ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে হিযবুত তাহ্রীর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ, ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি
Published: 7th, March 2025 GMT
নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহ্রীরের প্রকাশ্য কার্যক্রম ঠেকাতে রাষ্ট্রীয় বাহিনীর ব্যর্থতার অভিযোগ এনে তার প্রতিবাদে বিক্ষোভ–সমাবেশ করেছে বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ। শুক্রবার সন্ধ্যায় টিএসসির রাজু ভাস্কর্যের সামনে এ বিক্ষোভ সমাবেশ করে তারা।
এ সময় সমাবেশ থেকে ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দিব রক্ত’, ‘আপস না সংগ্রাম, সংগ্রাম সংগ্রাম’, ‘উগ্রবাদের ঠিকানা, এ বাংলায় হবে না’, ‘সন্ত্রাসবাদের ঠিকানা, এ বাংলায় হবে না’, ‘উগ্রবাদ নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তি পাক’, ‘সন্ত্রাসবাদ নিপাত যাক, গণতন্ত্র মুক্তিপাক’, ‘গোলামী না আজাদী, আজাদী আজাদী’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেওয়া হয়।
সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আহ্বায়ক আবদুল কাদের বলেন, ‘হাসিনার ফ্যাসিবাদী আমলের পতনের পর থেকে হিজবুত তাহ্রীর মতো অনেকগুলো জঙ্গি সংগঠনের তৎপরতা বেড়ে গেছে। যারা আগের মতো হাসিনার সেই বাকশালি থিওরি বাস্তবায়ন করছে, যারা হাসিনার মতবাদকে লালন করবে, তাদের পরিণত হাসিনার মতোই হবে।’
আবদুল কাদের বলেন, ‘আমরা দেখেছি, হিজবুত তাহ্রীর উগ্রবাদের চর্চা করেন। আমরা ৫ আগস্টের পর থেকে দেখছি, তাদের দৌরাত্ম্য আরও বেড়ে গেছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা কী? আমরা আজকে বলতে চাই, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তাদের গ্রেপ্তার করে তদন্তের আওতায় আনতে হবে। একই সঙ্গে তাদের মদদদাতাদেরও গ্রেপ্তার করতে হবে।’
বিক্ষোভ সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখ্য সংগঠক হাসিব আল ইসলাম বলেন, কয়েক দিন ধরে হিজবুত তাহ্রীরের মতো জঙ্গি সংগঠন তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছে। আজকে তারা বায়তুল মোকাররম মসজিদ থেকে মিছিল করেছে, যা উদ্বেগজনক।
দীর্ঘ ছয় মাস পরও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার জনগণের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে উল্লেখ করে হাসিব আল ইসলাম বলেন, ‘আজকে আমরা দেখেছি, পুলিশ প্রশাসন নামমাত্র তাদের বাধা প্রদান করেছে। আমরা বলে দিতে চাই, এ বাংলায় উগ্রবাদের কোনো ঠাঁই হবে না।’
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার মুখপাত্র রাফিয়া রেহনুমা হৃদি বলেন, ‘আমরা দেখতে পাচ্ছি, ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্য বিভিন্ন পাঁয়তারা চলছে। যারা ধর্মকে ব্যবহার করে নারীদের অসম্মান করে, যৌন হয়রানি করে, ধর্ষণ করে, তাদের এ দেশে রাজনীতি করতে দেওয়া হবে না।’
গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের মুখ্য সংগঠক তাহমিদ আল মুদ্দাসসির চৌধুরী বলেন, ‘আমরা অসংখ্য মানুষের জীবন দিয়ে এ স্বাধীনতা পেয়েছি জঙ্গিবাদের আখড়া বানাতে নয়। আজকে যখন হিজবুত তাহ্রীর বায়তুল মোকাররমের সামনে মিছিল করছে, তখন পুলিশ তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আমরা দেখছি, সেনাবাহিনীকে ম্যাজিস্ট্রেসি পাওয়ার দেওয়া হয়েছে। তারপরও তারা কেন কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না, তার জবাব দিতে হবে।’
সমাবেশে গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতা–কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশ পরিচালনা করেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় মুখপাত্র আশরেফা খাতুন।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
কোনও মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।
তিনি বলেন, কোনও মহামানব কোনও দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।
এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।
পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।
বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।
আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।
তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা?
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।