নারী দিবস উপলক্ষ্যে ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটকের প্রদর্শনী
Published: 7th, March 2025 GMT
আগামীকাল আন্তর্জাতিক নারী দিবস। এ উপলক্ষ্যে ‘নারীজন্ম ধন্য হোক আপনভাগ্য গড়ার অধিকারে’- স্লোগানে নাট্যসংগঠন স্বপ্নদল আজ ৭ মার্চ ২০২৪ শুক্রবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির ষ্টুডিও থিয়েটারে স্বপ্নদল প্রযোজনা নারীজাগরণের কাব্যনাট্য ‘চিত্রাঙ্গদা’-র বিশেষ মঞ্চায়ন অনুষ্ঠিত হবে। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিরায়ত সৃষ্টি ‘চিত্রাঙ্গদা’-র গবেষণাগার নাট্যরীতিতে নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন।
ভারতের ন্যাশনাল স্কুল অব ড্রামা (এনএসডি)-র আমন্ত্রণে ‘২৩তম ভারত রঙ্গ মহোৎসব, ২০২৪’-এ ‘চিত্রাঙ্গদা’-র দু’টি প্রদর্শনীসহ ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশে প্রযোজনাটির ১১৪টি মঞ্চায়ন করে ব্যাপকভাবে প্রশংসিত হয় স্বপ্নদল।
‘চিত্রাঙ্গদা’ প্রদর্শনীর পূর্বে নিবেদিতপ্রাণ নাট্যজন রুমা মোদক-কে স্বপ্নদলের ‘আন্তর্জাতিক নারী দিবস সম্মাননা ২০২৫’ প্রদান করা হবে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে সম্মাননা তুলে দেববেন চায়নার রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ও চীনাভাষায় রবীন্দ্র রচনাবলীর অনুবাদক প্রফেসর দং ইউ ছেন। বিশেষ অতিথি হিসেবে থাকেবন নাট্যগবেষক ও বাংলাদেশ থিয়েটার আর্কাইভসের প্রতিষ্ঠাতা নাট্যজন বাবুল বিশ্বাস প্রমুখ। বিশ্বের সকল নারীকে আন্তরিক সম্মান জানাতে বাংলাদেশের প্রথম নাট্যদল হিসেবে ২০১২ থেকে নিয়মিতভাবে আন্তর্জাতিক নারী দিবস পালন করে আসছে স্বপ্নদল।
দিবসটিতে এ পর্যন্ত সংবর্ধনা দেওয়া হয়েছে নাট্যজন ফেরদৌসী মজুমদার, শিমূল ইউসুফ, লাকী ইনাম, নূনা আফরোজ, আইরিন পারভীন লোপা, সাধনা আহমেদ, ত্রপা মজুমদার, রোকেয়া রফিক বেবী, মোমেনা চৌধুরী, আছমা আক্তার লিজা, জয়িতা মহলানবীশ, হৃদি হক এবং স্বপ্নদলের নিয়মিত নারী-নাট্যকর্মীসহ সকল নিয়মিত নাট্যকর্মীর মাতাদের। আন্তর্জাতিক নারী দিবস ৮ই মার্চ হলেও হলবরাদ্দের কারণে এ বছর একদিন পূর্বে দিবসটি পালন করে স্বপ্নদল।
প্রসঙ্গত, রবীন্দ্রনাথ মহাভারতের চিত্রাঙ্গদা-উপাখ্যান অবলম্বনে ১৮৯২-এ কাব্যনাট্যরপে এবং ১৯৩৬-এ নৃত্যনাট্যরূপে ‘চিত্রাঙ্গদা’ রচনা করেন। স্বপ্নদলের ‘চিত্রাঙ্গদা’ প্রযোজনাটি নির্মিত হয়েছে কাব্যনাট্য পান্ডুলিপি অবলম্বনে। এর নাট্যকাহিনিতে উপস্থাপিত হয় মহাবীর অর্জুন সত্যপালনের জন্য একযুগ ব্রহ্মচর্যব্রত গ্রহণ করে মণিপুর বনে এসেছেন। মণিপুর-রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদা, অর্জুনের প্রেমে উদ্বেলিত হলেও অর্জুন রূপহীন চিত্রাঙ্গদাকে প্রত্যাখ্যান করেন। অপমানিত চিত্রাঙ্গদা প্রেমের দেবতা মদন এবং যৌবনের দেবতা বসন্তের সহায়তায় এক বছরের জন্য অপরূপ সুন্দরীতে রূপান্তরিত হন। এবারে অর্জুন যথারীতি চিত্রাঙ্গদার প্রেমে পড়েন। কিন্তু অর্জুনকে লাভ করেও চিত্রাঙ্গদার অন্তর দ্বন্দ্বে ক্ষত-বিক্ষত হতে থাকেন অর্জুন প্রকৃতপক্ষে কাকে ভালোবাসেন, চিত্রাঙ্গদার বাহ্যিক রূপ নাকি তার প্রকৃত অস্তিত্বকে? এভাবে ‘চিত্রাঙ্গদা’ পৌরাণিক কাহিনির আড়ালে যেন এ কালেরই নর-নারীর মনোদৈহিক সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং পাশাপাশি পারস্পরিক সম্মানাবস্থানের প্রেরণারূপে উপস্থাপিত হয়। ‘চিত্রাঙ্গদা’ প্রযোজনাটি ২০১১-এ সার্ধশত রবীন্দ্রবর্ষ উপলক্ষ্যে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের বিশেষ অনুদানে নির্মাণ করে স্বপ্নদল।
‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটকে অভিনয় করেছেন সোনালী, জুয়েনা, শিশির, শ্যামল, অর্ক, জেবু, সুমাইয়া, সামাদ, ঊষা, নিসর্গ, আলী, বিপুল, হাসান, সুকুমার, বিমল, রেহান, অনিন্দ্য, নিশক প্রমুখ। প্রযোজনাটির মঞ্চ ও আলোক পরিকল্পনা করেছেন ফজলে রাব্বি সুকর্ন।
.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: রব ন দ র
এছাড়াও পড়ুন:
ঢাকায় ৬ দিনের গ্যাগারিন বিজ্ঞান ও শিল্প উৎসব
ইউরি গ্যাগারিনের ঐতিহাসিক মহাকাশ যাত্রার বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে ঢাকায় শুরু হয়েছে গ্যাগারিন বিজ্ঞান ও শিল্প উৎসব-২০২৫। মানবজাতির প্রথম মহাকাশ যাত্রার ৬৪ বছর পূর্তি উপলক্ষে এই উৎসবের আয়োজন করেছে ঢাকার রাশিয়ান হাউস।
সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে এই উৎসবের উদ্বোধন করা হয়।
ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউজের পরিচালক মিস্টার পাভেল এ. দ্ভইচেনকভ উদ্বোধনী বক্তব্য প্রদান করেন এবং অতিথিদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। তিনি ১৯৬১ সালের ১২ এপ্রিল গ্যাগারিনের অগ্রণী যাত্রার কথা তুলে ধরেন, এটিকে ‘মানব সভ্যতা মহাকাশ যুগে প্রবেশ’ মুহূর্ত হিসেবে বর্ণনা করেন, যা মানবতার জন্য একটি নতুন যুগের সূচনা করে।
দ্ভইচেনকভ রাশিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে শক্তিশালী শিক্ষা, বৈজ্ঞানিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের উপর জোর দেন।
তিনি রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের মতো চলমান প্রকল্পগুলোর কথা উল্লেখ করেন এবং রাশিয়া ও সোভিয়েত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছয় হাজারেরও বেশি বাংলাদেশি স্নাতকদের অবদানের কথা স্বীকার করেন যাদের প্রত্যক্ষ ও সক্রিয় ভূমিকা বাংলাদেশের উন্নয়নকে উল্লেখযোগ্যভাবে এগিয়ে নিয়েছে। তিনি মহাকাশ বিজ্ঞান ও জ্যোতির্বিজ্ঞানে বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান আগ্রহের প্রশংসা করেন এবং তরুণদের বড় স্বপ্ন দেখতে ও মহাবিশ্বের রহস্য উন্মোচনে উৎসাহিত করেন।
বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশন যৌথভাবে আয়োজিত এই উৎসবের লক্ষে সপ্তাহব্যাপী ধারাবাহিক কার্যক্রমের মাধ্যমে তরুণদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক কৌতূহল, সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনকে অনুপ্রাণিত করা।
উদ্বোধনী আলোচনার পর, দ্ভইচেনকভ আনুষ্ঠানিকভাবে আলোকচিত্র প্রদর্শনী ‘রাশিয়ান স্পেস এক্সপিডিশনস’ উদ্বোধন করেন। এরপর ‘ইউরি গ্যাগারিনের মহাকাশ থেকে ফিরে আসার পরে প্যারেড’ তথ্যচিত্রের প্রদর্শনীর পর এবং একটি জ্যোতির্বিজ্ঞান কর্মশালা শুরু হয়।
সপ্তাহব্যাপী উৎসবের প্রধান আকর্ষণ হিসেবে থাকবে সেমিনার এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান কর্মশালা; রকেট মডেল তৈরির প্রতিযোগিতা; মহাকাশ বিজ্ঞান বিষয়ক কুইজ প্রতিযোগিতা; ‘মহাকাশে প্রথম মানুষ’ বিষয়ের উপর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা।
উৎসবটি ১২ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে। ঢাকাস্থ রাশিয়ান হাউসের পরিচালক কর্তৃক সকল অংশগ্রহণকারীদের সার্টিফিকেট বিতরণ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সমাপ্তি হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যান্য অতিথি বক্তারা ইউরি গ্যাগারিনকে ‘বিশ্ব বীর’ এবং মানুষের সাহস ও কৌতূহলের চিরন্তন প্রতীক বলে অভিহিত করেন।
সমাপনী বক্তব্যে মিস্টার দ্ভইচেনকভ এই অনুষ্ঠানের সহ-আয়োজক বাংলাদেশ অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনসহ সকল অংশগ্রহণকারী ও অতিথিদের প্রতি আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি সবাইকে তাদের অন্বেষণের যাত্রা অব্যাহত রাখতে উৎসাহিত করেন, সবাইকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন যে ‘আকাশ সীমা নয়, এটি কেবল শুরু’। তিনি একটি অনুপ্রেরণামূলক আহ্বান দিয়ে শেষে বলেছিলেন ‘আসুন এগিয়ে যাই একসাথে, তারার দিকে!’
ঢাকা/হাসান/এনএইচ