হিজবুত তাহরীরের কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ
Published: 7th, March 2025 GMT
নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের সব কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দপ্তর।
শুক্রবার (৭ মার্চ) পুলিশ সদর দপ্তর থেকে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়েছে, হিযবুত তাহরীর নিষিদ্ধ সংগঠন। আইন অনুযায়ী তাদের সব কার্যক্রমই শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
জননিরাপত্তার প্রতি হুমকি বিবেচনায় ২০০৯ সালের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ সরকার হিযবুত তাহরীরকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করে। সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯ অনুযায়ী নিষিদ্ধ ঘোষিত যেকোনো সংগঠন কর্তৃক সভা, সমাবেশ, মিছিল, পোস্টার-লিফলেট বিতরণ ও অন্যান্য উপায়ে প্রচারণাসহ সকল কার্যক্রম শাস্তিযোগ্য অপরাধ। হিযবুত তাহরীরসহ নিষিদ্ধ কোনো সংগঠন সভা, সমাবেশ ও যেকোনো উপায়ে প্রচারণামূলক কার্যক্রম পরিচালনা করলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
ঢাকা/এমআর/রফিক
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর শ স ত য গ য অপর ধ স গঠন
এছাড়াও পড়ুন:
স্যার ফজলে হাসান আবেদের ৮৯তম জন্মদিন আজ
বিশ্বের শীর্ষ বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা স্যার ফজলে হাসান আবেদের ৮৯তম জন্মদিন আজ রোববার (২৭ এপ্রিল)। স্যার ফজলে হাসান আবেদ ১৯৩৬ সালের এই দিনে হবিগঞ্জের বানিয়াচং গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত ব্র্যাক এখন বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থায় পরিণত হয়েছে।
ব্র্যাকের জনসংযোগ বিভাগের দেওয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ১৯৬২ সালে ফজলে হাসান আবেদ লন্ডনে অ্যাকাউন্ট্যান্সি বিষয়ে পড়াশোনা করেন এবং কস্ট ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট হন। পাকিস্তানে একটি বিলাতি বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানে কর্মরত থাকাকালে ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড় এবং ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নাটকীয়ভাবে তাঁর জীবনের দিক পরিবর্তন করে দেয়। যুদ্ধ শুরুর পর তিনি চাকরি ছেড়ে লন্ডনে চলে যান। সেখানে মুক্তিযুদ্ধে সহায়তার জন্য ‘অ্যাকশন বাংলাদেশ’ ও ‘হেলপ বাংলাদেশ’ নামে দুটি সংগঠন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেন।
দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭২ সালের শুরুর দিকে সুনামগঞ্জের দুর্গম এলাকা শাল্লায় ফিরে আসা শরণার্থীদের ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য ৩৬ বছর বয়সে ব্র্যাক প্রতিষ্ঠা করেন স্যার ফজলে হাসান আবেদ। তখন দেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণ বিপর্যস্ত। ভারত থেকে ফিরে আসা এক কোটি শরণার্থীর জন্য জরুরিভাবে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করার প্রয়োজন ছিল। সংগঠিত করার মাধ্যমে দরিদ্র মানুষের দক্ষতা উন্নয়ন, কর্মসংস্থান ও ক্ষমতায়ন ঘটিয়ে তাদের জীবনমানের পরিবর্তন ঘটানো ছিল ব্র্যাকের মূল লক্ষ্য।
সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে স্বাবলম্বী করে তোলার লক্ষ্যে ব্র্যাক একটি সমন্বিত উন্নয়নকৌশল গড়ে তোলে, যার আওতায় রয়েছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, ক্ষুদ্রঋণ, দক্ষতা উন্নয়ন, কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তা, কুটির শিল্প, মানবাধিকার, সড়ক নিরাপত্তা, অভিবাসন এবং নগর উন্নয়নের মতো বিভিন্ন কর্মসূচি।
ব্র্যাক এখন বিশ্বের সর্ববৃহৎ এনজিও। প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম বাংলাদেশসহ এশিয়া ও আফ্রিকার ১৪টি দেশে পরিচালিত হচ্ছে। প্রভাব, উদ্ভাবন ও টেকসই বৈশিষ্ট্যের বিবেচনায় জেনেভাভিত্তিক গণমাধ্যম সংগঠন ‘এনজিও অ্যাডভাইজার’ ২০২০ সালে টানা পঞ্চমবারের মতো ব্র্যাককে বিশ্বের শীর্ষ ৫০০ এনজিওর মধ্যে প্রথম হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
স্যার ফজলে হাসান আবেদ ২০১৯ সালের ২০ ডিসেম্বর ঢাকায় শেষনিশ্বাস ত্যাগ করেন।
অন্যান্য স্বীকৃতি ও সম্মাননাসামাজিক ক্ষেত্রে অনন্যসাধারণ অবদানের জন্য স্যার ফজলে হাসান আবেদ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে অসংখ্য পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন। তাঁর উল্লেখযোগ্য পুরস্কারগুলোর মধ্যে রয়েছে—শিক্ষা উন্নয়নে বিশ্বের সর্বোচ্চ পুরস্কার ইদান প্রাইজ (২০১৯), নেদারল্যান্ডসের রাজা কর্তৃক রয়্যাল নাইটহুড উপাধি (২০১৯), লেগো অ্যাওয়ার্ড (২০১৮), লাউদাতে সি’অ্যাওয়ার্ড (২০১৭), হোসে এডগারডো ক্যাম্পোস কোলাবোরেটিভ লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড (২০১৬), টমাস ফ্রান্সিস জুনিয়র মেডেল অব গ্লোবাল পাবলিক হেলথ পুরস্কার (২০১৬), ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ (২০১৫), ট্রাস্ট উইমেন হিরো অ্যাওয়ার্ড (২০১৪), অর্ডার অব সিভিল মেরিট (অর্ডেন ডেল মেরিটো সিভিল, ২০১৪), লেভ তলস্তয় স্বর্ণপদক (২০১৪), ওপেন সোসাইটি প্রাইজ (২০১৩), শিক্ষার জন্য ওয়াইজ প্রাইজ (২০১১), এন্ট্রাপ্রেনিউর ফর দ্য ওয়ার্ল্ড (২০০৯), ডেভিড রকফেলার ব্রিজিং লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড (২০০৮), ক্লিনটন গ্লোবাল সিটিজেনশিপ অ্যাওয়ার্ড (২০০৭), হেনরি আর ক্রাভিস প্রাইজ ইন লিডারশিপ (২০০৭), দারিদ্র্য দূরীকরণ ও সামাজিক উন্নয়নে অবদানের জন্য পল্লীকর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশন (পিকেএসএফ) কর্তৃক আজীবন সম্মাননা (২০০৭), মানব উন্নয়নে অসামান্য অবদানের জন্য ইউএনডিপি মাহবুবুল হক অ্যাওয়ার্ড (২০০৪), গেটস অ্যাওয়ার্ড ফর গ্লোবাল হেলথ (২০০৪), গ্লেইটসম্যান ফাউন্ডেশন পুরস্কার (২০০৩), দ্য শোয়াব ফাউন্ডেশন সোশ্যাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ অ্যাওয়ার্ড (২০০৩), ওলফ পামে অ্যাওয়ার্ড (২০০১), ইন্টারঅ্যাকশন হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়াার্ড (১৯৯৮), অ্যালানশন ফেইনস্টেইন ওয়ার্ল্ড হাঙ্গার পুরস্কার (১৯৯০), ইউনেসকো নোমা পুরস্কার (১৯৮৫) এবং কমিউনিটি লিডারশিপের জন্য র্যামন ম্যাগসাইসাই অ্যাওয়ার্ড (১৯৮০)।
‘অশোকা’ ফজলে হাসান আবেদকে অন্যতম ‘গ্লোবাল গ্রেট’ স্বীকৃতিতে ভূষিত করেছে। তিনি এই প্রতিষ্ঠানের ‘গ্লোবাল একাডেমি ফর সোশ্যাল এন্ট্রাপ্রেনিউরশিপ’-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য। বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দারিদ্র্য হ্রাসে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ব্রিটিশ ক্রাউন ২০০৯ সালে তাঁকে ‘দ্য মোস্ট ডিস্টিংগুইশড অর্ডার অব সেন্ট মাইকেল অ্যান্ড সেন্ট জর্জ’ উপাধিতে ভূষিত করেন। বিশ্বের স্বল্পোন্নত দেশগুলোয় সহায়তার ক্ষেত্রে জাতিসংঘ মহাসচিবকে পরামর্শ প্রদানে নিযুক্ত ‘বিশ্বের স্বনামধন্য ব্যক্তিবর্গ’ তালিকায় ২০১০ সালে স্যার ফজলে হাসান আবেদ অন্তর্ভুক্ত হন। ২০১৪ ও ২০১৭ সালে ‘ফরচুন ম্যাগাজিন’ কর্তৃক বিশ্বের ৫০ জন সর্বশ্রেষ্ঠ নেতার তালিকায় তাঁর নাম অন্তর্ভুক্ত হয়।
স্যার ফজলে হাসান আবেদ বহু সম্মানসূচক ডিগ্রি পেয়েছেন। এর মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটি থেকে ‘ডক্টর অব লজ’ (২০১৪), যুক্তরাজ্যের অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে ‘ডক্টর অব লেটার্স’(২০০৯), যুক্তরাষ্ট্রের কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে ‘ডক্টর অব লজ’(২০০৮) এবং যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল ইউনিভার্সিটি থেকে ‘ডক্টরেট অব হিউমেন লেটার্স’(২০০৭) উল্লেখযোগ্য।