হুঁশিয়ারির পরও নির্ধারিত দামে মিলছে না সয়াবিন তেল
Published: 7th, March 2025 GMT
চট্টগ্রাম নগরে বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরবরাহ গত কয়েক দিনে কিছুটা বেড়েছে। তবে নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে অন্তত ২৫ টাকা বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেল। যদিও দুই দিন আগেও দাম ছিল আরও পাঁচ টাকা বেশি।
গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলনকক্ষে ভোজ্যতেল এবং নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করা হয়। সেখানে চট্টগ্রাম সিটি মেয়র শাহাদাত হোসেন ও জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে খোলা সয়াবিন তেলের দাম নির্ধারণ করে দেন।
সভায় সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ১০ এপ্রিল পর্যন্ত আমদানিকারকেরা ১৫৩ টাকা দরে প্রতি লিটার খোলা সয়াবিন তেল সরবরাহ করবেন। পাইকারি পর্যায়ে তা ১৫৫ এবং খুচরা পর্যায়ে সর্বোচ্চ ১৬০ টাকা বিক্রি করা যাবে। যদিও সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী দেশের বাজারে খোলা সয়াবিনের মূল্য নির্ধারণ করা রয়েছে ১৫৭ টাকা এবং বোতলজাত সয়াবিন ১৭৫ টাকা।
মঙ্গলবার সার্কিট হাউসের সভার এক পর্যায়ে জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, ‘আমি দেখতে চাই, রাষ্ট্রের শক্তি বেশি না ব্যবসায়ীদের শক্তি। তেলের সাপ্লাই যদি পর্যাপ্ত না হয়, তবে গুদাম পর্যায়ে অভিযান চালানো হবে। কীভাবে ভোক্তা তেল পাবে, সেই ব্যবস্থা করুন। না হয় রাষ্ট্র ব্যবস্থা নেবে। আর কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।’
হুঁশিয়ারি মানা হচ্ছে না খুচরায়
জেলা প্রশাসকের ঘোষণার দুই দিন পরও খুচরা বাজারে তেলের দাম কমেনি। তবে আজ শুক্রবার নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, চন্দনপুরাসহ আশপাশের বাজার ও খুচরা দোকানে নির্ধারিত দামে তেল বিক্রি হতে দেখা যায়নি। বাজারে খোলা সয়াবিন প্রতি লিটার বিক্রি হয়েছে ১৮৫ টাকা দরে। তবে পাইকারি বাজারে কমেছে খোলা তেলের দাম। পাইকারি বিক্রেতারা ১৫৫ থেকে ১৫৬ টাকার মধ্যেই তেল বিক্রি করছেন।
খুচরা বাজারে বোতলজাত সয়াবিন ২০০ টাকার আশপাশে বিক্রি হচ্ছে। তবে গুটিকয়েক দোকানে ১৮৫ টাকা দরেও বিক্রি হতে দেখা গেছে। যদিও সেখানে চাহিদার তুলনায় তেল কম। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, তাঁরা আগে বাড়তি দামে তেল কিনেছেন, তাই এখন বাড়তি দামে বিক্রি করছেন। নতুন তেল এলে নির্ধারিত দামেই বিক্রি করবেন।
খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো.
জানতে চাইলে চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের অভিযানে আমরা অধিকাংশ বাজারে দাম কম পেয়েছি। কয়েকটি বাজারে দাম বেশির খবর যেহেতু পাওয়া গেছে, আমরা ম্যাজিস্ট্রেট পাঠাব।’
বোতলজাত তেলের সরবরাহ স্বাভাবিক হচ্ছে
গত কয়েক দিনে বাজারে বোতলজাত সয়াবিনের সরবরাহ বেড়েছে। গত বুধবার বাজার পরিদর্শনে গিয়ে চট্টগ্রাম মেয়র শাহাদাত হোসেনও একই কথা জানিয়েছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা দোকানে বোতলজাত সয়াবিন তেল দেখতে পেয়েছি। আমি আশাবাদী, আরও বেশি সয়াবিন তেলের বোতল পাওয়া যাবে।’
ড্রাম থেকে ছোট কন্টেইনারে ভরা হচ্ছে খোলা সয়াবিন তেলউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সরবর হ পর য য় ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
বিদ্যুৎ না থাকায় ডিইপিজেডে উৎপাদন কার্যক্রম বন্ধ
ঢাকার সাভার উপজেলার আশুলিয়ায় ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চলে (ডিইপিজেড) আজ সোমবার দুপুর থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে দুপুরের পর ডিইপিজেডের সব কারখানায় শ্রমিকদের ছুটি দেওয়া হয়েছে। ডিইপিজেডের জন্য নিরবচ্ছিন্নভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড পাওয়ারের বিদ্যুৎকেন্দ্রে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করায় এ সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো. শরীফুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ ইউনাইটেড পাওয়ারের ডিইপিজেডে বিদ্যুৎ সরবরাহের প্রকল্পটিতে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এতে তারা উৎপাদন করতে না পারায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারছে না। ফলে ডিইপিজেডে প্রায় ৯০টি কারখানার এক লাখের মতো শ্রমিককে ছুটি দেওয়া হয়।
বিদ্যুতের সংযোগ না থাকায় বড় ধরনের বিপর্যয়ের মুখে পড়তে হয়েছে উল্লেখ করে মো. শরীফুল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার যদি এটি অব্যাহত থাকে, তবে সংকট আরও বাড়বে। শ্রমিকেরা কাজ না করতে পেরে বিক্ষুব্ধ হলে বিষয়টি আরও জটিল হয়ে উঠবে। কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়া এ ধরনের ঘটনায় বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
ডিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক বলেন, ‘তিতাস বলছে, ইউনাইটেড পাওয়ারের কাছে বিল বকেয়া রয়েছে। তারা বকেয়া পরিশোধ করেনি। এ ব্যাপারে আদালতে দীর্ঘদিন ধরে মামলা চলছে। কিন্তু আমাদের কথা হচ্ছে, বেপজাকে কোনো ধরনের পূর্ব নোটিশ না দিয়ে হঠাৎ করে এ ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছেন। এ ধরনের পদক্ষেপের আগে ডিইপিজেডের গুরুত্ব বিবেচনা করে আলোচনার মধ্য দিয়ে বিষয়টির সমাধান করা উচিত ছিল।’
এ বিষয়ে ইউনাইটেড পাওয়ার প্ল্যান্টের ব্যবস্থাপক মো. মমতাজ হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাসের কোনো প্রেশার নেই। প্রেশার শূন্য। কিন্তু কেন তিতাস কর্তৃপক্ষ এমনটি করল, সে ব্যাপারে এখানকার (আশুলিয়া অঞ্চলের) তিতাসের লোকজন কিছু বলতে পারেননি। আমরা নিজেরাও বিষয়টি নিয়ে জানি না। এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘আমার জানামতে, বকেয়া নিয়ে কোনো ধরনের মামলা নেই। তিতাস কেন গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দিল, সেটি জানা নেই।’
জানতে চাইলে তিতাসের আশুলিয়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক প্রকৌশলী আবু ছালেহ মুহাম্মদ খাদেমুদ্দীন প্রথম আলোকে বলেন, গ্যাসের বিল বকেয়া থাকায় গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। এটি সরকারের ঊর্ধ্বতন মহলের সিদ্ধান্ত। দুপুরের দিকে গ্যাস–সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে।