যুক্তরাষ্ট্রের বেসরকারি কোম্পানি ইনটুইটিভ মেশিনস পরিচালিত একটি মহাকাশ যান চাঁদের দক্ষিণ মেরুর কাছে অবতরণ করেছে। কোম্পানিটি এ তথ্য নিশ্চিত করছে। তবে তারা আশঙ্কা করছে, যন্ত্রটি সোজা অবস্থায় নেই।

ইনটুইটিভ মেশিনসের প্রধান নির্বাহী এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, অ্যাথেনা মহাকাশ যানটির সঙ্গে পৃথিবীর যোগাযোগ অব্যাহত আছে, তবে এটি যথাযথ অবস্থায় নেই।

কোম্পানি আশা করছে, মহাকাশযানটিতে থাকা বৈজ্ঞানিক যন্ত্রপাতিগুলো এখনো স্থাপন করা সম্ভব। এসব যন্ত্রের মধ্যে আছে—চন্দ্রপৃষ্ঠে অবতরণের পর নিকটবর্তী গর্ত খোঁজার উদ্দেশ্যে তৈরি করা একটি হপিং রোবট এবং মোবাইল যোগাযোগ অ্যানটেনা। এ ধরনের অ্যানটেনা এটাই প্রথম পাঠানো হয়েছে।

অ্যাথেনা ইনটুইটিভ মেশিনসের তৈরি দ্বিতীয় কোনো মহাকাশযান যেটি অস্বাভাবিক অবস্থানে থেকে চাঁদে অবতরণ করেছে।

চন্দ্রপৃষ্ঠে পানি ও বরফের অস্তিত্ব অনুসন্ধানের জন্য কোম্পানিটি মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসার সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করছে। আর নাসা মানুষকে আবারও চাঁদে পাঠানোর লক্ষ্যে ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।

গ্রিনিচ মান সময় বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটের দিকে চাঁদে মনস মাউটন নামক উচ্চভূমির একটি এলাকায় অবতরণ করে অ্যাথেনা। এ এলাকাটির অবস্থান চাঁদের দক্ষিণ মেরু থেকে প্রায় ১০০ মাইল দূরত্বে।

ইনটুইটিভ মেশিনস কর্তৃপক্ষ বলেছে, আগামী দিনগুলোতে লুনার রিকনেসান্স অরবিটার ক্যামেরা অ্যাথেনার একটি ছবি তুলবে। এর মধ্য দিয়ে যানটি ঠিক কোন অবস্থায় আছে, তা নির্ণয় করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে।

অ্যাথেনার নকশা এমনভাবে করা হয়েছে, যেন এটি বৈজ্ঞানিক যন্ত্রের সাহায্যে পর্যবেক্ষণ এবং পরিমাপসংক্রান্ত কাজগুলো ১০ দিনের মধ্যে শেষ করতে পারে।

এসব যন্ত্রপাতির মধ্যে মাইক্রো নোভা হপার বা গ্রেস নামের একটি লাফানো রোবটও আছে। রোবটটির নকশা এমনভাবে করা হয়েছে, যেন এটি লাফিয়ে লাফিয়ে চন্দ্রপৃষ্ঠে স্থায়ী ছায়ার মধ্যে থাকা বড় গর্তে পৌঁছে যেতে পারে।

হপার রোবটটি ১০০ মিটার উচ্চতায় উড়তে এবং ১ দশমিক ২ মাইল (২ কিলোমিটার) পর্যন্ত ভ্রমণ করতে সক্ষম। এটি পাঁচবার লাফালে একটি গর্তের ভেতর যেতে পারবে এবং ক্যামেরা দিয়ে ভেতরের ছবি তুলতে পারবে। এ গর্তটিতে কখনোই সূর্যের আলো পৌঁছায় না। এ কারণে সেখানকার তাপমাত্রা অনেক কম এবং এটিকে বরফ খোঁজার জন্য আদর্শ জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

চাঁদে মহাকাশ যান পাঠায় এমন বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করছে নাসা। তারা মনে করে, নিজস্ব মিশন পরিচালনার চেয়ে এভাবে কাজ করাটা সাশ্রয়ী।

এর আগে গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে ইনটুইটিভ মেশিনসের তৈরি ওডিসিয়াস মহাকাশযানটি সফলভাবে চাঁদে অবতরণ করেছিল।

সাধারণত অবতরণের সময় মহাকাশযান উল্টে গেলে সব বৈজ্ঞানিক কাজ শেষ করা যায় না। এবারের মহাকাশ যানটির ক্ষেত্রে এমনটাই আশঙ্কা করা হচ্ছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: অবস থ

এছাড়াও পড়ুন:

আইসিসির গ্রেপ্তার এড়িয়ে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন নেতানিয়াহু

আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের (আইসিসি) গ্রেপ্তারি পরোয়ানার ঝুঁকি এড়াতে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে পৌঁছেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। স্থানীয় সময় রবিবার (৬ এপ্রিল) তিনি যুক্তরাষ্ট্রে পা রেখেছেন।

ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম হারেৎসের খবরে বলা হয়েছে, আইসিসির  গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পারে এমন দেশগুলোর আকাশপথ এড়িয়ে চলতে যুক্তরাষ্ট্র যাত্রায় স্বাভাবিক পথের চেয়ে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার বেশি পথ ঘুরেছেন তিনি।

আয়ার‌ল্যান্ড, আইসল্যান্ড ও নেদারল্যান্ডসের মতো দেশগুলো তাকে গ্রেপ্তার করতে তাকে বহনকারী উড়োজাহাজের জরুরি অবতরণ করাতে পারে বলে আশঙ্কা করছিলেন ইসরায়েলি কর্মকর্তারা।

গত বছরের নভেম্বরে গাজায় যুদ্ধাপরাধের দায়ে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে আইসিসি।

রবিবার ওয়াশিংটন ডিসিতে পৌঁছালে নেতানিয়াহু ও তার স্ত্রী সারা নেতানিয়াহুকে স্থানীয় কর্মকর্তারা স্বাগত জানান।

যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আই জানিয়েছে, নেতানিয়াহু রবিবার রাতেই ওয়াশিংটনে পৌঁছান। তবে এ যাত্রায় তাকে ৪০০ কিলোমিটার পথ ঘুরে যেতে হয়। যাতে তিনি এমন কোনো দেশের আকাশসীমায় না পড়েন, যেসব দেশ আইসিসির গ্রেপ্তারি পরোয়ানা কার্যকর করতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ উদ্বিগ্ন ছিল যে, যদি নেতানিয়াহুর বিমানটিকে জরুরি অবতরণ করতে হয়, তাহলে আয়ারল্যান্ড, আইসল্যান্ড, নেদারল্যান্ডসের মতো এমন কিছু ইউরোপীয় দেশ রয়েছে, যারা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার করতে পারে।

ঢাকা/এসবি

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আইসিসির গ্রেপ্তার এড়িয়ে যেভাবে যুক্তরাষ্ট্রে গেলেন নেতানিয়াহু