গাজীপুরে চাঁদাবাজি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ
Published: 7th, March 2025 GMT
গাজীপুরের শ্রীপুরে মহাসড়ক ও ফুটপাত থেকে চাঁদা বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শ্রীপুর পৌর ও উপজেলা ছাত্রদল নেতারা।
শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকেলে বিক্ষোভ মিছিলটি শ্রীপুর পৌর এলাকার মাওনা চৌরাস্তায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে পদক্ষিণ করে। পরে একটি প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, বিগত সরকারের দোসর জেলা ‘নিষিদ্ধ সংগঠন’ ছাত্রলীগের সদস্যরা সড়ক ও মহাসড়ক, ফুটপাতের ওপর বাজার বসিয়ে দৈনিক হারে সর্বোচ্চ দুই হাজার টাকা করে চাঁদা সংগ্রহ করে আসছে। আর এতে বদনাম হচ্ছে বর্তমান সরকার ও বিএনপির অঙ্গসহযোগী সংগঠনের। মহাসড়কের পাশ থেকে দ্রুত সময়ের মধ্যে বাজার উচ্ছেদ করে রমজানে সাধারণ মানুষকে চলাচলের সুবিধা করে দেওয়াসহ চাঁদাবাজি বন্ধের দাবি জানান তারা।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন শ্রীপুর পৌর ছাত্রদল নেতা এসএম আব্দুল্লাহ্ আজাদ, উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মাহমুদুল হাসান আরিফ, বরমী ইউনিয়ন শাখা ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আশিক আহমেদ প্রমুখ।
গাজীপুর/রফিক/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
ময়মনসিংহের মিনি চিড়িয়াখানায় ভালুকের শরীরে পচন
ময়মনসিংহ নগরের জয়নুল আবেদিন উদ্যানের মিনি চিড়িয়াখানায় একটি ভালুকের শরীরে পচন ধরেছে। ইতিমধ্যে প্রাণীটির পায়ের অংশবিশেষ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। ভালুকটির শরীর থেকে ছড়াচ্ছে দুর্গন্ধও। ভালুকটিকে সারিয়ে তোলা কঠিন বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
২০১৩ সালের দিকে নগরের জয়নুল আবেদিন উদ্যানের ভেতরে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় মিনি চিড়িয়াখানাটি গড়ে তোলা হয়। হরিণ, ভালুক, কুমির, হনুমান, গাধা, অজগরসহ ২৪ প্রজাতির প্রাণী ছিল চিড়িয়াখানাটিতে। তবে মেছো বাঘের মৃত্যুর পর বর্তমানে সেখানে ২৩ প্রজাতির প্রাণী আছে। ৩০ টাকায় টিকিট কেটে দর্শনার্থীরা চিড়িয়াখানাটিতে ঢুকতে পারেন। ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের জায়গা ভাড়া নিয়ে গড়ে তোলা হয়েছে চিড়িখানাটি।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. সিদ্দীকুর রহমান বলেন, সাবেক কাউন্সিলর মাহবুবুর রহমান তাঁর শ্যালকের নামে চিড়িয়াখানাটির জায়গা বরাদ্দ নিয়েছিলেন। প্রয়োজনে বিনা নোটিশে বরাদ্দ বাতিল করা হবে—এই শর্তে জায়গাটি ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। চিড়িয়াখানাটির সরঞ্জাম ও প্রাণী সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ব্যবস্থা করেছে।
আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে পরিচিত ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর ও ২ নম্বর প্যানেল মেয়র মাহবুবুর রহমান গত ৮ মার্চ গ্রেপ্তার হন। চিড়িয়াখানার কর্মী মিজানুর রহমান বলেন, মাহবুবুর রহমান চিড়িয়াখানা দেখাশোনা করতেন। তিনি কারাগারে যাওয়ার পর তাঁর পরিবারের লোকজন মাঝেমধ্যে আসেন। তবে এখন তাঁর কর্মীরা এটি পরিচালনা করছেন, নিজেদের বেতন নিচ্ছেন।
গতকাল সোমবার বিকেলে সরেজমিনে চিড়িয়াখানায় একটি খাঁচায় দুটি কালো রঙের ভালুক দেখা যায়। এর মধ্যে একটি ভালুকের বা পায়ে পচন ধরেছে। ওই পায়ে হলুদের গুঁড়া ছিটাচ্ছেন এক ব্যক্তি।
চিড়িয়াখানা পরিচালনাকারীদের কাছ থেকে খবরে পেয়ে গতকাল বিকেলে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের সার্জারি ও অবস্টেট্রিক্স বিভাগের অধ্যাপক মো. রফিকুল আলম ভালুকটি দেখতে আসেন। অন্য ভালুকটির শরীরেও রোগ ছড়াতে পারে, এমন আশঙ্কার কথা জানিয়ে তিনি অসুস্থ ভালুকটিকে অন্যত্র স্থানান্তরের পরামর্শ দেন।
অধ্যাপক মো. রফিকুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ভালুকের শরীরে সংক্রমণ রয়েছে। অসুস্থ ভালুকটির সেরে ওঠার সম্ভাবনা খুব কম। তারপরও তাঁরা সারিয়ে তোলার চেষ্টা করবেন।
নগরীর সানকিপাড়ার বাসিন্দা দুবাইপ্রবাসী সাফি আহমেদ গতকাল চিড়িয়াখানায় ঘুরতে এসেছিলেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, অসুস্থ ভালুকটি দেখে অনেক দর্শনার্থীর মন খারাপ হয়। সেটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া উচিত।
চিড়িয়াখানার ভালুক দুটির বয়স কত, সে সম্পর্কে কিছু বলতে পারেননি চিড়িয়াখানার কর্মীরা। চিড়িয়াখানার ১০ কর্মীর একজন কামাল হোসেন। তিনি ২০১৪ সাল থেকে প্রাণীগুলোর দেখাশোনা করছেন। কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, দুটি ভালুকই পুরুষ। এগুলো ২০১৩ সালে ছোট অবস্থায় আনা হয়। তখন ঘর ছোট ছিল। কিন্তু প্রাণীগুলো বড় হলেও ঘর বড় হয়নি। দুটি ভালুক প্রায়ই একে অন্যকে আক্রমণ করে। ১৮–২০ দিন আগে একটি ভালুকের পা কামড়ে ছিঁড়ে ফেলেছে অন্যটি। তারপর স্থানীয় প্রাণী সম্পদ হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ দিয়ে সারিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন তাঁরা। কিন্তু ভালুকের পায়ের ক্ষত বাড়ছে। তাঁর দাবি, তাঁরা পশু-পাখি নিয়ে কখনো গাফিলতি করেন না। দর্শনার্থীরা এসে এখানে সৌন্দর্য দেখতে চান। তাঁরা চিড়িয়াখানা পরিষ্কার–পরিচ্ছন্ন রাখার চেষ্টা করেন।
ময়মনসিংহ সিটি করপোরেশনের সচিব সুমনা আল মজিদ বলেন, চিড়িয়াখানার জন্য সিটি করপোরেশন শুধু জমি বরাদ্দ দিয়েছে। সেখানকার প্রাণীর দায়িত্ব সিটি করপোরেশনের নয়। তিনি বলেন, ভালুকটিকে চিকিৎসা করিয়ে সারিয়ে তুলতে সংশ্লিষ্টদের বলা হয়েছে। তারা যদি প্রাণীদের সুরক্ষা দিতে না পারে ও চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করে, তাহলে ইজারা বাতিলসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।