দুই মাস আগে কেনা মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে গেল প্রাণ
Published: 7th, March 2025 GMT
পাঁচ মাস আগে দুবাই থেকে দেশে ফিরেছিলেন প্রবাসী প্রিয়তোষ বণিক (৪৫)। দুই মাস আগে তিনি একটি মোটরসাইকেল কেনেন। আজ শুক্রবার বিকেল চারটার দিকে চট্টগ্রাম নগরের সাগরিকা এলাকায় সেই মোটরসাইকেল থেকে ছিটকে পড়ে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, নগরের সাগরিকা মোড়ে মোটরসাইকেল চালিয়ে যাওয়ার সময় ছোট ছোট পাথরের ওপর চাকা পড়লে নিয়ন্ত্রণ হারান প্রিয়তোষ বণিক। ছিটকে তিনি পিকআপ ভ্যানের নিচে চলে যান। আহত অবস্থায় চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে তাঁর মৃত্যু হয়। মৃত্যুর খবর প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ নুরুল আলম।
প্রিয়তোষ বণিককে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা শহীদুল আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মোটরসাইকেল চালিয়ে সাগরিকা মোড় পার হচ্ছিলেন প্রিয়তোষ বণিক। সড়কের ওপর কিছু পাথরের টুকরা পড়ে ছিল। পাথরের এসব টুকরার ওপর চাকা পড়লে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে তিনি ছোট পিকআপ ভ্যানের নিচে চলে যান। পরে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়।
প্রিয়তোষ বণিকের ভাগনে অপু চৌধুরী প্রথম আলোকে জানান, নিহতের বাড়ি বোয়ালখালী উপজেলায়। পরিবারে স্ত্রী, এক ছেলে ও তিন মেয়ে রয়েছে। এক মেয়ের বিয়ে হয়েছে। দুই মেয়ে পড়াশোনা করছেন। ছেলে বেশ কয়েক বছর যাবৎ দুবাই থাকেন। পাঁচ মাস আগে দুবাই থেকে দেশে ফিরেছিলেন তাঁর মামা। আর দুই মাস আগে কেনা মোটরসাইকেলটি নিয়ে ঘর থেকে বের হয়েছিলেন।
অপু চৌধুরী বলেন, গ্রাম থেকে ব্যক্তিগত কাজে শহরে এসেছিলেন তাঁর মামা। বিকেলে হঠাৎ দুর্ঘটনার খবর পান। এর পর থেকে পুরো পরিবার এলোমেলো হয়ে গেছে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
‘ও খোদা, এই ট্রাক দি আঁই কিরমু’
সড়কের ওপর কলাপাতায় ঢাকা ছেলের মরদেহ পড়ে আছে। সেখানে ছুটে এসে আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলেন না মো. রিয়াদ। যে ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে তাঁর ১৬ বছর বয়সী ছেলে অনীক মারা গেছে, সেটির মালিক তিনি নিজেই। ট্রাকটিও ঘটনাস্থলেই ছিল। সেখানে হাঁটু গেড়ে বসে বিলাপ করছিলেন রিয়াদ। বলছিলেন, ‘ও খোদা, তুঁই ইয়ান কিল্লা, অন এই ট্রাক দি আঁই কিরমু।’
ট্রাক্টরকে ট্রাকে পরিণত করে মাটি ও ফসল পরিবহন করা হয় চট্টগ্রামের সন্দ্বীপে। এ ধরনের একটি ট্রাকের মালিক মো. রিয়াদ আজ মঙ্গলবার সকালে ট্রাকটি চালাতে দিয়েছিলেন মান্না নামের একজনকে। অনীক সেই ট্রাকের পেছনে ছিল। দুপুরে দ্বীপ উপজেলাটির বাউরিয়া ইউনিয়নে মৌলভিবাজার সড়কে চালক ব্রেক কষলে অনীক ছিটকে পড়ে চাকার নিচে চলে যায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তার। এর আগে গত ৩ এপ্রিল মুছাপুর ইউনিয়নে এ রকমই একটি রূপান্তরিত ট্রাকের নিচে পড়ে প্রাণ যায় মো. পারভেজ নামের একজনের।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, বেলা দেড়টায় মৌলভিবাজার থেকে পশ্চিম দিকে যাওয়ার রাস্তায় তাঁরা অনীকের মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখেন। এ সময় স্থানীয় লোকজন কয়েকটি কলাপাতা দিয়ে মৃতদেহটি ঢেকে দেন। নূর ইসলাম নামের স্থানীয় এক বাসিন্দা জানিয়েছেন, দুর্ঘটনায় প্রাণ হারানো অনীকের বাবা রিয়াদ ট্রাকটির মালিক। দুর্ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে রিয়াদ ছেলের মৃতদেহ দেখতে পান। বুক চাপড়ে তিনি বলতে থাকেন, এখন এই ট্রাক দিয়ে কী করবেন তিনি।
সন্দ্বীপ থানার উপপরিদর্শক চয়ন দাশগুপ্ত ঘটনাস্থল থেকে মৃতদেহটি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ট্রাকটির মালিক অনীকের বাবা মো. রিয়াদ। আজ মান্না নামে একজন চালাচ্ছিলেন ট্রাকটি। ঘটনাস্থলে কড়া ব্রেক ধরার ফলে ট্রাকে থাকা অনীক চাকার নিচে পড়ে পিষ্ট হয়ে মৃত্যুবরণ করে। দুর্ঘটনার পর ট্রাকের চালক মান্না পালিয়েছেন।
ট্রাক্টর থেকে ট্রাকে রূপান্তর করা এসব বাহনে মালামাল বহন করা হচ্ছে। ঘটছে দুর্ঘটনা