মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দের পূণ্য স্নান উদযাপনে মতবিনিময় সভা
Published: 7th, March 2025 GMT
সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দের অষ্টমী স্নান আগামী ৪ ও ৫ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার বন্দর উপজেলাধীন লাঙ্গলবন্দ এলাকায় অবস্থিত ব্রহ্মপুত্র নদে অনুষ্ঠিত এই পূণ্য স্নানে দেশ-বিদেশ থেকে কয়েক লক্ষ পূণ্যার্থী অংশগ্রহণ করে থাকেন।
এবারের মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ অষ্টমী স্নান সুষ্ঠুভাবে উদযাপনের লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শুক্রবার (৭ মার্চ) সকাল এগারোটায় শহরের চাষাড়াস্থ শ্রী গোপাল জিউর বিগ্রহ মন্দির প্রাঙ্গণে মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ স্নান উদযাপন পরিষদের উদ্যোগে এই সভার আয়োজন করা হয়।
এ সময় পূণ্য স্নানে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সেবা ক্যাম্পের প্রতিনিধিগণ তাদের সমস্যাগুলো তুলে ধরেন এবং উপস্থিত কর্তৃপক্ষ তা লিপিবদ্ধ করেন ও সমাধানের আশ্বাস দেন।
মতবিনিময় সভায় বক্তরা বলেন, মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ পূণ্য স্নান সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য সকল ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ উৎসবকে সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পালন করতে সকলেই নিজ নিজ অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করবে বলে আশা ব্যক্ত করেন। সেই সাথে আগত পুন্যার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সকলকে সচেতন থাকার আহ্বান জানান।
মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ অষ্টমী পূর্ণ স্নান উদযাপন পরিষদের সভাপতি সরোজ কুমার সাহার সভাপতিত্বে ও নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শিখণ সরকার শিপনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের উপদেষ্টা বাসুদেব চক্রবর্তী, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট এর সাবেক ট্রাস্টি পরিতোষ কান্তি সাহা, বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় গীতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিজন কান্তি ধর, কেন্দ্রীয় ভক্ত সেবা সংঘের সভাপতি শ্রী শান্তি রঞ্জন বাবু, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান কল্যাণ ফ্রন্ট কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহবায়ক সঞ্জিব কর্মকার জয়, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি সাংবাদিক শংকর কুমার দে, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বিষ্ণুপদ সাহা, সাধারণ সম্পাদক সুশীল দাস, সহ-সভাপতি সাংবাদিক উত্তম সাহা, কেন্দ্রীয় ছাত্র মহাসংঘের সভাপতি সজীব কুন্ড তপু, বাংলাদেশ হিন্দু সংস্কার সমিতির যুগ্ম সম্পাদক রতন পাল, দীপক পাল, এন ঘোরামী, জাতীয় হিন্দু মহাজোট কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি অভয়ে রায় জেলার সভাপতি এডভোকেট রঞ্জিত চন্দ্র দে, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি তিলোত্তমা দাস, তাপস কর্মকার, প্রদীপ সরকার, বিশ্বজিৎ সাহা, তারক ঘোষ, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি হিমাদ্রি সাহা হিমু, সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি শিশির ঘোষ অমর, সোনারগাঁ থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট প্রদীপ ভৌমিক, বন্দর থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল বিশ্বাস, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের দপ্তর সম্পাদক অভিরাজ সেন সজল, পূজা পরিশোধ নেতা তপন ঘোষ, তপন গোপ সাধু, মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাংগঠনিক সম্পাদক কৃষ্ণ আচার্যসহ মহাতীর্থ লাঙ্গলবন্দ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সেবা ক্যাম্পের প্রতিনিধি এবং সনাতন ধর্মাবলম্বী নেতৃবৃন্দ।
এ সময় নারায়ণগঞ্জ জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাবেক সভাপতি দীপক কুমার সাহার সদ্য প্রয়াত পুত্র দীপেন সাহা এবং নারায়ণগঞ্জ জেলা হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রয়াত সভাপতি গোপীনাথ দাসের আত্মার শান্তি কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
উৎস: Narayanganj Times
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ন র য়ণগঞ জ জ ল অন ষ ঠ ত
এছাড়াও পড়ুন:
নারায়ণগঞ্জে ছাত্রদলের সাবেক নেতা জাকির কারামুক্ত, গাড়িবহর নিয়ে অনুসারীদের বরণ
নারায়ণগঞ্জ জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি জাকির খান সাজার মেয়াদ শেষে কারামুক্ত হয়েছেন। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় নারায়ণগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে কারামুক্ত হন তিনি।
এদিকে জাকির খানকে বরণ করে নিতে তাঁর অনুসারীরা মোটরসাইকেল ও প্রাইভেট কার নিয়ে জেলা কারাগারের সামনে অবস্থান নেন। এতে ওই এলাকায় যানজটের সৃষ্টি হয়।
জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক ফোরকান ওয়াহিদ জানান, ১৯৯৪ সালের সন্ত্রাস দমন আইনের একটি মামলার রায়ে জাকির খানের ১৪ বছরের সাজা হয়েছিল। আপিল করার পর উচ্চ আদালতে সাজা কমিয়ে আট বছর করা হয়। পরে সুপ্রিম কোর্টে রিভিউ আবেদনে তাঁর সাজা কমে পাঁচ বছর করা হয়। পাঁচ বছরের সাজার মেয়াদ শেষে আজ রোববার সকালে জাকির খানকে কারামুক্ত করে দেওয়া হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, জাকির খানের মুক্তির খবরে আজ সকাল থেকে তাঁর অনুসারীরা মোটরসাইকলে ও প্রাইভেট কারের বহর নিয়ে জেলা কারাগারের সামনে অবস্থান নেন। নেতা-কর্মীরা ট্রাকে সাউন্ড বক্স লাগিয়ে উচ্চ শব্দে গান বাজিয়ে মোটরসাইকেলের বহর বের করেন। জেলা কারাগারের সামনে নেতা-কর্মীদের ভিড় হয়। এতে ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ লিংক রোডে যানজটের সৃষ্টি হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কারাগার থেকে বের হন জাকির খান। এ সময় তাঁর অনুসারীরা তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন। পরে তিনি হুডখোলা গাড়িতে চড়ে নারায়ণগঞ্জ শহরে দেওভোগের বাড়ির উদ্দেশে রওনা হন।
থানা-পুলিশ সূত্রে জানা যায়, জাকির খানের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম খন্দকার হত্যাসহ ৪টি হত্যাসহ মোট ৩৩টি মামলা রয়েছে। এসব মামলায় বিভিন্ন সময় কারাগারে ছিলেন তিনি। কারাগার থেকে মুক্তি পাওয়ার পর জাকির খান আবারও বেপরোয়া হয়ে ওঠেন। শহরের দেওভোগ এলাকায় জাকির খান তাঁর বিশাল বাহিনী গড়ে তোলেন। দেওভোগ এলাকার সন্ত্রাসী দয়াল মাসুদকে হত্যা করে শহরে ত্রাস সৃষ্টি করেন। ২০০৩ সালে ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম হত্যাকাণ্ডের পর থেকে গ্রেপ্তার এড়াতে জাকির খান দেশ ছেড়ে থাইল্যান্ডে পাড়ি জমান। তিনি দীর্ঘদিন বিদেশে পালিয়ে থাকার পর গোপনে দেশে ফিরে এসে রাজধানীর বসন্ধুরা আবাসিক এলাকায় পরিচয় গোপন করে সপরিবার বসবাস শুরু করেন। ২০২২ সালের ৩ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় অভিযান চালিয়ে বিদেশি পিস্তলসহ জাকির খানকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। এর পর থেকে নারায়ণগঞ্জ কারাগারে ছিলেন তিনি। সর্বশেষ চলতি বছরের ৭ জানুয়ারি ব্যবসায়ী নেতা শাব্বির আলম হত্যা মামলার রায়ে জাকির খানসহ সব আসামি খালাস পান।
এ বিষয়ে পুলিশ সুপার (এসপি) প্রত্যুষ কুমার মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, সাজা শেষে জাকির খান কারামুক্ত হয়েছেন। তিনি ২৬টি মামলায় খালাস পেয়েছেন। তিনটি মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে, সেই মামলাগুলোতে তিনি জামিনে রয়েছেন।