চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কের রাস্তার মাথা এলাকায় ‘টোকেন–বাণিজ্যের’ প্রতিবাদে রাউজানে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছেন অটোরিকশাচালকেরা। এ সময় চালকেরা সড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে যান চলাচল বন্ধ করে দেন।

আজ শুক্রবার সড়কের ধোপপুল, নোয়াপাড়া পথেরহাট ও নোয়াপাড়া কলেজ এলাকায় সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত রাউজান ও রাঙ্গুনিয়ার কয়েক শ অটোরিকশাচালক জড়ো হয়ে এ কর্মসূচি পালন করেন। সড়কে যান চলাচল বন্ধ থাকায় দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। দুই পাশে আটকা পড়ে বাস, ট্রাকসহ অন্যান্য গণপরিবহনও।

অটোরিকশাচালকদের বেশির ভাগই গাড়ি বন্ধ রেখে সড়কে অবস্থান নিয়ে অবরোধ ও বিক্ষোভে অংশ নেন। পরে রাউজান থানা পুলিশের একটি দল ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধিরা এসে অটোরিকশাচালকদের বুঝিয়ে যান চলাচল স্বাভাবিক করেন। পাশাপাশি চান্দগাঁও থানা পুলিশের সঙ্গে কথা বলে ‘টোকেন–বাণিজ্য’ বন্ধের আশ্বাস দিলে চালকেরা অবরোধ তুলে নেন।

একাধিক অটোরিকশাচালক ও যাত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের আগে চট্টগ্রাম-কাপ্তাই রাস্তার মাথায় রাউজান, হাটহাজারী, রাঙ্গুনিয়া ও রাঙামাটির প্রতি অটোরিকশা থেকে মাসে ৮০০ টাকা করে চাঁদা দিয়ে টোকেন নিতে হতো কাপ্তাই রাস্তার মাথা অটোরিকশা ও টেম্পো শ্রমিক ইউনিয়নের সমিতির কাছ থেকে, যা ৫ আগস্টের পরে বন্ধ হয়। তবে এক সপ্তাহ ধরে আগের মতো ‘টোকেন–বাণিজ্য’ চালু করে রাস্তার মাথায় অটোরিকশা নিয়ন্ত্রণ করা কিছু চাঁদাবাজ। আগে ৮০০ টাকা নেওয়া হলেও এখন নেওয়া হচ্ছে ১ হাজার ৫০০ টাকা করে।

রাউজানের অটোরিকশাচালক মুহাম্মদ জাহেদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকার পতনের পর মনে করেছিলাম সড়কের এসব নৈরাজ্য, জুলুম বন্ধ হবে। কিন্তু আগের চেয়ে এখন চাঁদার টাকা দিগুণ গুনতে হচ্ছে। এমন হলে গাড়িচালকদের আয়ের টাকা পথেই শেষ হয়ে যাবে।’

মুহাম্মদ শাকিল নামের রাঙ্গুনিয়ার একজন চালক বলেন, ভয়ে এখন চালকরা রাস্তার মাথায় ভাড়া নেওয়া বন্ধ রেখেছেন অনেকে। স্থানীয় মুহাম্মদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি এই চাঁদাবাজির নেতৃত্ব দেন বলে চালকদের অভিযোগ।

চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে কাপ্তাই রাস্তার মাথা অটোরিকশা ও টেম্পো শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ হোসেনের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়। এ কারণ তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

রাউজান থানার পরিদর্শক দিপ্তেশ দাশ প্রথম আলোকে বলেন, রাস্তার মাথায় চাঁদাবাজির প্রতিবাদে অটোরিকশাচালকেরা ঘণ্টাখানেক সড়ক অবরোধ করেছিলেন। পরে তাঁদের বুঝিয়ে অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। চান্দগাঁও থানার মাধ্যমে রাউজানের ওসি মনিরুল ইসলাম ভুঁইয়া বিষয়টি সমাধান করবেন। চালকদের সঙ্গে উভয় পক্ষ বসে শিগগির চাঁদাবাজি বন্ধ করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ম হ ম মদ চ লকদ র

এছাড়াও পড়ুন:

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আরও ৫১ ফিলিস্তিনি নিহত

ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় একদিনে আরও ৫১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও শতাধিক। এতে করে অবরুদ্ধ এই উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা প্রায় ৫২ হাজার ৪০০ জনে পৌঁছেছে।

মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা আনাদোলু।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত ২৪ ঘণ্টায় গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় আরও অন্তত ৫১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, অক্টোবর ২০২৩ সাল থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের ‘গণহত্যামূলক’ যুদ্ধের ফলে এখন পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫২ হাজার ৩৬৫ জনে।

মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় আহত হয়েছেন আরও ১১৩ জন, যাদের হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। ফলে চলমান হামলায় মোট আহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ৯০৫ জনে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, অনেক মৃতদেহ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় পড়ে রয়েছে, কারণ উদ্ধারকারীরা সেখানে পৌঁছাতে পারছেন না।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ১৮ মার্চ থেকে গাজায় আবারও ভয়াবহ হামলা শুরু করে। এই সময়ে তারা ২ হাজার ২৭৩ জনকে হত্যা করেছে এবং আরও ৫ হাজার ৮০০ জনকে আহত করেছে, যদিও জানুয়ারিতে একটি যুদ্ধবিরতি ও বন্দি বিনিময় চুক্তি কার্যকর হয়েছিল।

গত বছরের নভেম্বরে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) গাজায় যুদ্ধাপরাধ ও মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এবং সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে।

এছাড়াও, গাজায় যুদ্ধ পরিচালনার কারণে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) গণহত্যার মামলা চলছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ