হামাসের সঙ্গে প্রথমবারের মতো সরাসরি আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র, কী চায় ফিলিস্তিনি সশস্ত্র সংগঠনটি
Published: 7th, March 2025 GMT
গত ১৭ মাসের বেশির ভাগ সময় ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের চেয়ে গাজা যুদ্ধের রাজনৈতিক সমাধানের ধারণাই বেশি আলোচিত হয়েছে। তবে এ ধারণাও বাস্তবতা থেকে অনেক দূরে বলে মনে করা হচ্ছে। ইসরায়েলের ধ্বংসাত্মক সামরিক অভিযানে গাজায় এরই মধ্যে প্রাণ গেছে প্রায় অর্ধলাখ মানুষের। সেই সঙ্গে চলেছে অনেক বাগাড়ম্বর।
ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সদস্যরা ‘দুর্বল হয়ে গেছেন ও মুষড়ে পড়েছেন’ বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। আর তাঁর মিত্র ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বারবারই সশস্ত্র সংগঠনটিকে ‘নির্মূল করার’ অঙ্গীকার করেছেন। তবে তাঁর এই একমাত্র বিকল্প সমাধানকে বাস্তবে রূপ দিয়ে গাজায় ‘পরিপূর্ণ বিজয়’ অর্জন করা এখনো অধরাই রয়ে গেছে।
গত বুধবার যা দেখা গেল, তা হলো, মার্কিন প্রেসিডেন্ট অধিকতর বাস্তব কিছু অর্জনে সমঝোতায় আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেন। কেননা, নিজেদের কাছে সন্ত্রাসী বলে বিবেচিত সংগঠনগুলোর সঙ্গে আলোচনা না করার দীর্ঘদিনের নীতি থেকে সরে আসছে তাঁর সরকার।
আরও পড়ুনট্রাম্পের হুমকি নেতানিয়াহুকে যুদ্ধবিরতি চুক্তি লঙ্ঘনে উৎসাহিত করছে: হামাসের অভিযোগ১৮ ঘণ্টা আগেওই দিন হোয়াইট হাউসের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লেভিট সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘(গাজা যুদ্ধ অবসানে) সমঝোতায় নিযুক্ত মার্কিন বিশেষ দূতের যে কারও সঙ্গে কথা বলার কর্তৃত্ব রয়েছে।’
গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের তাড়িয়ে দিয়ে এ উপত্যকা যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে নেওয়া হবে বলে সম্প্রতি মন্তব্য করেছেন ট্রাম্প। তাঁর এ বাগাড়ম্বরের বাইরে দৃশ্যত মার্কিন সরকার নিজেদের কাছে থাকা ৫৯ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে হামাস কী চায়, সেটিই এখন শুনতে চায়। এসব জিম্মির মধ্যে যাঁরা বেঁচে রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র একজন মার্কিন নাগরিক আছেন বলে মনে করা হচ্ছে; আর মৃত জিম্মিদের মধ্যে রয়েছেন চারজন।
ট্রাম্পের গাজা দখলের বাগাড়ম্বরের বাইরে দৃশ্যত মার্কিন সরকার নিজেদের কাছে থাকা ৫৯ জিম্মিকে মুক্তি দেওয়ার বিনিময়ে হামাস কী চায়, সেটিই এখন শুনতে চায়। এই জিম্মিদের মধ্যে যাঁরা বেঁচে রয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মাত্র একজন মার্কিন নাগরিক আছেন বলে মনে করা হচ্ছে; আর মৃত জিম্মিদের মধ্যে রয়েছেন চারজন।গাজায় যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠা ও জিম্মি মুক্তি নিয়ে আগে হামাসের সঙ্গে যত আলোচনা হয়েছে, তার সবই হয়েছে কাতার ও মিসরের সরাসরি মধ্যস্থতায়।
সশস্ত্র সংগঠন হামাসের প্রতিষ্ঠা ১৯৮০–এর দশকের শেষ দিকে। ইসরায়েল রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার সংগ্রামে যুক্ত সংগঠনটি। দীর্ঘদিন ধরে সংগঠনটি ইসরায়েলকে ধ্বংস করার পক্ষে প্রচার চালিয়ে এসেছে। তবে ২০১৭ সালে সংগঠনটি বলেছে, গাজা, পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুজালেম নিয়ে একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাকে মেনে নেবে তারা।
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ধ্বংস হয়ে যাওয়া ভবনের সামনে বসে আছেন এক ফিলিস্তিনি তরুণ.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
প্রথমবার এফডিসি উপদেষ্টা মাহফুজ আলম, জানালেন পরিকল্পনার কথা
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) পরিদর্শন করলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম। মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত দায়িত্বের অংশ হিসেবে আজ মঙ্গলবার দুপুরে এফডিসি পরিদর্শন করেন তিনি।
বিএফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুমা রহমানের সঙ্গে নিয়ে বিভিন্ন শুটিং ফ্লোর ঘুরে দেখার পাশাপাশি কর্মকর্তা–কর্মচারীদের সঙ্গে কথা বলেন মাহফুজ। এরপর জহির রায়হান মিলনায়তনে এফডিসি নিয়ে নিজের পরিকল্পনা ও ভাবনার কথা জানান।
মাহফুজ আলম বলেন, ‘এফডিসিতে মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত অনেকগুলো দপ্তর আছে। এগুলোর দেখার উদ্দেশ্যে এখানে আসা। আসার পর অনেকের সঙ্গে কথা হয়েছে। এখানে অনেকগুলো সংকট আছে। কর্মকর্তা–কর্মচারী যাঁরা আছেন, তাঁদেরও অনেক চাহিদা আছে। আমি সরেজমিনে দেখতে এলাম, যাতে বিষয়টা আমার বোধগম্য হয়, কী চলছে, কীভাবে চলছে।’
মাহফুজ আলম বলেন, ‘এফডিসির সম্ভাবনা অনেক। ঢাকার একেবারে প্রাণকেন্দ্রে এত বড় জায়গা নিয়ে তৈরি এফডিসিতে যে সুযোগ-সুবিধাগুলো আছে, সেগুলো সাধারণত যেকোনো রাষ্ট্রের ফিল্ম সিটি বা এ রকম কোনো জায়গাতে থাকে। বিষয়টা এমন, কম্পোজিট একটা ব্যাপার-যেখানে শুটিং, এডিটিং, ডাবিংসহ সব সুযোগ-সুবিধা একসঙ্গে পাওয়া যাবে। সম্পাদনা থেকে শুরু করে প্রি প্রোডাকশন, পোস্ট প্রোডাকশনের সব কাজ একই জায়গায় হয়। আমি মনে করি, আমার দায়িত্বকালের মধ্যে এফডিসিকে কম্পোজিট ফিল্ম সিটি বানিয়ে দেওয়ার। এফডিসি যাতে লাভজনক হয়ে ওঠে, তাহলে এখানে যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, তাঁদের সবার বেতন–ভাতা থেকে শুরু করে প্রণোদনা সবই এখান থেকে দেওয়া সম্ভব হবে। এফডিসি নিয়ে এটাই হচ্ছে আমার একমাত্র লক্ষ্য। আশা করি, এখানে আপনারা যাঁরা আছেন, সবাই সহযোগিতা করবেন।’
জহির রায়হান মিলনায়তনে আজ তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা ছাড়া এফডিসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মাসুমা রহমান ও চিত্রনায়ক নাঈম বক্তব্য দেন।
এর আগে শিল্পী সমিতিতে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান চলচ্চিত্রের বরেণ্য অভিনয়শিল্পী আনোয়ারা। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন চিত্রনায়ক নাঈম, অভিনয়শিল্পী আলীরাজ, সুব্রত, রুমানা ইসলাম মুক্তি, শিবা শানু প্রমুখ।