সার্চ ইঞ্জিনকে আরও উন্নত ও কার্যকর করতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াচ্ছে গুগল। এরই অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটি পরীক্ষামূলকভাবে চালু করেছে ‘এআই মোড’। এ সুবিধা চালুর ফলে প্রচলিত অনুসন্ধান পদ্ধতির পাশাপাশি চ্যাটবটের মতো আরও বিশদ ও বুদ্ধিদীপ্ত উত্তর জানা যাবে। প্রাথমিকভাবে শুধু গুগল ওয়ান এআই প্রিমিয়াম ব্যবহারকারীরা নতুন মোডটি ব্যবহার করতে পারবেন।

এআই মোড সুবিধা ল্যাবস বিভাগ থেকে চালু করে ব্যবহার করতে হবে। এআই মোডটি জেমিনি ২.

০ প্রযুক্তির ওপর ভিত্তি করে তৈরি করায় ব্যবহারকারীরা প্রচলিত সার্চ ফলাফলের পরিবর্তে এআই দিয়ে তৈরি বিভিন্ন ফলাফল দেখতে পারবেন। প্রতিটি উত্তরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সূত্রের লিংক থাকবে। ফলে ব্যবহারকারীরা চাইলে আরও বিশদ তথ্য জানতে পারেন।

আরও পড়ুনগুগল সার্চ থেকে ব্যক্তিগত তথ্য মুছে ফেলা আরও সহজ হলো২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

নতুন এআই মোডটি মূলত এআই ওভারভিউ প্রযুক্তির পরবর্তী সংস্করণ। এ বিষয়ে গুগলের সার্চ বিভাগের ভাইস প্রেসিডেন্ট রবি স্টেইন এক ব্লগ বার্তায় জানিয়েছেন, এআই মোড চালু থাকলে ব্যবহারকারীরা বর্তমানের তুলনায় আরও জটিল প্রশ্নের বিস্তারিত উত্তর জানতে পারবেন। পাশাপাশি অনুসন্ধানের ভিত্তিতে সহায়ক বিভিন্ন প্রশ্ন করতে পারবেন তারা। নতুন এই সুবিধা চালুর ফলে এআই ওভারভিউয়ের পরিধি আরও বাড়বে। ফলে ব্যবহারকারীরা সহজেই জটিল প্রশ্নের নির্ভরযোগ্য উত্তর জানার সুযোগ পাবেন।

আরও পড়ুনএআই সার্চে অদ্ভুত পরামর্শ দিচ্ছে গুগল২৭ মে ২০২৪

গুগলের তথ্যমতে, কিছু অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে যদি এআই নির্ভরযোগ্য উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়, তাহলে প্রচলিত ওয়েব অনুসন্ধানের ফলাফলই দেখানো হবে। এ বিষয়ে গুগল এক ব্লগ বার্তায় জানিয়েছে, ‘আমাদের লক্ষ্য, যত বেশি সম্ভব এআই দিয়ে তৈরি উত্তর দেওয়া। তবে, যদি কোনো ক্ষেত্রে এআই যথেষ্ট সহায়ক বা নির্ভরযোগ্য না হয়, তাহলে প্রচলিত ওয়েব অনুসন্ধানের ফলাফলই দেখানো হবে।

সূত্র: ইন্ডিয়া টুডে

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র প রচল ত এআই ম ড প রব ন ফল ফল

এছাড়াও পড়ুন:

মায়ের কোলে ফিরল হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়া শিশু

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে চুরি হওয়া ২ মাস ৭ দিন বয়সী এক শিশুকে র‍্যাব উদ্ধার করেছে। চুরির ঘটনার সাড়ে ১০ ঘণ্টা পর গতকাল শনিবার রাতে উপজেলার মীর ওয়ারিশপুর ইউনিয়নের বেচার দোকান এলাকার একটি বাড়ি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। অভিযানে চুরির ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে এক নারীকেও আটক করা হয়েছে।

উদ্ধার হওয়া শিশুটির নাম আবদুর রহমান। সে উপজেলার মীর ওয়ারিশপুর ইউনিয়নের চৌকিদার বাড়ি এলাকার লিটন মিয়া ও জান্নাতুল ফেরদাউসের ছেলে। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে শিশুটিকে চুরির ঘটনা ঘটে। শিশুটিকে উদ্ধারের পর গতকাল রাত সাড়ে ১০টার দিকে তার মায়ের কোলে তুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে ওই শিশুটি তার মাসহ থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। এ ঘটনায় আটক নারীর নাম সামছুন নাহার (৪০)। তিনিও মীর ওয়ারিশপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। র‍্যাব জানিয়েছে, লালন–পালনের উদ্দেশ্যেই ওই নারী শিশুটিকে চুরি করে ঘরে নিয়ে যান।

র‌্যাব ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, শিশু চুরির বিষয়টি জানাজানি হলে তাৎক্ষণিক শিশুটিকে উদ্ধারে নানা তৎপরতা শুরু করে পুলিশ, র‌্যাব ও জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। চুরির ঘটনার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে অভিযান শুরু করা হয়।
র‌্যাব-১১, নোয়াখালী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার (ভারপ্রাপ্ত) মিঠুন কুমার কুণ্ডু প্রথম আলোকে বলেন, অভিযানের একপর্যায়ে রাতে তাঁরা জানতে পারেন, মীর ওয়ারিশপুর এলাকার একটি বাড়িতে চুরি হওয়া ওই শিশু রয়েছে। তাৎক্ষণিক সেখানে অভিযান পরিচালনা করে তথ্যের সত্যতা মেলে এবং শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। মিঠুন কুমার কুণ্ডু আরও বলেন, এ ঘটনায় আটক নারী জানিয়েছেন তাঁর একমাত্র সন্তান প্রতিবন্ধী। তাই তিনি লালন-পালনের উদ্দেশ্যে ওই শিশুটিকে চুরি করেন।

উদ্ধার করা শিশুটিকে ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তাঁর মা জান্নাতুল ফেরদাউস। তিনি বলেন, ‘হারানো মানিক ফিরে পেয়েছি এর চেয়ে খুশির কিছু নেই। আমার ছেলেকে উদ্ধার করে দেওয়ার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই।’

হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরের দিকে শিশুটির মা জান্নাতুল ফেরদাউস তাঁর শিশুকে নিয়ে জ্বরের চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে যান। সঙ্গে ছিলেন তাঁর (জান্নাতুলের) মা তাজনেহার বেগম। তিনিও চক্ষু চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসা নেওয়ার জন্য হাসপাতালে গিয়েছিলেন। শিশুটির মা ও নানি টিকিট সংগ্রহের জন্য দুটি লাইনে দাঁড়ান। এ সময় জরুরি বিভাগের সামনে থাকা আরেক নারী জান্নাতুলকে সহযোগিতার কথা বলে তাঁর শিশুটি নিজের কোলে নিয়ে বেঞ্চে বসেন। মায়ের কাছ থেকে নেওয়ার পর কয়েক মিনিট ওই নারী শিশুটিকে নিয়ে বেঞ্চে বসা ছিলেন। এরপর ওই নারী শিশুটিকে নিয়ে হাসপাতাল থেকে সটকে পড়েন। ওই নারীর সঙ্গে আনুমানিক ছয়-সাত বছরের একটি মেয়েশিশুও ছিল।

জান্নাতুল টিকিট সংগ্রহ করার পর যখন সন্তানকে নিতে আসেন, তখন দেখেন ওই নারী নেই। তখন তাঁর চিৎকার ও আহাজারিতে ঘটনাটি জানাজানি হয় এবং বিষয়টি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। হাসপাতালের সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, অপরিচিত ওই নারী জান্নাতুলের শিশুপুত্রকে নিয়ে হাসপাতালের সীমানা অতিক্রম করে ফেনী-নোয়াখালী মহাসড়কের দিকে চলে গেছেন।

বেগমগঞ্জ মডেল থানায় কর্তব্যরত সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মশিউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, উদ্ধার করা শিশুটি তাঁর মাসহ থানা-পুলিশের হেফাজতে রয়েছে। একইভাবে শিশু চুরির ঘটনায় জড়িত নারীও থানায় আছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা প্রক্রিয়াধীন। আটক নারী ও উদ্ধার হওয়া শিশুকে আদালতে পাঠানো হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ