ঢাকার আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে ঢুকে বিএনপির পার্টি অফিসের পিয়ন পরিচয় দিয়ে অসদাচরণ করা যুবক সুমনকে গ্রেপ্তার করেছে ঢাকা জেলা পুলিশ।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের চান্দল গ্রাম থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এর আগে, গত মঙ্গলবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। বিষয়টি নিয়ে বিএনপির শীর্ষ নেতারাও সোচ্চার হন। আশুলিয়া থানার ওসিকে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

গ্রেপ্তার সুমন মিয়া চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি থানার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের চান্দল গ্রামের মৃত আব্দুর রবের ছেলে।

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া এ সংক্রান্ত ভিডিওটিতে দেখা যায়, মঙ্গলবার আশুলিয়া থানার ওসির কক্ষে উপস্থিত সাংবাদিকেরা সুমনের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে বিএনপির পার্টি অফিসের পিয়ন পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘ওসি সাহেবের সঙ্গে পরিচিত হতে এসেছি’।

ওসিকে বিব্রত করার কারণ জানতে চাইলে সুমন বলেন, ‘দপ্তর স্যার বলছে ওসি নাকি ছাত্রলীগের, ছাত্রলীগের ওসি তাই আমাকে স্যার বলছে, তাই আসছি তার সাথে পরিচিত হতে’।

সেখানে উপস্থিত এক ব্যক্তি সুমনের দিকে তেড়ে যান। এবং কে এসব শিখিয়ে দিয়েছে বলে সুমনের কাছে জানতে চান।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংবাদিকদের প্রশ্নের এক পর্যায়ে সুযোগ বুঝে থানা থেকে সটকে পড়েন সুমন মিয়া।  

ওই ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর  আশুলিয়া থানার ওসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান বিএনপি’র জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

ফেসবুকে বিএনপির ভেরিফাইড পেইজ থেকে দেওয়া এক স্ট্যাটাসে এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়।

সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘আশুলিয়া থানায় ঢুকে থানার ওসির সাথে বিএনপি অফিসের পিয়ন পরিচয় দিয়ে অসদাচরণ করা সুমনের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নিতে আশুলিয়া থানার ওসি মোহাম্মদ মনিরুল হক ডাবলুকে ফোন করেন বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী। আজ দুপুরের আশুলিয়া থানার ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে রুহুল কবির রিজভী’র নজরে আসে বিষয়টি। তাৎক্ষণিক তিনি বিএনপি’র দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন সুমন নামের ব্যক্তিটি ভুয়া পরিচয়ে থানায় গিয়ে বিএনপি’র নাম নিয়ে এমন অপকর্ম করেছেন। সাথে সাথে রিজভী আশুলিয়া থানার ওসিকে ফোন করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করা এবং ভুয়া পরিচয়ে পুলিশ কর্মকর্তার সাথে অসদাচরণ করার জন্য আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহবান জানান।’

এদিকে বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে আশুলিয়া থানায় সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির জানান, আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুর পৌনে ১ টার দিকে চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার চিতোষী নামক স্থান থেকে সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা পুলিশ। গ্রেপ্তারে পর জিজ্ঞাসাবাদে সুমন মিয়া আশুলিয়া এলাকায় গার্মেন্টস ফ্যাক্টরিতে পতিত সরকারের সময় শ্রমিক নেতা হিসেবে কাজ করতেন বলে জানান। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের পিয়ন পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে থাকেন এবং অনৈতিক সুবিধা আদায়সহ গার্মেন্টস এলাকার অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির জন্য একটি মহলের সাথে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। সুমন মূলত গত মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে আশুলিয়া থানার ওসিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের পক্ষে অসৎ উদ্দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিলেন। আশুলিয়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

ঢাকা/সাব্বির/টিপু 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর অফ স র প স মন ম য় ব এনপ র ব যবস থ স মন র

এছাড়াও পড়ুন:

স্ত্রীসহ আশেক উল্লাহ ও মকছুদ মিয়ার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

কক্সবাজার-২ (মহেশখালী কুতুবদিয়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক ও তার স্ত্রীর সাহেদা নাসরীন এবং মহেশখালী পৌরসভার সাবেক পৌর মেয়র মকছুদ মিয়া ও স্ত্রী সর্জিনা আকতারের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন আদালত। 

বুধবার (৯ এপ্রিল) ঢাকার মেট্রোপলিটন সিনিয়র স্পেশাল জজ মো. জাকির হোসেন গালিবের আদালত দুদকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা আকতারুল ইসলাম এ তথ্য জানান। দুদকের পক্ষে কমিশনের সহকারী পরিচালক আসিফ আল মাহমুদ তাদের দেশত্যাগের নিষেধাজ্ঞা চেয়ে আবেদন করেন। 

আবেদনে বলা হয়, তাদের বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দমাতে অস্ত্র সরবরাহ, বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পে লুটপাট, হোটেল দখল, টেন্ডারবাজি, মদের বার, ইয়াবা ব্যবসাসহ অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনে অনুসন্ধান কার্যক্রম চলমান রয়েছে। 

অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা এবং তার পোষ্যরা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত টাকা/অন্য অস্থাবর সম্পদসহ আত্মগোপন করেছেন। অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্যাবলী এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তব্য বিশ্লেষণে প্রতীয়মান হয়, অভিযোগ সংশ্লিষ্টরা গুরুত্বপূর্ণ আলামত এবং অবৈধ টাকাসহ যে কোনো মুহূর্তে দেশ ত্যাগ করতে পারেন। তাদের বিদেশ গমন রহিত করা না গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রমে বিঘ্ন ঘটাসহ অনুসন্ধান কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য তাদের বিদেশ গমন রহিত করা একান্ত আবশ্যক।

ঢাকা/মামুন/এনএইচ

সম্পর্কিত নিবন্ধ