এশিয়ান কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপে সর্বশেষ ২০০৫ সালে ব্রোঞ্জ জিতেছিল বাংলাদেশ নারী কাবাডি দল। দীর্ঘ দুই দশক পর আজ তেহরানে ষষ্ঠ এশিয়ান নারী কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপে ব্রোঞ্জপদক জিতেছেন বাংলাদেশের মেয়েরা।

শুক্রবার গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে থাইল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশ জেতে ৪২-২৭ পয়েন্টে। তবে সেমিফাইনালে স্বাগতিক ইরানের কাছে হেরে যায় ৪১-১৮ পয়েন্টে। কাল ফাইনালে সোনার লড়াইয়ে ভারতের প্রতিপক্ষ ইরান।

এবার ভারতের কাছে হার দিয়ে টুর্নামেন্ট শুরু করেছিল বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ম্যাচে মালয়েশিয়াকে ৫২-১২ পয়েন্টে উড়িয়ে সেমিফাইনালের আশা জিইয়ে রাখে তারা। সেমিফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে বাংলাদেশের শুরুটাও হয় দারুণ। প্রথমার্ধে ৯ পয়েন্টের ব্যবধানে এগিয়ে যান রেখা–রুপালিরা। ২২-১৩ পয়েন্টে এগিয়ে থেকে বিরতিতে যায় বাংলাদেশ।

দ্বিতীয়ার্ধেও একই ছন্দ ধরে রাখে বাংলাদেশ। যে কারণে অনেক চেষ্টা করেও ম্যাচে ফেরা হয়নি থাইল্যান্ডের। শেষ পর্যন্ত ৪২-২৭ পয়েন্টে থাইল্যান্ডকে হারিয়ে শেষ চারে নাম লেখায় বাংলাদেশ। কিন্তু ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে শক্তিশালী ইরানের সামনে দাঁড়াতেই পারেননি মেয়েরা। দিনের আরেক সেমিফাইনালে নেপালকে রীতিমতো ৫৬-১৮ পয়েন্টে বিধ্বস্ত করে ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করেছে চারবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত।

বাংলাদেশের জাতীয় খেলা কাবাডি হলেও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নেই আগের জৌলুস। এশিয়ান কাবাডিতে ছেলেরা সর্বশেষ পদক জিতেছিলেন ১৯৮৮ সালে আর এশিয়ান গেমসে ২০০৬ সালে। সেই তুলনায় এশিয়ান পর্যায়ে মেয়েদের এই সাফল্য ভবিষ্যতে আরও বড় কিছুর আশা জাগানোর মতোই।

বাংলাদেশ নারী কাবাডি দলের কোচ শাহনাজ পারভীন মালেকাও তাই উচ্ছ্বসিত, ‘এটা বাংলাদেশের কাবাডির জন্য গর্বের একটা মুহূর্ত। খেলোয়াড় হিসেবে আমি এই টুর্নামেন্টে অংশ নিলেও পদক জিততে পারিনি। এবার কোচ হিসেবে আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হলো।’

১৯৮০ সাল থেকে হচ্ছে এশিয়ান কাবাডি চ্যাম্পিয়নশিপ। যদিও নারীদের অংশগ্রহণ ২০০৫ থেকে। আগের পাঁচবারের চারবারই সোনা জেতে ভারত। একবার চ্যাম্পিয়ন হয় দক্ষিণ কোরিয়া। আর প্রথম আসরে অংশ নিয়েই বাংলাদেশের মেয়েরা ব্রোঞ্জ নিয়ে দেশে ফেরেন। সেবার ভারতের হায়দরাবাদে টুর্নামেন্টের সেমিফাইনালে জাপানের কাছে ৩৮–১৪ পয়েন্টে হেরেছিলেন তাঁরা। এরপর ২০০৭, ২০১৬ ও ২০১৭ সালে আর অংশ নেয়নি বাংলাদেশ।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ম ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

প্রতিদ্বন্দ্বী নেই, সব পদে জয়ী বিএনপি-জামায়াতপন্থিরা

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াতপন্থি প্যানেলের বিরুদ্ধে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সব পদে বিজয়ী হতে যাচ্ছেন তারা। গতকাল শনিবার চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে একক প্রার্থী হিসেবে বিএনপি-জামায়াতপন্থি প্যানেলের নাম ঘোষণা করা হয়। এখনও তাদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করেনি নির্বাচন কমিশন। 

গত ১০ এপ্রিল মনোনয়নপত্র কেনার শেষ দিনে মনোনয়নপত্র কিনতে গিয়ে দুই দফায় বাধার মুখে পড়ে ফরম কিনতে পারেননি আওয়ামী লীগ ও বাম ঘরানার আইনজীবীরা। তারা আইনজীবী সমিতির অ্যাডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশনের কাছে এ নিয়ে অভিযোগ দিলেও কোনো সমাধান হয়নি। আইনজীবী সমিতির ১৩২ বছরের ইতিহাসে এবারই প্রথম বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সব ক’টি পদে নির্বাচিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে।

চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির মুখ্য নির্বাচনী কর্মকর্তা তারিক আহমদ বলেন, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ২১ পদের বিপরীতে যাচাই-বাছাই শেষে ২১ জনের মনোনয়ন বৈধ বলে ঘোষণা করা হয়েছে। তাদের কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকায় একক প্রার্থী হিসেবে তাদের বিজয়ী বলা যায়। আগামী ১৬ এপ্রিল সমিতির নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও তার আর প্রয়োজন হবে না। তিনি আরও বলেন, বার লাইব্রেরিতে মনোনয়ন ফরম বিক্রি ও জমা নেওয়া হয়েছে। রুমের বাইরে কী হয়েছে তা আমরা জানি না।

আওয়ামী লীগসমর্থিত সভাপতি প্রার্থী সাবেক মহানগর পিপি আবদুর রশীদ বলেন, ফরম বিক্রির শেষ দিন আমাদের দুই দফায় ফরম কিনতে বাধা দিয়েছেন বিএনপি-জামায়াতপন্থি আইনজীবীরা। এ নিয়ে অ্যাডহক কমিটি ও নির্বাচন কমিশন বরাবর লিখিত অভিযোগ দিলেও এর কোনো সুরাহা হয়নি। কয়েকজন ঐতিহ্যবাহী আইনজীবী সমিতির সোনালি ইতিহাস কলঙ্কিত করলেন। যারাই বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়ে ওই চেয়ারে বসবেন, তারা ওই চেয়ারকে কলুষিত করবেন।

বিএনপিপন্থি সভাপতি প্রার্থী সাবেক মহানগর পিপি অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তারকে ফোন করলেও তিনি ফোন ধরেননি। 

বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হচ্ছেন সভাপতি পদে অ্যাডভোকেট আবদুস সাত্তার, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান আলী চৌধুরী, সহসভাপতি আলমগীর মোহাম্মদ ইউনূস, সহসাধারণ সম্পাদক ফজলুল বারী, অর্থ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, পাঠাগার সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আশরাফি বিনতে মোতালেব, ক্রীড়া সম্পাদক ম. মঞ্জুর হোসেন এবং তথ্য ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক আবদুল জব্বার; ১১ নির্বাহী সদস্য– আহসান উল্ল্যাহ মানিক, আসমা খানম, বিবি ফাতেমা, হেলাল উদ্দিন, মেজবাহ উল আলম আমিন, রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী, রুবাইয়াতুল করিম, শাহেদ হোসেন, মোহাম্মদ মোরশেদ, রাহিলা গুলশান ও সাজ্জাদ কামরুল হোসেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ