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ বিক্ষোভ কর্মসুচি অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার দুপুরে শহীদি মসজিদ চত্বরে কিশোরগঞ্জ সর্বস্তরের ছাত্র-জনতার উপস্থিতিতে প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সমাবেশ শেষে ‘মার্চ ফর প্যালেস্টাইন’ কর্মসূচিতে সবার অংশগ্রহণে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলে বিভিন্ন ধর্মীয়, রাজনৈতিক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ব‌্যানারে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেন। 

যশোরে বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনে চলমান নির্মম গণহত্যা ও আগ্রাসনের প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে যশোরের ছাত্র-জনতা। সকাল ১১টায় শহরের দড়াটানা ভৈরব চত্বরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ হয়। পরে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে যশোর ঈদগাহ মোড়ে গিয়ে শেষ হয়।

ফিলিস্তিনে হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদ নাটোরে
দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে ইসরাইলি পণ্য বর্জনের আহ্বান জানিয়ে নাটোরে ফিলিস্তিনি হত্যাযজ্ঞের প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মিছিল করেছে সর্বদলীয় তৌহিদি জনতা। কয়েক ঘণ্টাব্যাপী সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন হেফাজতে ইসলাম নাটোর জেলা সাধারণ সম্পাদক মাওলানা রফিকুল ইসলাম।

ধামরাইয়ে মিছিল-সমাবেশ 
ঢাকার ধামরাইয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদী সমাবেশ করেছে উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সাধারণ জনগণ অংশ নেয়। সোমবার উপজেলার থানা রোড এলাকায় ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের পাশে এসে জড়ো হয়ে প্রতিবাদ জানান তারা। পরে মিছিল নিয়ে ঢুলিভিটা হয়ে ধামরাই বাজারসহ পৌরসভার প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

নরসিংদীতে ক্লাস বর্জন 
গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেন নরসিংদীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত জেলা শহরের বিভিন্ন স্কুল কলেজসহ বিভিন্ন উপজেলার সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এ কর্মসূচি পালন করেন।

ঝিনাইদহে বিক্ষোভ
ফিলিস্তিনে হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে । সোমবার সকাল সাড়ে ১১ টার দিকে ঝিনাইদহবাসীর আয়োজনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়।

বিক্ষোভে উত্তাল রাঙামাটি
রাঙামাটিতে সকালে ‘নো ওয়ার্ক, নো ক্লাস’ কর্মসূচির পর দুপুরে শহরের বিভিন্ন এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে সাধারণ মানুষ শহরের দোয়েল চত্ত্বরে যোগ দেন। সেখানে প্রতিবাদকারীরা ইসরায়েল ও আমেরিকার বিরুদ্ধে শ্লোগান দেন। এছাড়া সকালে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি পালনের লক্ষ্যে রাঙাামটির বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে। এছাড়া শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।

গোপালগঞ্জে বিক্ষোভ
গোপালগঞ্জে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশে করেছেন বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী, বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও শ্রেণি-পেশার মানুষ। এছাড়া সমাবেশে বক্তারা ইসরাইল-আমেরিকান আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দেন।

[ প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন কাঞ্চন, মিলন, সাব্বির, রফিক, রুমন, রিটন, আরিফুল, হৃদয়, সোহাগ, শংকর, বাদল ও তারেকুর ]

ঢাকা/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরতা, দেশজুড়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ
  • গাজায় নির্যাতিতদের পক্ষে নোবিপ্রবি শিক্ষার্থীদের ক্লাস-পরীক্ষা বর
  • ঢাকা-দিল্লির পদক্ষেপই ঠিক করবে সম্পর্কের গতিপথ
  • রাজনৈতিক দলে সংস্কার যে কারণে জরুরি
  • ‘‘মিডিয়া ট্রায়াল বন্ধ করে দেন, জনগণ আস্ত একটা মিডিয়া’’
  • চলতি মাসেই কর্মসূচি নিয়ে মাঠে নামছে বিএনপি
  • শেখ হাসিনাকে ফেরত চাইল ঢাকা, দিল্লি চুপ
  • স্বাধীনতা কি তবে ছিনতাই হয়ে গেছে
  • বিএনপি নেত্রীকে ডিসির হুমকির অভিযোগ
  • ৩০০ আসনে প্রার্থী দেওয়ার চ্যালেঞ্জ নিতে প্রস্তুত এনসিপি: সারজিস আলম