ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গা উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক আবদুল্লাহ্ আল মিলনের (২৬) বিরুদ্ধে কলেজছাত্রী তরুণীকে (১৯) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে ওই তরুণী বাদী হয়ে আলফাডাঙ্গা থানায় আবদুল্লাহ্ আল মিলন ও তাঁর দুই সহযোগীকে আসামি করে মামলাটি করেন।

অভিযুক্ত আবদুল্লাহ্ আল মিলন আলফাডাঙ্গা পৌর এলাকার কলেজ রোড এলাকার বাসিন্দা। মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ওই তরুণীর সঙ্গে এক তরুণের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহ্ আল মিলন সেই প্রেমে বাধা দেন। এ ব্যাপারে আলোচনার জন্য বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই তরুণী মিলনের বাড়িতে যান। মিলন ঘরের ভেতরে নিয়ে তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা চালান। এ সময় তরুণীর চিৎকারে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে মিলন নিরাপদ স্থানে চলে যান।

ওই দিন রাতেই ওই তরুণী বাদী হয়ে আবদুল্লাহ আল মিলন ও তাঁর দুই সহযোগী রবিউল ইসলাম (৩৪) এবং সোহেল শেখের (৩৩) নামে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মামলা করেন। অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আবদুল্লাহ্‌ আল মিলন বলেন, তিনি ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছেন। রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য প্রতিপক্ষ তাঁকে ফাঁসিয়েছে।

জেলা ছাত্রদলের সভাপতি সৈয়দ আদনান হোসাইন বলেন, ‘এ ঘটনার ভিডিও আমার কাছে এসেছে এবং বিষয়টি ফেসবুকেও দেখেছি। এটা ষড়যন্ত্র না সত্য, খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনাটি সত্য হলে ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’

আলফাডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হারুন-অর রশীদ বলেন, কলেজছাত্রী ধর্ষণচেষ্টার লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে আবদুল্লাহ্‌ আল মিলনসহ তাঁর দুই সহযোগীর নামে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আবদ ল ল হ আলফ ড ঙ গ ছ ত রদল

এছাড়াও পড়ুন:

জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখলেন বিনিয়োগকারীরা

নারায়ণগঞ্জে বাংলাদেশ স্পেশাল ইকোনমিক জোন (বিএসইজেড) ঘুরে দেখলেন বিদেশি বিনিয়োগকারীরা। গতকাল মঙ্গলবার চীন, জাপান, যুক্তরাষ্ট্র, ভারতসহ সাতটি দেশের ৩৬ জন বিনিয়োগকারী ও ব্যবসায়ী প্রতিনিধি সেখানে যান। সেখানকার বিনিয়োগ পরিবেশ, পণ্য সরবরাহ ব্যবস্থা ও অবকাঠামো বিষয়ে খোঁজখবর নেন তারা। বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) উদ্যোগে আড়াইহাজারে বিএসইজেড বা জাপানি অর্থনৈতিক অঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। এর আগে সোমবার তারা চট্টগ্রামে দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল ঘুরে দেখেছেন।  
বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিটে অংশ নিতে আসা বিনিয়োগকারীদের এই দলটিতে ছিলেন চীনের ১০ জন, জাপানের তিনজন, সৌদি আরবের তিনজন, সংযুক্ত আরব আমিরাতের তিনজন, যুক্তরাষ্ট্রের আটজন, ভারতের একজন প্রতিনিধি। এ ছাড়া এনআরবি বা অনিবাসী বাংলাদেশি ব্যবসায়ী ছিলেন আটজন। তারা সেখানে অবস্থিত সিঙ্গারের কারখানায় যান। এরপর তারা বিএসইজেডের বিনিয়োগ পরিবেশ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে খোঁজখবর নেন। 

বিনিয়োগ সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা তুলে ধরে বিএসইজেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তারো কাওয়াচি বলেন, বিশেষ এই অর্থনৈতিক অঞ্চলে আন্তর্জাতিক মানের উন্নত সব পরিষেবা রয়েছে। পণ্য ও কাঁচামাল আমদানির সুবিধার জন্য অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভেতরেই দেওয়া হয়েছে বন্ডেড ট্রান্সপোর্ট ব্যবস্থা। ফলে বন্দরে কাস্টমস ক্লিয়ারেন্সের প্রয়োজন হয় না। 
বিএসইজেডে উৎপাদনে থাকা সিঙ্গারের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, মাত্র ২০ মাসে প্রতিষ্ঠানটি নির্বিঘ্নে তাদের কারখানা নির্মাণকাজ শেষ করেছে। বিনিয়োগ করেছে ৭ কোটি ৮০ লাখ ডলার। কারখানাটিতে সিঙ্গার মাসে ৫০ হাজার ফ্রিজ ও ১০ হাজার পিস টেলিভিশন তৈরি করছে।

পরিদর্শনকালে চীনা মালিকানার তথ্যপ্রযুক্তি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান জিনিউ বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী (সিইও) নিকোলাস কি বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের যেমন সম্ভাবনা রয়েছে, তেমনি অনেক চ্যালেঞ্জও রয়েছে। মূল সমস্যা হচ্ছে সরকারের নীতির ধারাবাহিকতা না থাকা। বিনিয়োগ করার পর নীতি পরিবর্তনে সমস্যায় পড়ে বিনিয়োগ। তবে অন্তর্বর্তী সরকার কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ নিয়েছে।  
চীনের জ্বালানি খাতের প্রতিষ্ঠান গ্রিন অ্যান্ড স্মার্ট এনার্জি অর্গানাইজেশনের সেক্রেটারি জেনারেল উইও জিয়ানবো বলেন, বিএসইজেডের ভেতরের অবকাঠামো বিনিয়োগ উপযোগী। সিঙ্গার বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এইচএম ফাইরোজ বলেন, বিশ্বের সব জায়াগাতেই নানা চ্যালেঞ্জ রয়েছে। তবে বাংলাদেশে ইতিবাচক উন্নয়ন দেখা যাচ্ছে। 
এদিন নিলর্ন বাংলাদেশ নামে সুইডেনের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সমঝোতা চুক্তি করেছে বিএসইজেড কর্তৃপক্ষ। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, বাংলাদেশে তাদের একটি পোশাক কারখানা আছে। বিএসইজেডে গার্মেন্টস অ্যাকসেসরিজ উৎপাদনের জন্য আরও বড় পরিসরে বিনিয়োগ করতে চান তারা। ধাপে ধাপে ১ কোটি ৪০ লাখ ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগ করার পরিকল্পনা রয়েছে তাদের। 
পরিদর্শন শেষে প্রধান উপদেষ্টার উপ প্রেস সচিব আবুল কালাম আজাদ মজুমদার বলেন, গত দু’দিন বিনিয়োগকারীরা অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো দেখে সন্তুষ্ট। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অতীতে যেসব চ্যালেঞ্জ ছিল, অন্তর্বর্তী সরকার তা দূর করার চেষ্টা করছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ