ধর্ষণ-নিপীড়ন-সহিংসতার বিরুদ্ধে জাতীয় সংসদ ভবনের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন নারীরা। এতে অংশ নেন দুই শর বেশি নারী। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ‘নারী সহিংসতার বিরুদ্ধে নারী’ নামের একটি প্ল্যাটফর্মের উদ্যোগে এই মানববন্ধন হয়। সেখানে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর পদত্যাগের দাবি এবং নারীর অধিকার নিশ্চিত করাসহ নানা বক্তব্য সংবলিত প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে দাঁড়ান বিভিন্ন পেশার নারীরা। মানববন্ধন শেষে গান গেয়ে এবং ‘আজাদি, আজাদি’ স্লোগান দিয়ে শোভাযাত্রার মাধ্যমে কর্মসূচি শেষ করেন তাঁরা।

মানববন্ধন শেষে এর আয়োজকদের দেওয়া এক বার্তায় বলা হয়, ‘বাংলাদেশে নারীদের নিরাপত্তা এখন একটি প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সাম্প্রতিক মাসগুলোতে দেশজুড়ে সমাজের সব স্তরের নারীদের ওপর হয়রানি, নির্যাতন, ধর্ষণ, গণপিটুনি ও সাইবার বুলিংয়ের উদ্বেগজনক ঘটনা ঘটছে। এগুলোকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা হিসেবে দেখার সুযোগ নেই; বরং এটি নারীদের বিরুদ্ধে একটি সুপরিকল্পিত সহিংসতা ও ভয় দেখানোর ধারাবাহিক প্যাটার্নের অংশ।’

বার্তায় আরও বলা হয়, এর মধে৵ ঢাকার শ্যামলীতে যৌনকর্মীদের ওপর হামলা, লালমাটিয়ায় দুই শিক্ষার্থীকে জনসমক্ষে নির্যাতন ও হয়রানি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের কর্মীর এক শিক্ষার্থীকে হয়রানির ঘটনা, কক্সবাজারে হিজড়াদের ওপর হামলা, রংপুর ও জয়পুরহাটে মেয়েদের ফুটবল মাঠে আক্রমণ, আদিবাসী নারীদের ওপর অব্যাহত নিপীড়ন এবং ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় নারীদের ওপর প্রতিদিনের হয়রানি, এমনকি নিষ্ঠুর ‘মব অ্যাটাক’ (দলবদ্ধ হামলা) উল্লেখযোগ্য। নারীদের প্রতি সহিংসতার পাশাপাশি দেশের অন্যান্য প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ওপরও প্রতিশোধমূলক হামলা, হুমকি ও সংগঠিত ‘মব অ্যাটাক’ এখন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।

এসব ঘটনায় সরকারের প্রতিক্রিয়া কেবল মুখের কথায় পরিণত হয়েছে অভিযোগ করে বার্তায় বলা হয়েছে, ‘স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী এবং পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের বিবৃতিগুলো নারীদের আশ্বস্ত করার পরিবর্তে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করেছে। ভুল তথ্য, আইন ও বাস্তবতা সম্পর্কে বিভ্রান্তি তাদের বক্তব্যে স্পষ্ট, যা কিনা ঘটনার বিচার না করে বরং অপরাধীদের রক্ষা করেছে।’

নারীদের এই সমাবেশ থেকে পাঁচটি দাবি জানানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাকে অপসারণ, সাইবার বুলিং বন্ধ ও অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা এবং গণমাধ্যমে ভুল তথ্য প্রচার বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ন র দ র ওপর উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া নিয়ে ছাত্রদলের দু’পক্ষে সংঘর্ষ, আহত ৯

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পদবঞ্চিত এক ছাত্রদল নেতার ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া নিয়ে সংগঠনের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ৯ জন আহত হয়েছেন। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার চৌমুহনী সরকারি এস এ কলেজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। 

সংঘর্ষের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বেগমগঞ্জ থানার ওসি লিটন দেওয়ান ও ছাত্রদলের নেতারা। 

একাধিক সূত্রে জানা গেছে, কয়েক দিন আগে কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাকের আহমেদ সবুজ চৌমুহনী সরকারি সালেহ আহমেদ কলেজ ছাত্রদলের নতুন ঘোষিত কমিটির সমালোচনা করে ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দেন। সেখানে কমেন্ট করেন কলেজ ছাত্রদলের বর্তমান সভাপতি ইয়াসিন হৃদয়। আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি হৃদয়ের নেতৃত্বে কলেজ প্রাঙ্গণে ফিলিস্তিনের গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে প্রতিপক্ষ ছাত্রদল নেতা প্রান্ত, রাফি ও তমাল কলেজ প্রাঙ্গণে পাল্টা বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। এতে দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

কলেজ শাখা ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. শাকের আহমেদ সবুজের অভিযোগ, ফেসবুকে স্ট্যাটাস ও পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির জেরে হৃদয় তাঁর ওপর ক্ষিপ্ত হন। তাঁরই নেতৃত্বে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তাঁর (সবুজ) দোকানে হামলা চালিয়ে তাঁকে ছুরিকাঘাত করেন। পুলিশ এলে তাদের সামনে হৃদয়ের অনুসারী ছাত্রদল নেতা তারেকুল ইসলাম তারেক তাঁর ওপর আবার হামলা চালান।

অভিযোগ অস্বীকার করে কলেজ ছাত্রদলের সভাপতি ইয়াসিন হৃদয় দাবি করেন, কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে তাঁর নেতৃত্বে আজ সকালে কলেজ প্রাঙ্গণে গাজায় দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়। সেখানে বহিরাগত সবুজের নেতৃত্বে হামলা চালিয়ে তাঁকে ছুরিকাঘাত করা হয়। এতে তিনিসহ ছাত্রদলের তিনজন নেতাকর্মী আহত হন। তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।

নোয়াখালী জেলা যুবদলের সভাপতি মনজুরুল আজিম সুমন বলেন, বহিরাগত একদল যুবক ছাত্রদলের নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালিয়েছে। তিনি এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনার দাবি করেন। 

বেগমগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামাক্ষা চন্দ্র দাস বলেন, ‘বহিরাগত কয়েকজন যুবক কলেজে ছাত্রদল নেতাকর্মীর ওপর হামলা চালায় বলে শুনেছি। এর বেশি কিছু আমার জানা নেই।’

এ বিষয়ে বেগমগঞ্জ থানার ওসি লিটন দেওয়ান বলেন, ছাত্রদলের নতুন কমিটি নিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাসের সূত্র ধরে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়েছে। তবে কতজন আহত হয়েছে, এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দশম শ্রেণির ছাত্রীকে বিয়ে করলেন প্রধান শিক্ষক; তদন্তে কমিটি
  • ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেওয়া নিয়ে ছাত্রদলের দু’পক্ষে সংঘর্ষ, আহত ৯
  • গাজায় গণহত্যা: বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে থেমে নেই প্রতিবাদ
  • চট্টগ্রামে পদোন্নতি বঞ্চিত ফরেস্টার ও ফরেস্ট গার্ডদের মানবন্ধন
  • শিশু তাবিবের হাতে প্ল্যাকার্ড ‘বাবা হত্যার বিচার চাই’
  • লবণের ন্যায্যমূল্য চায় এনসিপি
  • তিন নদীতে দেদার বালু উত্তোলন ভাঙনের ঝুঁকিতে বাড়িঘর
  • গবি শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলার অভিযোগ, প্রত্যাহার দাবি
  • ভারতে ওয়াক্‌ফ বিল পাসের নিন্দা জানাল ছাত্রশিবির
  • রংপুরে ফরম পূরণ করেও প্রবেশপত্র পায়নি ৭৩ এসএসসি পরীক্ষার্থী, মানববন্ধন