ইস্টার্ণ ব্যাংক পিএলসি (ইবিএল) এক গ্রাহকের বিরুদ্ধে ২০০ কোটি টাকার মানহানির মামলা করেছে। গত মঙ্গলবার (৪ মার্চ) ঢাকার প্রথম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে মানহানির মামলাটি দায়ের করে ইবিএল কর্তৃপক্ষ।

ইবিএল গতকাল বৃহস্পতিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি গণমাধ্যমকে জানিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে গ্রাহক মো.

মোর্তোজা আলীর বিরুদ্ধে সমন জারি করেছেন।

ব্যাংকটি জানিয়েছে, চাঁদগাঁও ব্রাঞ্চের গ্রাহক মোর্তোজা আলী অসৎ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে সম্প্রতি চট্টগ্রাম চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ, ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ ৪৬ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একটি মামলার জন্য পিটিশন জমা দেন।

ইবিএল বলছে, ‘পিটিশনে ভিত্তিহীনভাবে ইস্টার্ণ ব্যাংকের বিরুদ্ধে ১১ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়। পিটিশনের বিষয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে রিপোর্ট প্রকাশিত হয়। এর ফলে গ্রাহকদের মধ্যে বিভ্রান্তির সৃষ্টি হয়। ব্যাংকের ভাবমূর্তি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতিপূরণ হিসেবে মোর্তোজা আলীর বিরুদ্ধে ইস্টার্ণ ব্যাংক মানহানির মামলাটি দায়ের করেছে।’

রাজধানীর গুলশানে ইস্টার্ণ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি বিষয়টি নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আলী রেজা ইফতেখার।

সেদিনের সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, এটি ২০১৭ সালে সংঘটিত একটি তহবিল আত্মসাতের ঘটনার সঙ্গে সম্পর্কিত, যা ব্যাংকের একটি শাখার সাবেক কর্মকর্তা বহিরাগত প্রতারকদের সঙ্গে যোগসাজশ করে করেছিলেন। ওই ঘটনায় ব্যাংক কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করে। দোষী কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলাও করে। পরবর্তী সময়ে আদালত তাঁদের দোষী সাব্যস্ত করে কারাদণ্ডসহ আর্থিক জরিমানা আরোপ করেন।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কর মকর ত গ র হক

এছাড়াও পড়ুন:

মায়ের কোলে ফিরল হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া শিশু

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চুরি হওয়া ২ মাস ৭ দিন বয়সী এক শিশুকে র‍্যাব উদ্ধার করেছে। চুরির ঘটনার সাড়ে ১০ ঘণ্টা পর গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার মীর ওয়ারিশপুর ইউনিয়নের বেচার দোকান এলাকার একটি বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। অভিযানে চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীকেও আটক করা হয়েছে।

উদ্ধার হওয়া শিশুটির নাম আবদুর রহমান। সে উপজেলার মীর ওয়ারিশপুর ইউনিয়নের চৌকিদার বাড়ি এলাকার লিটন মিয়া ও জান্নাতুল ফেরদাউসের ছেলে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে শিশুটিকে চুরির ঘটনা ঘটে। শিশুটিকে উদ্ধারের পর গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে ওই শিশুটি তার মাসহ থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় আটক নারীর নাম সামছুন নাহার (৪০)। তিনিও মীর ওয়ারিশপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। র‍্যাব জানিয়েছে, লালন–পালনের উদ্দেশ্যেই ওই নারী শিশুটিকে চুরি করে ঘরে নিয়ে যান।

র‌্যাব ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিশু চুরির বিষয়টি জানাজানি হলে তাৎক্ষণিক শিশুটিকে উদ্ধারে নানা তৎপরতা শুরু করে পুলিশ, র‌্যাব ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চুরির ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযান শুরু করা হয়।
র‌্যাব-১১, নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) মিঠুন কুমার কুণ্ডু প্রথম আলোকে বলেন, অভিযানের একপর্যায়ে রাতে তাঁরা জানতে পারেন, মীর ওয়ারিশপুর এলাকার একটি বাড়িতে চুরি হওয়া ওই শিশু রয়েছে। তাৎক্ষণিক সেখানে অভিযান পরিচালনা করে তথ্যের সত্যতা মেলে এবং শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। মিঠুন কুমার কুণ্ডু আরও বলেন, এ ঘটনায় আটক নারী জানিয়েছেন তাঁর একমাত্র সন্তান প্রতিবন্ধী। তাই তিনি লালন-পালনের উদ্দেশ্যে ওই শিশুটিকে চুরি করেন।

উদ্ধার করা শিশুটিকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তাঁর মা জান্নাতুল ফেরদাউস। তিনি বলেন, ‘হারানো মানিক ফিরে পেয়েছি এর চেয়ে খুশির কিছু নেই। আমার ছেলেকে উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরের দিকে শিশুটির মা জান্নাতুল ফেরদাউস তাঁর শিশুকে নিয়ে জ্বরের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে যান। সঙ্গে ছিলেন তাঁর (জান্নাতুলের) মা তাজনেহার বেগম। তিনিও চক্ষু চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন। শিশুটির মা ও নানি টিকিট সংগ্রহের জন্য দুটি লাইনে দাঁড়ান। এ সময় জরুরি বিভাগের সামনে থাকা আরেক নারী জান্নাতুলকে সহযোগিতার কথা বলে তাঁর শিশুটি নিজের কোলে নিয়ে বেঞ্চে বসেন। মায়ের কাছ থেকে নেওয়ার পর কয়েক মিনিট ওই নারী শিশুটিকে নিয়ে বেঞ্চে বসা ছিলেন। এরপর ওই নারী শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে সটকে পড়েন। ওই নারীর সঙ্গে আনুমানিক ছয়-সাত বছরের একটি মেয়েশিশুও ছিল।

জান্নাতুল টিকিট সংগ্রহ করার পর যখন সন্তানকে নিতে আসেন, তখন দেখেন ওই নারী নেই। তখন তাঁর চিৎকার ও আহাজারিতে ঘটনাটি জানাজানি হয় এবং বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, অপরিচিত ওই নারী জান্নাতুলের শিশুপুত্রকে নিয়ে হাসপাতালের সীমানা অতিক্রম করে ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়কের দিকে চলে গেছেন।

বেগমগঞ্জ মডেল থানায় কর্তব্যরত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধার করা শিশুটি তাঁর মাসহ থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। একইভাবে শিশু চুরির ঘটনায় জড়িত নারীও থানায় আছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। আটক নারী ও উদ্ধার হওয়া শিশুকে আদালতে পাঠানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ