বগুড়ার শেরপুর উপজেলায় তিথি দত্ত (২০) নামে এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে শহরের কর্মকার পাড়ায় একটি ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে লাশটি উদ্ধার করা হয়।

তিথি দত্ত ওই ভবনের ব্যালকনির গ্রিলের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আত্মহত্যা করেছেন বলে তাঁর পরিবার জানিয়েছে। তবে মৃত্যুর সঠিক কারণ কী, তা তাঁরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারেননি।।

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, তিথি দত্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য চেষ্টা করছিলেন। গত ১ মার্চ তিনি সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেন। পরীক্ষার পর পরিবারের সঙ্গে বাড়িতে ফিরে আসেন।

তিথি দত্তের পরিবার বলছে, ৬ মার্চ রাতে পরিবারের সবাই রাতের খাবার শেষে ঘুমিয়ে পড়েন। রাত পৌনে দুইটার দিকে তিথির মা ওয়াশ রুমে যাওয়ার সময় মেয়ের কক্ষের লাইট জ্বলতে দেখেন। বেশ কয়েকবার ডাকাডাকি করেও কোনো সাড়া না পেয়ে জানালা দিয়ে উঁকি দেন। তখন তিনি দেখতে পান, তিথি ব্যালকনির গ্রিলের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছেন। এ সময় স্থানীয়দের সহায়তায় পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তিথিকে নামিয়ে শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। তবে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।

শেরপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) তোফাজ্জল হোসেন বলেন, খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহ উদ্ধার করে। পরে আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ ঘটনায় শেরপুর থানায় একটি অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড হয়েছে।

শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, আত্মহত্যার প্রকৃত কারণ সম্পর্কে পরিবারের কেউ নিশ্চিত কোনো তথ্য দিতে পারেননি। তিথি দত্তের মানসিক অবস্থা বা অন্য কোনো বিশেষ চাপ ছিল কি না, সে বিষয়েও পুলিশি অনুসন্ধান চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ব র র

এছাড়াও পড়ুন:

আশুলিয়ায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, ককটেল ফাটিয়ে স্বর্ণালংকার লুট

সাভারের আশুলিয়ায় দোকান বন্ধের সময় এক স্বর্ণ ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় ডাকাতরা ককটেল ফাটিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে ওই ব্যবসায়ীর স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে গেছে।

রোববার রাতে আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। নিহত স্বর্ণ ব্যবসায়ীর নাম দিলীপ কুমার দাস (৪৮)। সে আশুলিয়ার পাথালিয়া ইউনিয়নের গোপিনাথপুর গ্রামের দুলাল দাসের ছেলে এবং নয়ারহাট বাজারের দিলীপ স্বর্ণালয়ের মালিক। 

জানা যায়, ডাকাতদের হামলায় আহত ওই ব্যবসায়ীকে সাভারের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে মারা যান।

পুলিশ ও স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানায়, স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ কুমার দাস রাতে দোকান বন্ধ করার প্রস্তুতি নিচ্ছিল। এ সময় একদল ডাকাত দোকানে এসে দিলীপের হাতে থাকা স্বর্ণের ব্যাগ ধরে টান দেয় । এতে তিনি বাধা দিলে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর জখম করে টাকার ব্যাগ ও সেখানে থাকা প্রায় ২৫ ভরি স্বর্ণালংকার লুট করে নিয়ে যায়। এ সময় ডাকাতরা কয়েকটি ককটেল বোমা ফাটিয়ে বাজারে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এ ঘটনার পর বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীরা সেখানে ছুটে এসে দিলীপ দাসকে দোকানের সামনে পড়ে থাকতে দেখে। পরে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তিনি মারা যান।

নিহতের ফুপাতো ভাই খোকন সরকার বলেন, রাত সাড়ে ৮টার দিকে দোকান বন্ধ করে শাটার নামানোর সময় কয়েকজন ডাকাত তার হাতে থাকা ব্যাগ ধরে টান দেয়। কিন্তু দিলীপ ব্যাগ না ছাড়ায় চাপাতি দিয়ে তাকে কুপিয়ে স্বর্ণ এবং টাকার ব্যাগ নিয়ে পালিয়ে যায়।

নিহতের স্ত্রী সরস্বতী দাশ বলেন, আমার স্বামী প্রতিদিন ৯টার মধ্যে বাসায় আসতো। কিন্তু ওরা আর আমার স্বামীকে বাসায় আসতে দিল না। আমি এ হত্যার বিচার চাই।

সাভার এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মেরাজুর রেহান পাভেল জানান, আহত অবস্থায় স্বর্ণ ব্যবসায়ীর বুকে বড় ক্ষত ছিল, গালের ডানে ক্ষত ছিল এবং পিঠেও ক্ষত ছিল। আমরা চিকিৎসা শুরু করেছিলাম, স্যালাইন এবং ওষুধ চলছিল, পরে তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যেই তিনি মারা যান। আমরা ধারনা করছি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে তিনি মারা গেছেন। 

আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন বলেন, আমরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছে আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। দোষীদের চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি ছিনতাই হওয়া মালামাল উদ্ধারে আমাদের কার্যক্রম চলছে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ