কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি জনপ্রিয় হওয়ার পাশাপাশি এর অপব্যবহারও বাড়ছে। সম্প্রতি এ প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভুয়া ভিডিও তৈরি করা হচ্ছে, যা ‘ডিপফেক’ ভিডিও নামে পরিচিত। এসব ভিডিওতে নির্দিষ্ট ব্যক্তির অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নড়াচড়া করার পাশাপাশি কণ্ঠস্বর ব্যবহার করায় অনেকেই বুঝতে পারেন না এটি নকল ভিডিও। এবার ইউটিউবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নীল মোহানের নকল ভিডিও তৈরি করে ইউটিউবের ভিডিও নির্মাতাদের ব্যক্তিগত তথ্য চুরি করছে একদল সাইবার অপরাধী।

ইউটিউবের তথ্যমতে, ইউটিউবের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নীল মোহানের ভুয়া ভিডিও ব্যবহার করে ফিশিং হামলা চালাচ্ছে একদল সাইবার অপরাধী। ভিডিওটি নির্মাতাদের কাছে পাঠিয়ে ইউটিউবের মনিটাইজেশন নীতিতে পরিবর্তনের কথা জানানো হচ্ছে। তবে এটি সম্পূর্ণ ভুয়া এবং এর মাধ্যমে প্রতারকেরা ব্যবহারকারীদের ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।

এক ঘোষণায় ইউটিউব জানিয়েছে, ‘ইউটিউব বা এর কোনো কর্মী ব্যক্তিগত ভিডিওর মাধ্যমে কখনো কোনো বার্তা পাঠায় না বা নীতিগত পরিবর্তনের বিষয়ে যোগাযোগ করে না। যদি কেউ ইউটিউবের নাম ব্যবহার করে ব্যক্তিগতভাবে ভিডিও পাঠায়, সেটি নিঃসন্দেহে একটি ফিশিং প্রতারণা।’ সাম্প্রতিক সময়ে রেডিটসহ বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এ ধরনের প্রতারণার বিষয়ে অভিযোগ উঠেছে। এক ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, ‘নোটিফিকেশন ফর ইউটিউব ক্রিয়েটরস’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে তার কাছে একটি ই-মেইল পাঠানো হয়েছে। সেখানে একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়েছে এবং সেই ভিডিও দেখতে একটি নির্দিষ্ট ফাইল ডাউনলোড করতে বলা হয়েছে। আরেকজন ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, ‘চ্যানেল ফর ক্রিয়েটরস’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে পাঠানো ভিডিওতে ইউটিউবের নতুন মনিটাইজেশন নীতিতে সম্মতি দেওয়ার জন্য একটি লিংকে ক্লিক করতে বলা হয়েছে।

ভিডিও নির্মাতাদের সতর্ক করে ইউটিউব জানিয়েছে, প্রতারকেরা বিভিন্ন উপায়ে ইউটিউবের নাম ও প্ল্যাটফর্মের ধরন ব্যবহার করে কনটেন্ট নির্মাতাদের টার্গেট করছে এবং ক্ষতিকর লিংকে প্রবেশ করানোর চেষ্টা করছে। এর আগে ২০২৩ সালেও রেডিটের এক ব্যবহারকারী নীল মোহানের একটি ডিপফেক ভিডিও শনাক্ত করেছিলেন। এ ধরনের সন্দেহজনক ভিডিও বা বার্তা পেলে ইউটিউবের অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে রিপোর্ট করার পরামর্শ দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
সূত্র: দ্য ভার্জ

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর

এছাড়াও পড়ুন:

‘ধর্মবিরোধী’ অভিযোগ তুলে পাঠাগার থেকে নজরুল-রবীন্দ্রনাথের বই নিয়ে গেলেন একদল যুবক

টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় ‘অভয়ারণ্য’ নামের একটি পাঠাগার থেকে পাঁচ শতাধিক বই নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার রাতে ১৫-২০ জনের একদল যুবক পাঠাগারে ঢুকে বই নিয়ে যায়। পরে পাঁচটি বস্তায় ভরে বইগুলো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে জমা দেয় তারা। ওই যুবকদের দাবি, তারা যেসব বই পাঠাগার থেকে নিয়ে এসেছেন, সেগুলো ধর্মবিরোধী। এসব বই পড়ে যুবসমাজ ধর্মবিরোধী হয়ে উঠছে।

পাঠাগার কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রায় দুই লাখ টাকার বই ও নথিপত্র লুট এবং ৫০ হাজার টাকার আসবাব ভাঙচুর করেছে ওই যুবকরা। তারা যে বইগুলো নিয়ে গেছে তার মধ্যে কাজী নজরুল ইসলাম, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, সঞ্জীব ভট্টাচার্য, জাফর ইকবাল প্রমুখের বই রয়েছে।

পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র ঘোষ জানান, তৌহিদি জনতার নাম নিয়ে স্থানীয় গোলাম রাব্বানী রিশাদ, সোহেল, শাফি, শহিদুল ইসলাম আলামিনসহ ১৫-২০ জনের একটি দল পাঠাগারে ঢুকে বই বস্তায় তুলতে শুরু করে। তারা হুমকি দিয়ে বলে, এখানে কোনো পাঠাগার থাকতে দেবে না, বই পুড়িয়ে ফেলবে।

এ বিষয়ে গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘অভয়ারণ্য পাঠাগার যারা পরিচালনা করেন, তারা সব ধর্মের বিরোধী। গত বুধবার এই পাঠাগারের এক সদস্য ফেসবুকে ধর্মবিরোধী একটি পোস্ট দেয়। আমরা তাকে ডেকে কথা বলি। তার কাছে জানতে পারি, সে ওই পাঠাগারের সঙ্গে জড়িত হয়ে ধর্মবিরোধী হয়ে উঠেছে। এ জন্য বৃহস্পতিবার আমরা পাঠাগারে গিয়ে যে বইগুলো ধর্মবিরোধী মনে হয়েছে, তা নিয়ে ইউএনওর কাছে জমা দিয়েছি। বই লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি।’

ইউএনও শাহীন মাহমুদ বলেন, ‘তৌহিদি জনতার নাম করে কয়েকজন কারও অনুমতি ছাড়াই বস্তায় ভরে বইগুলো পাঠাগার থেকে আমার অফিসে নিয়ে এসেছেন। রোববার দুই পক্ষকে নিয়ে বসে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।’

পাঠাগারের সভাপতি সুপ্তি মিত্র বলেন, ‘হামলা কেবল বইয়ের ওপর নয়, মুক্তচিন্তা ও যুক্তিনির্ভর জ্ঞানচর্চার একটি নিরাপদ পরিসরকে ধ্বংসের চেষ্টা। আমি দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার এবং পাঠাগারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি জানাই।’

ধনবাড়ী থানার ওসি এস এম শহিদুল্লাহ জানান, এ ঘটনায় পাঠাগারের সাধারণ সম্পাদক দুর্জয় চন্দ্র ঘোষ ৪-৫ জনের নামে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • টাঙ্গাইলের সেই পাঠাগারে ফিরিয়ে দেওয়া হলো নজরুল, রবীন্দ্রনাথদের ৫ শতাধিক বই
  • ‘ধর্মবিরোধী’ অভিযোগ তুলে পাঠাগার থেকে নজরুল-রবীন্দ্রনাথের বই নিয়ে গেলেন একদল যুবক
  • ধর্মবিরোধিতার অভিযোগে তুলে পাঠাগার থেকে নজরুল, রবীন্দ্রনাথদের বই নিয়ে গেলেন একদল যুবক