বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) মতো অবস্থা ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ডেরও (বিসিসিআই)। বিসিবি কেন্দ্রীয় চুক্তির নাম প্রস্তাব করেছে। তবে মাহমুদউল্লাহ ও মুশফিকুর রহিমের ভবিষ্যত পরিকল্পনা জানার অপেক্ষায় আটকে ছিল কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা পাশ। এর মধ্যে মুশফিক ওয়ানডে ফরম্যাট থেকে অবসর নিয়েছেন। এখনো ঝুলে আছে মাহমুদউল্লাহর বিষয়টি।

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরে রোহিত শর্মা অবসর নেবেন কিনা, বিরাট কোহলি ওয়ানডে ফরম্যাট ছেড়ে দেবেন কিনা, রবীন্দ্র জাদেজার পরিকল্পনা কী, এসব জানতে ঝুলে আছে ভারতের ক্রিকেটারদের কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা চূড়ান্ত হওয়া। বিসিসিআই সাধারণত ২৮ ফেব্রুয়ারির মধ্যে কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা প্রকাশ করে থাকে।

রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি ও রবীন্দ্র জাদেজা বিসিসিআই-এর কেন্দ্রীয় চুক্তিতে ‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরিতে ছিলেন। কিন্তু তারা তিনজনই টি-২০ থেকে অবসর নিয়েছেন। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে যেতে পারেনি ভারত। যার অর্থ জুনের আগে কোন টেস্ট সিরিজ নেই তাদের। যে কারণে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে রাখলেও রোহিতদের ‘এ প্লাস’ ক্যাটাগরিতে রাখতে চায় না বোর্ড।

সংবাদ মাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া দাবি করেছে, বিসিসিআই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল এবং রোহিত শর্মা অবসর ঘোষণার অপেক্ষায় আছে। ভারতীয় অধিনায়ক অবসর নিলে তাকে কেন্দ্রীয় চুক্তিতে রাখার যৌক্তিকতা নেই। একইভাবে বিরাট কোহলি ওয়ানডে থেকে অবসরের ঘোষণা দেন কিনা সেটা নিয়েও চিন্তায় আছে বোর্ড।

শুভমন গিল, অক্ষর প্যাটেলদের মতো ক্রিকেটারদের কেন্দ্রীয় চুক্তির ক্যাটাগরি কী হবে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্যও চ্যাম্পিয়ন্টস ট্রফির দিকে তাকিয়ে আছে বিসিসিআই। শুভমন গিলকে পরবর্তী অধিনায়ক হিসেবে ভাবা হচ্ছে। এছাড়া যারা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ভালো খেলছে, চাপে ভালো করছে তাদের কেন্দ্রীয় চুক্তিতে প্রমোশন দেওয়ার চিন্তা করা হচ্ছে।

কেন্দ্রীয় চুক্তিতে নাম অর্ন্তভূক্তি কিংবা বিয়োজনের একটা কারণ হতে পারে ঘরোয়া ক্রিকেট। গত বছর শ্রেয়াস আইয়ার ও ইশান কিষাণ ঘরোয়া ক্রিকেট না খেলায় তাদের চুক্তি থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল। পরে আইয়ার চুক্তিতে ঢোকেন। এবার আবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে বিরাট কোহলি ও রোহিতদের ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে বাধ্য করে বোর্ড। ঘরোয়া ক্রিকেটে আগ্রহ ও নিয়মিত বিবেচনায় কেন্দ্রীয় চুক্তির তালিকা নির্ধারণ হতে পারে।   

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব স স আই ব র ট ক হল ব র ট ক হল অবসর ন

এছাড়াও পড়ুন:

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারীকরণে দীর্ঘসূত্রতা!

কলেজ ও মাধ্যমিক স্কুল মিলে ২০১৬ সাল থেকে উপজেলা স্তরের অন্তত সাড়ে ৬০০ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারীকরণ প্রক্রিয়ায় আনা হয়। অনেক প্রতিষ্ঠান ‘কাঠখড় পুড়িয়ে’ দীর্ঘদিনে শিক্ষক-কর্মচারীদের পদায়নসহ যাবতীয় কাজ সম্পন্ন করতে সক্ষম হলেও বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান নানা কারণ ও অজুহাতে এখনও অনেক পিছে পড়ে রয়েছে।   

মন্ত্রণালয়-দপ্তর-বিভাগ; এ টেবিল-ও টেবিল; বড় কর্তা-মাঝারি কর্তা-ছোট কর্তা– সবার মন রক্ষা করা কঠিন হলেও তা করার জন্য সাধ্যানুসারে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে।
২০১৬ সালে শুরু হওয়া প্রক্রিয়াটি ৮-৯ বছরেও সম্পন্ন করা গেল না! তাহলে কী লাভ হলো এমন সরকারীকরণে? এ দীর্ঘ সময়ে সরকারীকরণের কোনো সুবিধা না পেয়েই অনেকে অবসরে চলে গেছেন। মৃত্যুও হয়েছে অনেকের। 

অনেক প্রতিষ্ঠানে এক বা দেড়-দুই বছর আগে অর্ধেক সংখ্যক (প্রতিষ্ঠানভেদে কম-বেশি হতে পারে) শিক্ষক-কর্মচারীর পদায়ন হয়েছে, বাকিগুলো ঝুলন্ত। 
না সরকারি-না বেসরকারি অবস্থায় তাদের রীতিমতো গলদ্ঘর্ম হতে হচ্ছে।
পদায়নকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সংশ্লিষ্টদের মাঝে ভিন্ন রকমের বৈষম্য তৈরি হয়েছে। এ নিয়ে সাধারণ শিক্ষক-কর্মচারীদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার শেষ নেই। জীবনপ্রদীপ নিভে যাওয়া কিংবা অবসরে গিয়েও শিক্ষক-কর্মচারীরা ‘ম্যানেজ সংস্কৃতি’ থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। এ যেন উদ্বেগ-উৎকণ্ঠার সঙ্গে বসবাস! তা ছাড়া এটি যে কতটা মানসিক পীড়ার কারণ, তা ভুক্তভোগী ছাড়া অন্য কারও পক্ষে অনুমান করা কঠিন। 
সেই ২০১৬ সাল থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার কাজে কতবার যে মূল সনদপত্র এবং প্রয়োজনীয় সুপারিশ ও নথিপত্র নিয়ে যাওয়া হয়েছে, এর কোনো হিসাব নেই। শিক্ষকরা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত; আমার মতো অনেকে অবসরে গেছেন। কিন্তু এ ক্ষেত্রে কারও রেহাই নেই। ফটোকপি আর ফটোকপি। চরম অস্বস্তিকর এক ব্যাপার।
একটি দপ্তরে (তা না হলে দুই জায়গায়) মূল সনদ ও নথিপত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পন্ন হলে বাকিগুলোতে শিক্ষক-কর্মচারী কিংবা প্রতিষ্ঠানকে না ডেকে ‘আন্তঃদাপ্তরিক যোগাযোগ’-এর মাধ্যমে তা সম্পন্ন করা উচিত ছিল।

আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থা যে বলতে গেলে ভেঙে পড়ার উপক্রম, এর একটি বড় কারণ অপরিকল্পিতভাবে এবং দীর্ঘ প্রক্রিয়ায় বিপুলসংখ্যক প্রতিষ্ঠানের সরকারীকরণ।
সরকারি হওয়া তিন-সাড়ে তিনশ কলেজের মধ্যে কমপক্ষে দুইশ কলেজে নিয়মিত অধ্যক্ষ নেই। কোনোটি তিন বছর, কোনোটি আবার পাঁচ-সাত বছর, এমনকি আট-দশ বছর ধরে অধ্যক্ষশূন্য। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের ভারে কলেজগুলো বলতে গেলে ন্যুব্জ। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ নিয়ে কলেজগুলোয় চলা ভিন্ন রকমের খেলা এখনও শেষ হয়নি। অবসরে গেছেন কিংবা মৃত্যু হয়েছে, এমন শিক্ষকের স্থলে গত সাত-আট বছরে বিষয়ভিত্তিক কোনো শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হয়নি।
দীর্ঘদিন অধ্যক্ষহীন সরকারি হওয়া কোনো কোনো কলেজে শিক্ষা ক্যাডার থেকে অধ্যক্ষ নিয়োগ দিলেও মাত্র দুই-চার মাস কিংবা বড়জোর এক বছরের মধ্যেই তিনি বদলি হয়ে অন্যত্র চলে গেছেন– এমন উদাহরণ এক-দুটি নয়, অনেক। এক কথায়, প্রতিষ্ঠানগুলোতে শিক্ষা লাটে উঠতে বড় বেশি বাকি বলে মনে হয় না। 
সবচেয়ে ভয়াবহ ও দুর্ভাবনার বিষয় হলো, সংশ্লিষ্টদের উপেক্ষা ও অবহেলা। এভাবেই পার হয়েছে অন্তত আটটি বছর। এ নিয়ে ভালো কোনো আলোচনা নেই। দেশে এখন রাজনীতি, নির্বাচন আর গদি ছাড়া যেন আর কোনো বিষয়ই নেই আলোচনার।
মেঘে মেঘে বেলা অনেক হয়ে গেছে। শুধু হাজার হাজার শিক্ষক-কর্মচারী নন, তাদের পরিবার ও নিকটজনও এ নিয়ে স্বস্তিতে নেই। দীর্ঘমেয়াদি উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ও বিড়ম্বনার নিরসন না হলে এমন সরকারীকরণের সার্থকতা কোথায়?   

বিমল সরকার: কলাম লেখক, অবসরপ্রাপ্ত কলেজশিক্ষক

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সরকারীকরণে দীর্ঘসূত্রতা!
  • কনকাশন সমস্যায় মাত্র ২৭ বছর বয়সে অবসরে পুকোভস্কি
  • বারবার মাথায় আঘাত, ২৭ বছরেই ক্রিকেট ছাড়লেন সেই পুকোভস্কি
  • কনকাশনের কাছে হার মেনে ২৭ বছরেই ক্রিকেট ছাড়লেন সেই পুকোভস্কি