রাজধানীর নয়াপল্টনের বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলার কনফারেন্স রুমে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আজ শুক্রবার বিকেল ৩টার দিকে সংবাদ সম্মেলন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দীন নাছির। তিনি বলেন, গত বুধবার রাত ১০টার পরে বেসরকারি নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টির নেতা সারজিস আলমের সঙ্গে সেখানকার শিক্ষার্থীদের অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। সেখানে ছাত্রদলের নাম জড়িয়ে যে সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে, তা নিয়েই আজকের সংবাদ সম্মেলন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনটির সভাপতি রাকিবুল হাসান রাকিব। তিনি বলেন, দেশের যে কোনো জায়গায় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটলেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের নাম জড়ানোর একটি দুরভিসন্ধিমূলক প্রবণতা লক্ষ্য করছি। বিষয়টি অত্যন্ত উদ্বেগজনক। 

রাকিবুল হাসান রাকিব বলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সংঘটিত ঘটনার প্রকৃত বৃত্তান্ত এই যে, বুধবার রাত ১০টার পরে সারজিস আলম তার কর্মীসমর্থকদের নিয়ে বসুন্ধরা এলাকার ঘাটপাড় থেকে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৮ নম্বর গেটের দিকে আসেন। এ সময়ে সেখানে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আড্ডারত ছিলেন। গেটের সামনে সারজিস আলমের উপস্থিতি দেখে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা সারজিস আলমকে উদ্দেশ করে ‘ঢাবি’র সিন্ডিকেট ভেঙে দাও, গুড়িয়ে দাও’ স্লোগান দেন। 

রাকিব আরও বলেন, নবগঠিত গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের যথাযথ মূল্যায়ন না করার অভিযোগে ওই ছাত্রসংগঠনটির কতিপয় ক্ষমতাশালী নেতা আত্মপ্রকাশের দিনেই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মধুর ক্যান্টিনে সংঘর্ষে জড়ায়। জাতীয় নাগরিক পার্টি এবং গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ সম্পর্কের কথা দেশের সব রাজনীতি সচেতন মানুষের অবগত। আগের রেষারেষিরর জের ধরেই নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ে সারজিস আলম বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে পড়েন। এ সময়ে সারজিস আলমের সঙ্গে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। 

ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, সারজিস আলমের সঙ্গে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বিরোধের সূত্রপাত নাগরিক পার্টি এবং গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদের মধ্যকার ঢাবি বনাম প্রাই়ভেট বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে চলমান অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সারজিস আলম এ ঘটনাকে রাজনৈতিক রূপ দেওয়ার জন্য ছাত্রদলকে দায়ী করে ফেসবুকে পোস্ট করেন। তার দাবি সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও কল্পনাপ্রসূত। 

রাকিব আরও বলেন, সারজিস আলম তার পোস্টে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ‘সন্ত্রাসী, দুষ্কৃতকারী এবং টোকাই’ উল্লেখ করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের অপমান করেছেন। আমরা তার এই ঔদ্ধত্যপূর্ণ ও বিদ্বেষমূলক বক্তব্যের তীব্র নিন্দা জানাই। 

সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, সারজিস আলমের বক্তব্যে জুলাই আগস্টের গণ-অভ্যুত্থানে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নজিরবিহীন ত্যাগকে মর্যাদাহানি করা হয়েছে। আমরা তার এই বক্তব্য প্রত্যাহার করার দাবি জানাচ্ছি। 

উল্লেখ্য, ঘটনাস্থলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের কোনো সাংগঠনিক কার্যক্রম ছিল না। নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের নেতাকর্মীরাও ঘটনাস্থলে ছিলেন না। সারজিস আলমের সঙ্গে ছাত্রদলের কোনো বিরোধ হয়নি। উল্টো সারজিস আলমের শোডাউনে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের চিহ্নিত সন্ত্রাসী এবং জুলাই আগস্টের গণহত্যার আসামিদেরকে দেখা গেছে। এভাবেই জাতীয় নাগরিক পার্টি ও তাদের ছাত্রসংগঠনে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পুনর্বাসন নেতাকর্মীদের পুনর্বাসন হচ্ছে। আমরা নিষিদ্ধ সংগঠনের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসনের নিন্দা জানাই। 

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিব বলেন, নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সারজিস আলমের বিরোধের মধ্যে কোনো ছাত্রদল নেতাকর্মীর উপস্থিতি ছিল কিনা আমরা পর্যালোচনা করে দেখছি, তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করার কাজ চলছে। যদি ছাত্রদলের কারও কোনো ন্যুনতম সংশ্লিষ্টতা থেকে থাকে, তাহলে আমরা ছাত্রদলের পক্ষ থেকে আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। একইসঙ্গে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনার দায় ছাত্রদলের ওপর চাপানোর কৌশলের বিরুদ্ধে আমরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

এর আগে গতকাল বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে আজ শুক্রবার বিকেলে ৩টায় নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের তৃতীয় তলার কনফারেন্স রুমে জরুরি সংবাদ সম্মেলনের কথা জানায়। ওই সংবাদ সম্মেলনে সমসাময়িক বিষয়াবলি নিয়ে কথা বলা হবে বলে জানায় ছাত্রদল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল ছ ত রদল র ন ত কর ম ব সরক র স গঠনট

এছাড়াও পড়ুন:

চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈসাবি উপলক্ষে পাঁচ দিন ছুটির দাবি

চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈসাবি উপলক্ষে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পাঁচ দিন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধের দাবি জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবার’ নামের একটি সংগঠন। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই দাবি জানান সংগঠনটির জ্যেষ্ঠ সদস্য মিশন চাকমা।

এতে বলা হয়, ‘পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত পাহাড়ি ও সমতলের জাতিগোষ্ঠীর প্রধান সামাজিক উৎসব বৈসুক, সাংগ্রাই, বিজু, বিহু, চাংক্রান, চৈত্রসংক্রান্তি আবহমান সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের অংশ। এ উৎসব পার্বত্য অঞ্চলের পাহাড়ি জাতিসত্তা এবং সমতলের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর জনগণের কাছে জাতীয় ও সামাজিক ঐক্যের প্রতীক। ১২ থেকে ১৬ এপ্রিল পর্যন্ত এই উৎসব চলবে। কিন্তু চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সাত শতাধিক বিভিন্ন জাতিসত্তার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত থাকলেও উৎসবের দিন তাঁদের ক্লাস-পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

সংগঠনটির পক্ষ থেকে উল্লেখ করা হয়, ইতিমধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাঙামাটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন উৎসব উপলক্ষে পাঁচ দিন ক্লাস ও পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও এক দিনের রাষ্ট্রীয় ছুটি ঘোষণা করেছে।

এর আগে গত ৫ মার্চ উপাচার্যকে চিঠি দিয়ে পাঁচ দিন ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধের দাবি জানিয়েছিল বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন। চিঠি দেওয়া ওই সংগঠনগুলো হচ্ছে ত্রিপুরা স্টুডেন্টস ফোরাম, বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস কাউন্সিল, বাংলাদেশ ম্রো স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় জুম্ম শিক্ষার্থী পরিবার, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • মঙ্গল শোভাযাত্রা বাঙালি সংস্কৃতির বিকৃতি ছাড়া কিছুই নয়: ইসলামী ছাত্র আন্দোলন
  • চৈত্রসংক্রান্তি ও বৈসাবি উপলক্ষে পাঁচ দিন ছুটির দাবি
  • ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলাকারীরা ‘আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের দোসর’: হেফাজতে ইসলাম
  • ‘আধুনিক’ পাহাড়ি গান-নৃত্য যাঁদের দিয়ে শুরু
  • গাজায় গণহত্যার প্রতিবাদে ঢাবিতে ক্লাস-পরীক্ষা স্থগিত আজ
  • মুখে কালো কাপড় বেঁধে ছাত্রদলের অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা
  • শিপিং এজেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাচন বন্ধ করতে বহিরাগতদের বিক্ষোভ