পাইকগাছায় শ্রমিক লীগ নেতা মনিরুল আটক
Published: 7th, March 2025 GMT
খুলনার পাইকগাছায় হরিঢালী ইউনিয়ন শাখা শ্রমিক লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম সরদারকে আটক করেছে পুলিশ।
তিনি উপজেলার হরিঢালী ইউনিয়নের সদর এলাকার বাসিন্দা চাঁদ আলী সরদারের ছেলে।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে হরিঢালী পুলিশ ফাঁড়ি এলাকায় সন্দেহজনক চলাফেরা করায় এএসআই মফিজুল ইসলাম তাকে আটক করেন। আটকের পর তার পরিচয় জানা যায়।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: আটক
এছাড়াও পড়ুন:
খুলনার সেই ৩ প্রতিষ্ঠান কবে খুলবে জানেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা
হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের পর বন্ধ রয়েছে খুলনা নগরীর কেএফসি, ডোমিনোজ পিজা ও বাটার শোরুম। ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে প্রতিষ্ঠান ৩টি। এ ঘটনায় আলাদা ৩টি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। তবে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ায় প্রতিষ্ঠান ৩টি আবার কবে চালু হবে তা বলতে পারছেন না কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে কেএফসি নামের রেস্টুরেন্টের সামনে দুপুরে গিয়ে দেখা যায়, লাল দড়ি দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। দোতলায় কেএফসিতে উঠার সিড়ির সামনে চেয়ারে বসে আছেন কেএফসির কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
তারা জানান, কেএফসিতে যে খাবার ছিল তা লুটপাট হয়েছে, অনেক খাবার বাইরে ফেলে দিয়েছে। এছাড়া সাইনবোর্ড, ভেতরের চেয়ার-টেবিল, ডেস্ক, ক্যাশ কাউন্টার, টিভি, এসি, ফ্রিজসহ সবকিছু ভেঙে তছনছ করে ফেলেছে। ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা নিয়ে গেছে। প্রতিষ্ঠানটিতে ২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে।
তারা জানান, বহুতল ভবনটির দোতলায় কেএফসি এবং নিচতলায় ডোমিনোজ পিজাতে ভাঙচুর-লুটপাট চালিয়েছে। তৃতীয় তলায় বেসরকারি সিটি মেডিকেল কলেজের ডেন্টাল বিভাগের গ্লাস ভাঙচুর করেছে। এছাড়া নিচতলায় ডাচ বাংলা ব্যাংকের বুথ লুট করার চেষ্টা করলেও তা পারেনি।
কেএফসির ব্রাঞ্চ ম্যানেজার সুজন মণ্ডল জানান, তাদের কয়েক কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতি নিরূপণের কাজ চলছে। এ ঘটনায় তারা মামলা করবেন। তবে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তাতে প্রতিষ্ঠানটি আবার কবে নাগাদ চালু হবে তা তিনি বলতে পারছেন না।
ডোমিনোজ পিজা ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিষ্ঠানটির কোনো কিছুই স্বাভাবিক অবস্থায় নেই। সব কিছু ভেঙে তছনছ করে দিয়েছে অতি উৎসাহী লোকজন। প্রতিষ্ঠানের ২০/২৫ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী প্রতিষ্ঠানের সামনে ঘোরাফেরা করছেন।
প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার মো. আলামিন জানান, তাদের কিছুই অবশিষ্ট নেই। কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। কবে নাগাদ প্রতিষ্ঠান আবার চালু হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
শিববাড়ি মোড়ে বাটার শোরুমে গিয়ে দেখা গেছে, ত্রিপল দিয়ে শোরুমের সামনের অংশ ঢেকে রাখা হয়েছে। কর্মচারীদের সঙ্গে ভেতরে গিয়ে দেখা যায়, চারিদিকে ভাঙা কাচের স্তূপ। ভেঙে দেওয়া আসবাবপত্র ও জুতা-স্যান্ডেল ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে।
বাটার ব্রাঞ্চ ম্যানেজার তৌহিদুল ইসলাম জানান, তাদের ৯০/৯৫ লাখ টাকার মতো ক্ষতি হয়েছে। তারা মামলা করবেন। তাদের প্রতিষ্ঠানে কর্মকর্তা-কর্মচারী ৪ জন। প্রতিষ্ঠানটি আবার কবে চালু হবে তা এখনই বলা যাচ্ছে না।
এদিকে ভাঙচুর-লুটপাটের অভিযোগে পুলিশ রাতভর অভিযান চালিয়ে ৩১ জনকে আটক করেছে। তাদেরকে সোনাডাঙ্গা থানায় রাখা হয়েছে।
তবে ভাঙচুরের ঘটনায় পুলিশ নিরীহ কয়েকজনকে আটক করেছে বলে অভিযোগ করেছে তাদের পরিবার। সোনাডাঙ্গা থানা চত্বরে দাড়িয়ে ছোট বয়রা এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, আমার অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে হৃদয় সোমবার রাতে দাদা বাড়ি থেকে ফিরছিল। রাত ১২টার দিকে নিউমার্কেট এলাকা থেকে পুলিশ ধরে নিয়ে এসেছে।
একই এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেন বলেন, আমার ছেলে ইরফানকে রাতে পুলিশ আটক করেছে। সে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ে। সে কোনো ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত ছিল না।
নগরীর টুটপাড়া মহিরবাড়ি খালপাড় এলাকার বাসিন্দা রিকশা চালক আশরাফুলকেও কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ আটক করেছে বলে স্ত্রীসহ তার পরিবারের সদস্যদের অভিযোগ।
অভিযোগ অস্বীকার করে সোনাডাঙ্গা থানার ওসি মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ভিডিও এবং ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জড়িতদের আটক করা হয়েছে। নিরীহ কাউকে আটক করা হয়নি।
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার মো. জুলফিকার আলী হায়দার বলেন, ছবি ও ভিডিও ফুটেজ দেখে জড়িতদের শনাক্ত ও আটক করার চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভের পর গত সোমবার সন্ধ্যায় ‘বিক্ষুব্ধ লোকজন’ নগরীর ময়লাপোতা মোড়ে কেএফসিতে ও ডোমিনোজ পিজায় ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়। এরপর নগরীর শিববাড়ি মোড়ে বাটার শোরুমে ভাঙচুর ও লুটপাট চালানো হয়।